
এ মাসে উত্তর গোলার্ধের আকাশে দেখা মিলতে পারে এক বিরল জ্যোতির্বিজ্ঞানিক দৃশ্যের, আর সেটি হচ্ছে একসঙ্গে দুই ধূমকেতু। পাশাপাশি কিছু গ্রহাণুও পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসবে বলে জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। সাধারণত বেশিরভাগ গ্রহাণু অবস্থান করে মঙ্গল ও বৃহস্পতির মাঝামাঝি একটি অঞ্চলে, যাকে বলা হয় ‘গ্রহাণু বলয়’। তবে মাঝে মধ্যে কিছু গ্রহাণু পৃথিবীর কক্ষপথের কাছাকাছিও চলে আসে। এদিকে, ‘সি-২০২৫ আর-২’ নামের ধূমকেতুটি ১৯ অক্টোবর পৃথিবীর সবচেয়ে কাছ দিয়ে যাবে। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবীর নিকটে আসার সময় এগুলো আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠতে পারে। তবে ‘সি-২০২৫ এ-৬’ নিয়ে তারা এখনও পুরোপুরি নিশ্চিত নন।
কিন্তু ধূমকেতু আর গ্রহাণুর পার্থক্যটা আসলে কোথায়?
ধূমকেতু মূলত বরফ, ধুলা ও গ্যাসের মিশ্রণে তৈরি খুবই অস্থিতিশীল বস্তু। সূর্যের আলো ও তাপে এর আকার ও উজ্জ্বলতা বদলে যায়, তাই এদের আচরণ আগাম বলা কঠিন। অন্যদিকে, গ্রহাণু পাথরের তৈরি শক্ত বস্তু, যেগুলো সূর্যের চারপাশে তুলনামূলক নির্দিষ্ট কক্ষপথে ঘুরে বেড়ায়। এ কারণেই গ্রহাণুর গতিপথ বিজ্ঞানীরা সহজেই নির্ধারণ করতে পারেন। ধূমকেতুকে মজার ছলে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বলেন ‘বরফের নোংরা বল’। কারণ সূর্যের কাছাকাছি এলে এর ভেতরের বরফ গলতে শুরু করে, আর তখন গ্যাস ও ধুলা বেরিয়ে এসে সূর্যের বিপরীত দিকে লম্বা লেজের মতো এক রেখা তৈরি করে। এটিই ধূমকেতুর সবচেয়ে চেনা বৈশিষ্ট্য। ধূমকেতু পৃথিবীর কাছে আসলে সাধারণত আরও উজ্জ্বল দেখা যায়। তবে কখনও কখনও উল্টো ঘটনাও ঘটে। সে সময় বরফের অংশ দ্রুত গলে মহাকাশে ছড়িয়ে পড়লে ধূমকেতুটি ম্লান হয়ে যেতে পারে। তাই পৃথিবীর কাছাকাছি এলেও সেটি দৃশ্যমান হবে কি না, তা নিশ্চিত নয়।