ঢাকা শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২১ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

সংঘাতে নয়, সমঝোতায় শান্তি বিভেদ নয়, ঐক্যই হোক গর্বের ভিত্তি

মালিহা মেহনাজ
সংঘাতে নয়, সমঝোতায় শান্তি বিভেদ নয়, ঐক্যই হোক গর্বের ভিত্তি

বর্তমান বিশ্বে সংঘাত ও বিভেদের প্রকোপ প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। জাতি, ধর্ম, ভাষা, রাজনৈতিক মতাদর্শসহ নানা কারণে মানুষ একে অপরের বিরুদ্ধে অবস্থান নিচ্ছে। এর ফলে শুধু ব্যক্তিগত সম্পর্কের অবনতি না বরং সামাজিক স্থিতিশীলতাও বিনষ্ট হচ্ছে। অথচ ইতিহাস বলে, যেখানে সংঘাতের পরিবর্তে সমঝোতার পথ বেছে নেয়া হয়েছে, সেখানেই শান্তি ও উন্নয়নের ভিত্তি গড়ে উঠেছে। সমাজের উন্নয়নের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো ঐক্য। পারস্পরিক শ্রদ্ধা, সহনশীলতা ও বোঝাপড়ার মাধ্যমেই একটি সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব। বিভিন্ন জাতি ও ধর্মের মানুষ যখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করে, তখন তারা সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যায়। কিন্তু যখন তারা বিভেদের শিকার হয়, তখন সামাজিক স্থিতিশীলতা এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হয়। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবাই একই লক্ষ্য নিয়ে লড়াই করেছিল, যার ফলস্বরূপ আমরা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র পেয়েছি। অথচ আজ রাজনৈতিক মতাদর্শের পার্থক্য, ধর্মীয় গোড়ামি ও সামাজিক বিভেদ আমাদের একতাকে বিনষ্ট করছে। যদি আমরা এ বিভেদকে প্রশ্রয় দেই তবে জাতি হিসেবে আমাদের উন্নতি বাধাগ্রস্ত হবে। সমঝোতা কেবল ব্যক্তিগত জীবনের জন্য নয় বরং জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিসরেও গুরুত্বপূর্ণ। বিশ্বজুড়ে অনেক সংঘাত ও যুদ্ধের সমাধান এসেছে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে। দক্ষিণ আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা দীর্ঘকাল বর্ণবাদী শাসনের বিরুদ্ধে লড়াই করলেও প্রতিহিংসার পথ বেছে না নিয়ে শান্তিপূর্ণ সমঝোতার মাধ্যমে দেশকে ঐক্যের পথে এগিয়ে নিয়েছিলেন। আমাদের উচিত মতপার্থক্য ভুলে পারস্পরিক বোঝাপড়ার সংস্কৃতি গড়ে তোলা। গণমাধ্যমেরও দায়িত্ব রয়েছে সমাজে ঐক্যের বাণী প্রচার করা। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায়ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের গুরুত্ব তুলে ধরতে হবে, যাতে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম সংঘাত নয় বরং সমঝোতার পথকে অগ্রাধিকার দেয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত