ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ঢাকায় ড্রোনের মাধ্যমে খাবার ডেলিভারি দেবে ইজাকায়া

ঢাকায় ড্রোনের মাধ্যমে খাবার ডেলিভারি দেবে ইজাকায়া

ঢাকা শহর যেন জট পাকানো এক তারের জঙ্গল। তার ওপর ট্রাফিক জ্যামে আটকে থাকে সময়। উঁচু উঁচু ভবনের ছাদগুলোই শহরের একমাত্র শান্ত জায়গা। এমন শহরে খাবার ডেলিভারি মানে শুধু গতির খেলা নয়, বরং বেঁচে থাকার লড়াই। কিন্তু ড্রোনের মাধ্যমে ডেলিভারি দিয়ে জাপানি খাবারের রেস্টুরেন্ট ইজাকায়া এই দৃশ্যপট বদলে দিতে চায়। ডেক্কো ইএসএইচও গ্রুপের রেস্টুরেন্ট ইজাকায়া তাদের গুলশান-২ আউটলেট থেকে বাংলাদেশের প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে ড্রোনের মাধ্যমে খাবার ডেলিভারি করেছে। লক্ষ্য ছিল গুলশান-বনানী এলাকার ছাদ। ইজাকায়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এবং ডেক্কো ইএসএইচও গ্রুপের পরিচালক রায়ানা হোসেন বলেন, ‘এটা কোনো লোকও দেখানো কাজ নয়। চাহিদা থেকেই এই উদ্যোগ। আমরা সব সময়ই ভোক্তাদের কাছে খাবার ডেলিভারির নতুন উপায় খুঁজছি।’

রায়ানার অভিযোগ, ফুড ডেলিভারি অ্যাপগুলো রেস্টুরেন্ট থেকে অতিরিক্ত চার্জ নেয়। এ বিষয়টি এড়ানোর তাগিদ থেকে তারা ড্রোন ডেলিভারির দিকে ঝুঁকেছেন। তিনি তুলনা করে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বেশিরভাগ শহরে অ্যাপের চার্জ ১৫ শতাংশের বেশি হতে পারে না। কিন্তু বাংলাদেশে এর কোনো সীমা নেই। এতে ছোট ব্যবসাগুলোর জন্য টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়ছে।’ ইজাকায়া তাই বড় ডেলিভারি প্ল্যাটফর্ম এড়িয়ে নিজেদের প্রক্রিয়া গরে তুলছে। ড্রোন ট্রায়াল এই বড় লক্ষ্যেরই অংশ টেকসই বিকল্প তৈরি করা। তাদের এখন ঢাকার তিন জায়গায় আউটলেট রয়েছে- গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরা।

কীভাবে এটা কাজ করে : সবকিছু খুব সতর্কতার সঙ্গে পরিকল্পনা করা হয়েছিল। ড্রোনগুলোকে গুলশান-বনানী এলাকায় নির্দিষ্ট বৃত্তাকার এলাকাজুড়ে ওড়ানো হয়েছে। খাবারগুলোকে বিশেষ ধরনের বাক্সে ভরে ড্রোনের সঙ্গে বেঁধে পাঠানো হয়। তবে আকাশপথটাও এতটা মসৃণ ছিল না।

রায়ানা হোসেন বলেন, ‘ঢাকার কোথাও মাটিতে ড্রোন অবতরণ করানো প্রায় অসম্ভব কাজ। তারের জাল, ভিড় আর ট্রাফিক অনেক বড় বাধা। তাই ছাদই ছিল একমাত্র উপায়।’ তিনি জানান, গ্রাহকদের আগে থেকেই জানানো হয়েছিল। তারা ছাদে অপেক্ষা করছিলেন। বাক্স খুলে খাবার নেওয়ার পর ড্রোনটা আবার ফিরে আসত। ‘এটা সহজ ছিল না। তবে এটা আদৌ সম্ভব কি না, আমরা সেটাই দেখতে চেয়েছি’, যোগ করেন তিনি।

ফ্রি থাকবে না ড্রোন ডেলিভারি : রায়ানা জানান, ট্রায়াল ড্রোন ডেলিভারি ফ্রি ছিল। তবে ভবিষ্যতে এর দাম ঠিক করাটা এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। ‘আমরা এখনও ডেলিভারি ফি ঠিক করিনি। ব্যাটারি লাইফ, নেভিগেশন সিস্টেম, খাবারের ওজন- সব মিলিয়ে খরচ বুঝতে হবে। নিরাপত্তা ঝুঁকিও আছে। কেউ ড্রোন নষ্ট করতে পারে। বড় আকারে চালাতে হলে অনুমতি পাওয়াটাও জটিল হবে’, যোগ করেন তিনি। তবু রায়ানা আশাবাদী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত