
দক্ষিণ রাউজানে পশ্চিম নোয়াপাড়া মদুনা জঙ্গল সড়কটি গত জুলাই মাসের শুরুর দিকে তীব্র বর্ষণে সৃষ্ট পাহাড়ি ঢল ও হালদা নদীর স্রোতে সাড়ে তিন কিলোমিটার দীর্ঘ এই পাকা সড়ক পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার মানুষ যাতায়াত করে। চলাচল করত ব্যক্তিগত গাড়ি, মাইক্রোবাস, অটোরিকশা সবই। এখন থমকে গেছে এ এলাকর যাতায়াতের চিরচেনা সড়কটির ব্যস্ততা। এ সড়কটি রাউজানের নোয়াপাড়া এবং উরকিরচর ইউনিয়নকে যুক্ত করেছে। নোয়াপাড়া, উড়কিরচর ও হাটহাজারীর মদুনাঘাটের মানুষজন এই সড়ক ব্যবহার করতেন। সড়কটি বিধ্বস্ত হওয়ার তিন মাস পার হলেও সড়কটি সংস্কার হয়নি। কালভার্টটিও পুনর্নির্মাণের কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, ভাঙা সড়ক দিয়ে কোনো রকমে হেঁটে চলাচল করেন গ্রামের শিক্ষার্থী ও শ্রমজীবী মানুষজন। তবে একমাত্র কালভার্ট ভাঙা থাকায় ওই পথে গাছ ফেলে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করতে হয়। স্থানীয় গাউসিয়া কমিটির সদস্যরা স্বেচ্ছাশ্রমে ভাঙা কালভার্টে বাঁশের সাঁকো বানিয়ে পারাপারের উপযোগী করায় কোনোরকম আপৎকালীন যাতায়ত করা যাচ্ছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, সড়ক দিয়ে শিক্ষার্থী, শ্রমজীবী মানুষসহ গ্রামবাসী যাতায়াত করছেন। অসমান খোয়া ছড়ানো সড়কে হেঁটে চলাচলও কষ্টকর। স্থানীয় বাসিন্দা মুহাম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা ভীষণ কষ্টে আছি। বাঁশের সাঁকো দিয়ে শিশু, নারী এবং বয়স্করা চলাচল করতে ভয় পান। রোগীদের হাসপাতালে নেওয়া যাচ্ছে না। একরকম অবরুদ্ধ হয়ে বসবাস করছি আমরা।
সড়কের এই দশা নিয়ে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী একাধিকবার বিক্ষোভও করেছেন। তারা বলেছেন, সরকার ১৫ বছরে সড়ক ও সেতুর উন্নয়নে তাদের এলাকায় কিছু করেনি। এদিকে গত ৩ অক্টোবর দুপুরে শত শত গ্রামের নারী পুরুষ ভাঙা সড়কে জড়ো হয়ে এই সড়ক সংস্কার ও ভাঙা কালভার্টে সেতু নির্মাণের দাবিতে সড়কে দাঁড়িয়েছে। তারা বলেছেন, সরকার ১৫ বছরে সড়ক- সেতু উন্নয়নে তাদের এলাকায় কিছু করেনি। তাই এখন তারা পাশের গ্রামের সংযুক্ত আরব আমিরাত প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের কাছে সড়ক সংস্কারের দাবি জানাতে রস্তায় এসেছেন। এরমধ্যে ওই প্রবাসী একই ইউনিয়নের ৯টি সড়ক নিজের প্রায় শতকোটি টাকার অর্থায়নে গড়ার কাজ করছেন। দেখা যায়, সড়কটির যে দেড় কিলোমিটার ভেঙে গেছে সেটি নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের মোকামী পাড়া ও পশ্চিম নোয়াপাড়া অংশে। নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মাসুদ পারভেজ বলেন, মদুনা জঙ্গল সড়কের পশ্চিম নোয়াপাড়া উপজেলার সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত এলাকা। এখানকার সড়কটি উরকিরচর ইউনিয়ন ও নোয়াপাড়া ইউনিয়নকে যুক্ত করেছে।