
খাগড়াছড়ির মানিকছড়ি উপজেলার তিনটহরী ইউনিয়নের প্রত্যন্ত কুমারী এলাকা উঁচু-নিচু পাহাড় আর সবুজ মাঠে ঘেরা এক মনোরম জনপদ। কিন্তু সৌন্দর্যের আড়ালে লুকিয়ে আছে দীর্ঘদিনের অবহেলার একচিত্র। কুমারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন এলাকা থেকে সাইল্যাচর বৌদ্ধ বিহার পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা এখন এলাকাবাসীর দুঃখ-দুর্দশার অন্যতম কারণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, কাঁচা সড়কের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে বড় বড় গর্ত ও খানাখন্দ সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে বর্ষার মৌসুমে এই রাস্তা দিয়ে হেঁটে চলাও হয়ে ওঠে চরম কষ্টকর। সড়কটি কোনো যানবাহন চলাচল তো দূরের কথা, হেঁটে চলতে পোহাতে হয় সীমাহীন ভোগান্তি।
সাইল্যাচর এলাকার বাসিন্দা মিন্টু মারমা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যুগের পর যুগ ধরে আমরা এই রাস্তা দিয়ে বর্ষায় পা পিছলে পরে গিয়ে স্কুল, বাজার, হাসপাতাল যাই। কখনও কোনো উন্নয়ন হয়নি। যেন আমরা মানুষের গোনায়ই নেই।’
কৃষিনির্ভর এই জনপদে উৎপাদিত কৃষিপণ্য ও ফলমূল বাজারজাত করতে গেলে পড়তে হয় একই রকম বিপাকে। শিক্ষার্থীদেরও নিয়মিত এই দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উষাপ্রু মারমা জানায়, ‘সাইল্যাচর পাড়া থেকে অর্ধশতাধিক শিশু আর ১২-১৫ জন মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থী প্রতিদিন এই রাস্তায় হেঁটে যাই। বর্ষায় আমাদের জুতা আর কাপড় সব কাদায় ভিজে নষ্ট হয়ে যায়। কখনও কখনও স্কুলই যেতে পারি না।’
স্থানীয় পাড়া কার্বারী উসামং মারমা বলেন, ‘বর্ষার ছয় মাস একটা শিশুও স্কুলে যেতে পারে না। রোগী হলে পালকি বা কাঁধে করে নিতে হয়। এটা যেন আমাদের নিয়তি হয়ে গেছে। এই সড়কটি সংস্কারে বারবার দাবি জানানো হলেও এখন কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে জানান, স্থানীয় ইউপি সদস্য কংচাইরী মারমা। তিনি বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদ ও এলজিইডি’র মাধ্যমে একাধিকবার প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, কিন্তু কোনো বরাদ্দ বা কাজ হয়নি।’
মানিকছড়ি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কাজী মাসুদুর রহমান জানান, সড়কটি আমরা এরইমধ্যে পরিদর্শন করেছি। বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই দ্রুত সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হবে