ঢাকা রোববার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের টিকিটের দাম বাড়ছে

পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের টিকিটের দাম বাড়ছে

সরাসরি টিকিটের দাম না বাড়িয়ে পন্টেজ চার্জ বা মাশুল আরোপের মাধ্যমে ঢাকা-চট্টগ্রামসহ ছয় রুটে ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে। প্রায় ৯ বছর পর এ ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এতে ট্রেন ও আসনভেদে সর্বনিম্ন ৫ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা বেড়েছে। এ ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে ২০ ডিসেম্বর থেকে। এদিকে ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, মূলত এ ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়েছে পুরোনো যেসব সেতু আছে (১০০ মিটারের বেশি), সেগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের জন্য। সব রুটে ভাড়া বৃদ্ধি করা হয়নি। কিছু রুটে বেড়েছে। যে ভাড়া বেড়েছে, তা খুব বেশিও নয়। জানা গেছে, রেলের আয় বাড়াতে চলতি বছরের মে মাসে এভাবে পন্টেজ চার্জ বা মাশুল আরোপের মাধ্যমে ভাড়া বৃদ্ধির উদ্যোগ নেয় রেলওয়ে পূর্বাঞ্চল। যাচাই-বাছাই ও আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়া শেষে ভাড়া বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে ডিসেম্বরে। সাধারণ ট্রেন ও বিরতিহীন আন্তনগর ট্রেনের জন্য আলাদা করে ভাড়া নির্ধারণ করেছে রেলওয়ে। লোকসান সামাল দিতে আয় বৃদ্ধি ও ব্যয় হ্রাস নিয়ে গত ২৫ মে রেলওয়ের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় প্রধান অতিথি রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. ফাহিমুল ইসলাম টিকিটের ভাড়া না বাড়িয়ে আয় বৃদ্ধির পরামর্শ দেন। তিনি রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের ১০০ মিটারের বেশি লম্বা সেতুতে পন্টেজ চার্জ সমন্বয়ের জন্য নির্দেশনা দেন। এর পর থেকে কাজ শুরু করে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের বাণিজ্যিক বিভাগ। রেলওয়ে সর্বশেষ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ট্রেনের ভাড়া বৃদ্ধি করেছিল। রেলওয়ে সূত্র জানায়, গত ২৫ নভেম্বর রেলের উপপরিচালক (মার্কেটিং) শাহ আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে নতুন ভাড়া ২০ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পূর্বাঞ্চলের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে এ চিঠি দেওয়া হয়। এরপর ৮ ডিসেম্বর সহকারী প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা জসিম উদ্দিন ভূঁইয়া এ চিঠি কার্যকর এ জনস্বার্থে প্রচারের জন্য অনুমোদন করেন। পূর্বাঞ্চলে সর্বনিম্ন ভাড়া বাড়ছে ৫ টাকা আর সর্বোচ্চ ২২৬ টাকা। রেলওয়ের তথ্য অনুযায়ী, ছয়টি রুটে ১১টি সেতুতে পন্টেজ চার্জ আরোপ করা হচ্ছে। এগুলো হলো : ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-কক্সবাজার, ঢাকা-সিলেট, চট্টগ্রাম-সিলেট, চট্টগ্রাম-জামালপুর ও ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ।

ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে আগে ৩৪৬ কিলোমিটার দূরত্ব ধরে ভাড়া দিতে হতো। এখন পন্টেজ চার্জ নির্ধারণের পর এ দূরত্ব হয়েছে ৩৮১ কিলোমিটার।

৩৫ কিলোমিটার দূরত্ব বৃদ্ধি পাওয়ায় এই রুটে মেইলের ভাড়া ১৩৫ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ১৫০ টাকা। ভাড়া বেড়েছে ১৫ টাকা। এ ছাড়া কমিউটার ও শোভন চেয়ারে ভাড়া ১৭০ ও ৪০৫ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১৯০ ও ৪৫০ টাকায়। শীততাপনিয়ন্ত্রিত স্নিগ্ধা টিকিটের ভাড়া ৭৭৭ থেকে বেড়ে হয়েছে ৮৫৭ টাকা। ভাড়া বেড়েছে ৮০ টাকা। এসি সিটের ভাড়া ৯৩২ থেকে বেড়ে হয়েছে ১ হাজার ৩০ টাকা। আবার এসি বার্থের (শুয়ে যাওয়ার আসন) ভাড়া এখন থেকে হবে ১ হাজার ৫৯১ টাকা। বর্তমানে এসব আসনের ভাড়া ১ হাজার ৪৪৮ টাকা। এ রুটে বিরতিহীন ট্রেনে (যেমন সুবর্ণ এক্সপ্রেস ও সোনার বাংলা এক্সপ্রেস) স্নিগ্ধা আসনের ভাড়া ৮৫৫ থেকে ৮৮ টাকা বেড়ে হয়েছে ৯৪৩ টাকা। প্রথম বার্থ ও এসি সিটের প্রতি আসনের ভাড়া এখন যথাক্রমে ১ হাজার ১৩৩ ও ১ হাজার ৭৪৬ টাকা। আগে ছিল যথাক্রমে ১ হাজার ২৫ ও ১ হাজার ৫৯০ টাকা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত