ঢাকা রোববার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচলের দাবি

গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চলাচলের দাবি

গোপালগঞ্জ থেকে রাজধানী ঢাকায় সরাসরি ট্রেন চলাচলের দাবি উঠেছে সাধারণ যাত্রী, শিক্ষার্থী ও স্থানীয়দের মধ্যে। তারা বলছেন ট্রেন যাতায়াতে যেমন ঝুঁকি কম থাকে, তেমনি অর্থও সাশ্রয় হয়। জেলার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও প্রশাসনিক গুরুত্বের বিবেচনায় সরাসরি ট্রেন চলাচলের জন্য এরইমধ্যে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষকে চিঠিও দিয়েছে প্রশাসন। পদ্মায় রেলসেতু চালু হওয়ার পর দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রতিদিনই রাজধানীমুখী ট্রেন চলাচল করছে কাশিয়ানী জংশন হয়ে। কিন্তু জেলা সদরের গোবরা স্টেশন থেকে কোনো ট্রেন ঢাকায় সরাসরি চলাচল করে না। এতে রেলসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে গোপালগঞ্জ সদর, কোটালীপাড়া, টুঙ্গিপাড়া, আশপাশের ফিরোজপুরের নাজিরপুর, বাগেরহাটের চিতলমারী, মোল্লাহাট ও নড়াইলের কালিয়া উপজেলার সাধারণ মানুষ। কোটালীপাড়ার গোবিন্দ বাড়ৈ বলেন, সদর থেকে ট্রেন লাইন থাকার পরেও আমরা সরাসরি ঢাকায় যেতে পারছি না শুধুমাত্র সরাসরি ট্রেন চালু না হওয়ার কারণে। এ জেলার সবাই রাজনীতি করে না। অধিকাংশ মানুষই গরিব। তাদের কথা চিন্তা করে দ্রুত সময়ে সরাসরি ট্রেন চালু করলে রোগী নিয়ে নিরাপদে ঢাকায় যাওয়া-আসা করা যাবে। গোপিনাথপুরের সেলিম মোল্লা বলেন, গোবরা থেকে রেলপথ হয়েছে অনেক আগে। কিন্তু ট্রেনে যাতায়াতের সৌভাগ্য হলো না। কারণ একটি মাত্র ট্রেন চলে রাজশাহী রুটে। তাই প্রতিদিন নানা কাজে জেলা শহরের আসতে হলে বাসে বা অন্য উপায়ে আসতে হয়। অথচ একটি ট্রেন যদি প্রতিদিন সকালে মুকসদুপুর থেকে কাশিয়ানী জংশন হয়ে জেলা সদর আসতো তাহলে আমাদের খরচও কম হতো, ঝুঁকিও কম লাগতো। তাই লোকালভাবে আরও ট্রেন বাড়ানো দরকার বলে মনে করেন তিনি।

গোপালগঞ্জ সদরের উজ্জ্বল কুমার বিশ্বাস বলেন, দীর্ঘদিন ধরে মানুষের যে প্রত্যাশা ছিলো ঢাকায় সরাসরি ট্রেনে যাওয়ার সেটি পূরণ হলে আর্থিকভাবেও লাভবান হবে সরকার। বিভিন্ন জেলা থেকে কাশিয়ানী জংশন হয়ে ঢাকায় ট্রেন চলাচল করে তাতেই যে পরিমাণ রাজস্ব আসতেছে। আর যদি গোপালগঞ্জের গোবরা থেকে ট্রেন চলতো তাতে অনেক বেশি টাকা রাজস্ব আসতো সরকারের। বর্তমানে গোপালগঞ্জ থেকে রাজশাহী রুটে একটিমাত্র ট্রেন চলাচল করছে। তবে যাত্রীদের দাবি ঢাকা পর্যন্ত সরাসরি ট্রেন চালু হলে শিক্ষার্থী, রোগী ও কর্মজীবী মানুষের জন্য এটি হবে ঝুঁকি, সময় ও অর্থ সাশ্রয়ের কার্যকর সমাধান। এতে সরকারের রাজস্বও বাড়বে বলে মনে করেন তারা। সম্প্রতি সরাসরি ট্রেন চালুর দাবি নিয়ে গোপালগঞ্জ রেল স্টেশনে মানববন্ধনও করেন স্থানীয়রা।

গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান বলেন, গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় সরাসরি যাত্রীবাহী ট্রেন চালুর বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনার জন্য রেলপথ মন্ত্রণালয়কে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। দু’টি ট্রেন যদি সরাসরি গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা চলাচল করে সেক্ষেত্রে গোপালগঞ্জ, বাগেরহাট, পিরোজপুর ও নড়াইল জেলার মানুষ উপকৃত হবে। এছাড়া বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান রয়েছে এ জেলায়। তারা ঝুঁকিহীন এবং কম খরচে ঢাকায় যাতায়াত করতে পারবে। অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ গোপালগঞ্জের জনগণ তাদের প্রত্যাশার কথা জানান। দ্রুত সময়ে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকা সরাসরি ট্রেন চালুর উদ্যোগ বাস্তবায়িত হবে। যা বদলে দেবে পুরো দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত