অনলাইন সংস্করণ
২১:৫৩, ১৩ অক্টোবর, ২০২৫
আফ্রিকার দ্বীপরাষ্ট্র মাদাগাস্কারের প্রেসিডেন্ট আন্দ্রি রাজোয়েলিনা তীব্র বিক্ষোভের মুখে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন। ফরাসি রেডিও ‘আরএফআই’-এর এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, প্রেসিডেন্ট রাজোয়েলিনা ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে এক চুক্তিতে পৌঁছানোর পর ফরাসি সামরিক বিমানে করে তাকে দেশ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়।
গত দুই সপ্তাহ ধরে দেশটিতে সরকারের ব্যর্থতা, বিশেষ করে দীর্ঘদিনের পানি ও বিদ্যুৎ সংকট নিয়ে ক্ষোভ বাড়ছিল।
রাজধানী আন্তানানারিভোসহ বিভিন্ন শহরে হাজারো তরুণ রাস্তায় নেমে সরকার পতনের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। পরিস্থিতি ক্রমেই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে, যখন সেনাবাহিনীর প্রশাসনিক ও টেকনিক্যাল কর্মকর্তাদের নিয়ে গঠিত গুরুত্বপূর্ণ ইউনিট ‘ক্যাপসাট’ (CAPSAT) প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা করে বিক্ষোভকারীদের পাশে দাঁড়ায়। এতে কার্যত কোনঠাসা হয়ে পড়েন রাজোয়েলিনা।
শনিবার রাজধানীর স্বাধীনতা চত্বরে হাজারো বিক্ষোভকারী যখন সমবেত হন, তখন সেনাবাহিনীর ওই ইউনিটও তাদের সঙ্গে যোগ দেয়।
এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেনাবাহিনীর এই অবস্থান সরকারবিরোধী আন্দোলনে নতুন মোড় এনে দিয়েছে। এর আগে ক্যাপসাট ইউনিট ঘোষণা করেছিল, তারা গুলির নির্দেশ মানবে না এবং বিক্ষোভকারীদের ওপর অতিরিক্ত বলপ্রয়োগের অভিযোগে অভিযুক্ত জেন্ডারমারির কঠোর সমালোচনা করেছিল।
বিক্ষোভে সেনা সদস্যদের যোগদানের পর থেকেই প্রেসিডেন্টের অবস্থান দুর্বল হয়ে পড়ে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে রাজোয়েলিনা এক বিবৃতিতে আন্দোলনের পেছনে বিরোধী দলের ‘অবৈধ ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র’ রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন।
পাশাপাশি সেনা অভ্যুত্থানের আশঙ্কা উড়িয়ে দিয়ে সতর্ক করেন, দেশের স্থিতিশীলতা বিনষ্টের যেকোনো প্রয়াস কঠোর হাতে দমন করা হবে।
তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, সরকারবিরোধী এই তরুণ প্রজন্ম—যাদের ‘জেন-জি’ আন্দোলন বলা হচ্ছে—তারাই রাজোয়েলিনার পতনের মূল চালিকা শক্তি। তারা দুর্নীতি, বেকারত্ব, পানি-বিদ্যুৎ সংকট ও রাজনৈতিক অচলাবস্থার বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে রাজপথে নেমে আসে। শেষ পর্যন্ত ফরাসি হস্তক্ষেপে প্রেসিডেন্টকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয় বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো।
রাজধানী আন্তানানারিভোতে এখনও উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি বিরাজ করছে। স্বাধীনতা চত্বরে বিক্ষোভকারীরা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ও একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দাবিতে স্লোগান দিচ্ছেন।