ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সোনালি আঁশের ফলন ও দামে বেজায় খুশি চাষিরা

সোনালি আঁশের ফলন ও দামে বেজায় খুশি চাষিরা

তীব্র খরার কারণে চাষাবাদের মৌসুমে পাটের বীজ বপন করতে বিলম্ব হলেও পাটচাষ থেমে থাকেনি। দিনদিন পাট চাষে আগ্রহ বাড়ছে চাষিদের। কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জমিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি সোনালী আঁশ পাটের আবাদ হয়েছে। দেশে সার, বীজ ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ কম থাকায় সোনালি আঁশের ফলন অধিক হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশের হাটবাজারে পাটের দাম অধিক ও কম খরচে পাটের অধিক ফলন হওয়ায় সোনালি আঁশের সুদিন ফিরে আসবে বলে মনে করেন স্থানীয় পাট চাষিরা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় বিভিন্ন গ্রাম ও চরাঞ্চলের সমতল ও অসমতল জমিতে এবছর পাটের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২ হাজার ৩৯৭ হেক্টর জমিতে। তবে এ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে পাটচাষের আবাদ হয়েছে। তন্মধ্যে দেশীয় পাট ২ হাজার হেক্টর ও তোষা জাত ৩০০ হেক্টর ও অন্যান্য জাতের ৯৭ হেক্টর পাট রয়েছে।

কালার ও মসৃণতা বুঝে ভালো পাট প্রতি মণ এসব হাটে ৩৬০০ থেকে ৩৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, এসব হাটে এসব হাটে নিম্নমানের পাট ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে পাটের দাম নিয়ে অখুশি নয়।

গত বছর যেখানে মান ভেদে পাটের দাম প্রতি মণ ছিল ২৭০০-২৯০০ টাকা, এবার তা বেড়ে ৩০০০-৩৯০০ টাকায় উঠেছে। ফলে মণপ্রতি ১৩০০ টাকা ১৪০০ পর্যন্ত লাভ পাচ্ছে।

কৃষকরা বলছেন, উৎপাদন খরচও বেড়েছে। শুধু শ্রমিক মজুরি বৃদ্ধির কারণেই মণপ্রতি খরচ বেড়েছে ২০০-২৫০ টাকা। আগে যেখানে প্রতি মণ পাট উৎপাদনে খরচ হতো প্রায় ২৩০০ টাকা, এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৫০০-২৭০০ টাকায়। হোসেনপুর বাজার ব্যবসায়ী খোকন মেম্বার জানান, ‘গত সপ্তাহে মণপ্রতি দাম ছিল ৩৯০০ টাকা, এবার তা কিছুটা কমে ৩৭০০-৩৮০০ টাকায় এসেছে। তবে এখনও কৃষকরা ভালো দামে পাট বিক্রি করতে পারছেন।’ তবে অনেক কৃষকের মধ্যে আশঙ্কা আছে, সরবরাহ বাড়লে দাম পড়ে যেতে পারে।

উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের গ্রামের পাট চাষি সাইফুল ইসলাম, সিদলা ইউনিয়নের সাহেবের চর গ্রামের পাট চাষি মফিজ উদ্দিন, চর বিশ্বনাথপুর গ্রামের হেলাল উদ্দিনসহ অনেকেই জানান, অন্যান্য কৃষি ফসলের তুলনায় পাটের আবাদে খরচ কম হয়, পাটের বাজার দাম ও বেশি। পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে। পাটের এমন বাজার দাম বজায় থাকলে ভবিষ্যতে ব্যাপক হারে পাট হবে বলে জানান তারা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এসএম সাহজাহান কবির বলেন, প্রকৃতির বৈরী আবহাওয়ার কারণে উপজেলায় আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি পাটের আবাদ হয়েছে। তবে পাটের দাম সন্তোষজনক অবস্থা বিরাজ করায় উপজেলায় পাটের সুদিন ফিরে আসবে বলেও জানান তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত