ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করবে না সৌদি আরব। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে যে, ফিলিস্তিন ইস্যুতে তাদের অবস্থান ‘দৃঢ় ও আপোষহীন’ থাকবে।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, "ফিলিস্তিনিদের তাদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদের যে কোনো প্রচেষ্টার বিরোধিতা করবে রিয়াদ। ফিলিস্তিনি জনগণের অধিকার এবং একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রশ্নে কোনো দরকষাকষির সুযোগ নেই।"
সৌদি আরবের এই প্রতিক্রিয়া এসেছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি প্রস্তাবের পর, যেখানে তিনি বলেছেন— গাজায় বসবাসরত ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসন করে যুক্তরাষ্ট্র ওই ভূখণ্ডের উন্নয়ন ঘটাবে।
ট্রাম্পের এই পরিকল্পনাকে সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে সৌদি আরব। তারা বলেছে, ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলের দখলদারিত্ব চলতে দেওয়া হবে না এবং ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে রিয়াদ কোনো সমঝোতায় যাবে না।
সৌদি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, "সৌদি আরব আন্তর্জাতিক ন্যায়বিচার ও শান্তির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ। ইসরাইল-ফিলিস্তিন সংকটের একমাত্র সমাধান হলো একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সীমান্তের ভিত্তিতে হবে।"
২০২৪ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান শুরা কাউন্সিলের নবম মেয়াদের প্রথম অধিবেশনে বক্তৃতাকালে ফিলিস্তিন ইস্যুতে রিয়াদের অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেন। একই বছরের ১১ নভেম্বর রিয়াদে অনুষ্ঠিত আরব-ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনে তিনি ১৯৬৭ সালের সীমান্তের ভিত্তিতে একটি স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা এবং ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরাইলি দখলদারিত্বের অবসানের ওপর জোর দেন।
বিন সালমান আরও বলেন, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রস্তাব অনুসারে ফিলিস্তিনকে পূর্ণ সদস্যপদ দেওয়ার বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়কে সোচ্চার হতে হবে।
২০২০ সালে সংযুক্ত আরব আমিরাত, বাহরাইন, সুদান ও মরক্কো মার্কিন-মধ্যস্থতায় স্বাক্ষরিত ‘আব্রাহাম চুক্তি’র মাধ্যমে ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করে। এরপর ২০২৩ সালের অক্টোবরে গাজায় ইসরাইলের হামলার আগ পর্যন্ত সৌদি আরবকে সম্পর্ক স্থাপনে রাজি করানোর জন্য ব্যাপক কূটনৈতিক তৎপরতা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরাইলের বিরুদ্ধে আরব দেশগুলোর অবস্থান আরও কঠোর হয়, যার ফলে এই প্রচেষ্টা স্থগিত হয়ে যায়।