ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উপজেলায় নেই ফায়ার স্টেশন

স্থাপনের জোর দাবি
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় উপজেলায় নেই ফায়ার স্টেশন

বাংলাদেশের আয়তনে সবচেয়ে বড় উপজেলা রাঙামাটির বাঘাইছড়ি। ১,৯৩১ বর্গকিলোমিটারের এ বিশাল এলাকার জনসংখ্যা প্রায় দেড় লাখ। রয়েছে ৮টি ইউনিয়ন, ১৭টি মৌজা, ১টি উপজেলা, ১টি পৌরসভা ও ২টি থানা। পাশাপাশি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র সাজেক ভ্যালিও এই উপজেলার অন্তর্গত। এত গুরুত্ববহ ও জনবহুল এলাকায় এখনও একটি ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশনও স্থাপন করা হয়নি।

গত ২৫ মে বাঘাইছড়ি বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এরআগে পর্যটন স্পট সাজেকসহ একাধিকবার বাজার ও আশপাশের এলাকায় অগ্নিকাণ্ড ঘটলেও ফায়ার স্টেশন না থাকায় ক্ষতি কমানো সম্ভব হয়নি। বাঘাইছড়ি বাজারের অধিকাংশ ঘরবাড়ি ও দোকানপাট বাঁশ, কাঠ ও টিন দিয়ে নির্মিত হওয়ায় আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে এবং মুহূর্তের মধ্যে ভয়াবহ রূপ নেয়।

বর্তমানে দুর্ঘটনা ঘটলে স্থানীয়রা নির্ভর করেন- প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ফায়ার স্টেশনের ওপর। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় রাস্তাঘাট জটিল হওয়ায় ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে দীর্ঘ সময় লাগে, ততক্ষণে ক্ষয়ক্ষতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

বাঘাইছড়ি উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপনের দাবি দীর্ঘদিনের। স্থানীয় মানুষ বিভিন্ন সময় মানববন্ধন, স্মারকলিপির কর্মসূচি পালন করলেও এখনও কার্যকর কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। গতকাল রোববার রাঙামাটির একটি বাঘাইছড়ি উপজেলাবাসীর পক্ষ থেকে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। এতে সাংবাদিকদের হাতে একটি লিখিত আবেদনপত্র তুলে দেওয়া হয়। সেখানে বলা হয়, উপজেলায় দ্রুত সময়ের মধ্যে একটি পূর্ণাঙ্গ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স স্টেশন স্থাপন করতে হবে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকার জন্য বিশেষায়িত জরুরি যানবাহন সরবরাহ করতে হবে। পর্যাপ্ত আধুনিক অগ্নিনির্বাপণ সরঞ্জাম ও জনবল নিয়োগ নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় জনগণকে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও অগ্নি-নিরাপত্তা বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আবেদনপত্রে স্বাক্ষর করেন, রাঙামাটি পার্বত্য জেলার জর্জ কোর্টের অ্যাডভোকেট মো. রহমত উল্লাহ। এসময় বাঘাইছড়ির বাসিন্দা রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমান, মো. আল আমিন, আলমগীর হোসেন, মো. রফিকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা জানান, বাঘাইছড়ির মতো দুর্গম এলাকায় ফায়ার স্টেশন না থাকা শুধু নিরাপত্তা সংকটই নয়, বরং মানুষের জীবন ও অর্থনীতির জন্য বড় হুমকি। তাদের মতে, একটি ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন করা হলে দুর্ঘটনার সময় ক্ষয়ক্ষতি কমবে, নিরাপত্তা বাড়বে এবং পর্যটনকেন্দ্র সাজেকের ভাবমূর্তিও অক্ষুণ্ণ থাকবে। উপজেলায় ফায়ার সার্ভিস স্টেশন স্থাপন শুধু বাঘাইছড়ি নয়, পার্শ্ববর্তী দুর্গম এলাকার মানুষের জীবন ও সম্পদ রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্থানীয়রা আশা করছেন, সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তর অবিলম্বে এ বিষয়ে কার্যকর উদ্যোগ নেবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত