ইসলাম আল্লাহ প্রদত্ত সার্বজনীন চিরন্তন পরিপূর্ণ জীবন বিধান। কালিমা, নামাজ, জাকাত, সিয়াম ও হজ হলো ইসলামের বুনিয়াদী স্তম্ভ। হজ ইসলামের ৫ম স্তম্ভ। হজের আভিধানিক অর্থ- নিয়্যত করা, দর্শন করা, সংকল্প করা, সন্ধান করা, সাক্ষাৎ করা, প্রতিজ্ঞা করাসহ কোনো মহৎ কাজের ইচ্ছা করা। ইসলামী শরিয়তের পরিভাষায়- আল্লাহর সান্নিধ্য লাভের আশায় নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট স্থানে নির্দিষ্ট কার্যাবলী সম্পাদনকে হজ বলে। হজ মূলত আপন রবের সামনে আবদিয়াত (দাসত্ব) ও আনুগত্য প্রকাশের এক বিশেষ আয়োজন, সৃষ্টার সঙ্গে বান্দার ভালোবাসার পরীক্ষার চূড়ান্ত রূপ। হজ অনুষ্ঠানে কোরবানি ওয়াজিব। আর আল্লাহর নৈকট্য লাভের উদ্দেশ্যে আত্মোৎসর্গ করাই হলো কোরবানি।
বস্তুত : আল্লাহতায়ালা মানুষকে দু’টি বিপরীত ধর্মী বৈশিষ্ট্য দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। ক. রাব্বানিয়াত ও খ. নফসানিয়াত। যাকে ইংরেজিতে Rationality I Animality বলা হয়ে থাকে। এর সমর্থন পাওয়া যায় পবিত্র কোরআন মজিদের সূরা-আশ-শামছের ০৮ নং আয়াতে। এরশাদ হচ্ছে- ‘ফা আলহামাহা ফুজুরাহা ওয়া তাক্কওয়াহা’ ভাবার্থে- তার মস্তিষ্কে ও প্রকৃতিতে ভালো-মন্দ, নেকী-বদীর অনুভূতি প্রদান করেছেন, যাতে সে নেকীর পথ অবলম্বন করে আর বদীর পথ হতে দূরে থাকে। এ দু’টিই মানুষের স্বভাবজাত বৈশিষ্ট্য। পশু জবাই করার মাধ্যমে কোরবানির অর্থ হলো- মানব স্বভাবের পশুত্বকে, স্বার্থ সর্বস্বতাকে তথা নফসানিয়াতকে আল্লাহর সন্তুষ্টির সামনে বিসর্জন দিয়ে ইব্রাহীমি চেতনায় নিজেকে উদ্ধুদ্ধ করা। মানব স্বভাবের এই পশুত্বকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পশু কোরবানির যে উদ্দেশ্য, তা অনেক সময় ব্যর্থ হয়ে যায়- নিয়্যতের বিশুদ্ধতা ও খুলুসিয়্যতের অভাবে। ফলে পশু কোরবানির মাধ্যমে আমরা আল্লাহর নৈকট্য লাভের পরিবর্তে নিছক আনুষ্ঠানিকতা সর্বস্ব প্রতিযোগিতায় মেতে উঠি। কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘শহীদি-ঈদ’ কবিতায় যথার্থই বলেছেন- মনের পশুরে কর জবাই, পশুরাও বাঁচে, বাঁচে সবাই। কশাই-এর আবার কোরবানি!
হজের অধিকাংশ কার্যক্রম- হযরত ইবরাহিম (আ.), হযরত ইসমাঈল (আ.) ও বিবি হাজেরা (আ.)-এর ঘটনাবহুল জীবনের স্মৃতিচারণ- ইশক, মুহাব্বত, আবদিয়্যাত ও রুহানিয়্যাতের প্রতিফলন। কাবার চারিদিকে তাওয়াফ করা, মাকামে ইব্রাহিমে সালাত আদায় করা, সাফা-মারওয়া পাহাড়ে দৌড়াদৌড়ি করা, মিনায় শয়তানকে পাথর মারা ইত্যাদি আমল হযরত ইবরাহিম (আ.), বিবি হাজেরা এবং ইসমাঈল (আ.)-এর আদর্শ ও মূল্যবোধের প্রতীকি অনুশীলন। হযরত ইবরাহিম (আ.) আনুগত্য ও তৌহীদের যে শানিত চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজ সন্তানের গলায় ছুরি চালাতে উদ্যত হয়েছিলেন সেই আদর্শ ও মূল্যবোধ ও চেতনা জীবনে প্রতিষ্ঠিত করার বাসনা ও দৃঢ় সংকল্প না নিয়ে নিছক প্রথা বা লোকাচারের দায়ে গোশত খাওয়ার নিয়্যতে যদি একটি নিরীহ বোবা পশুর গলায় ছুরি চালনা করা হয়, তবে তা হবে একটি- নির্মম পাষ- হত্যাকাণ্ড। আল্লাহ কারও রক্ত চান না, মাংস চান না। নিজ সন্তানের রক্ত তো চানই না।
আল্লাহ চান মানুষ তার জানমাল, ধন-সম্পদ, প্রিয়বস্তুকে আল্লাহর সন্তুষ্টির পথে উৎসর্গের মাধ্যমে তাক্কওয়ার গুণাবলি অর্জন করুক। কারও মনে যদি এ ধারণার সঞ্চার হয় যে, যেহেতু ইবরাহিম (আ.)-এর সামনে শয়তান স্বরূপে উপস্থিত হয়েছিল, তাই তিনি তাকে (শয়তানকে) লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করেছিলেন। কিন্তু আমাদের সামনে যেহেতু শয়তানের স্বরূপ উপস্থিত নেই, তাই তার কঙ্কর নিক্ষেপের কোনো যৌক্তিকতা নেই। তাহলে বুঝতে হবে যে, এটাও এক শয়তানি প্ররোচনা। আত্মরক্ষার উদ্দেশ্যই যুক্তির ছলে শয়তানের এ কুমন্ত্রণা। প্রকৃত অর্থে বাহ্যত ‘জামরা-আকাবা’ লক্ষ্য করে যে কঙ্কর নিক্ষেপ করা হয়, আল্লাহর নির্দেশে তা শয়তানের মুখে গিয়েই নিক্ষিপ্ত হয় এবং তার সকল উৎসাহ-উদ্যম ম্লান করে দেয়।
কেননা, শয়তানকে অপদস্ত করার সর্বোত্তম পন্থাই হলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে ওই নির্দেশগুলো পালন করা, যার ভিত্তি হলো আনুগত্য ও আবদিয়্যাত; আকল বা যুক্তি নয়। রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘শয়তান আর কখনও এত ক্রুদ্ধ হয় না এবং নিজেকে এত অপমানিত বোধ করে না, যেমনটি করে আরাফাতের দিনে’।
হযরত ইবরাহিম (আ.)-এর তাওহীদবাদী জীবন হলো মানবেতিহাসের এমন এক স্বর্ণোজ্জল অধ্যায়, যেখানে এসে এক নতুন বাঁকে মোড় নিয়েছে মানুষের ইতিহাস ও সভ্যতা। দুই প্রান্তিক শিবিরে মানবতা হয়েছে দ্বিধাবিভক্ত। অর্থাৎ বস্তুবাদী পৌত্তলিক যুগের ঘটেছে পরাসমাপ্তি আর একত্ববাদী আলোকময় নতুন যুগের হয়েছে শুভ উদ্বোধন। বস্তুত ইবরাহিম (আ.)-এর গোটা জীবন ছিল সমাজের পৌত্তলিক ধ্যান-ধারণা, কায়েমী স্বার্থবাদ ও যাবতীয় শয়তানীচক্রের ‘বিরুদ্ধে খোলা বিদ্রোহ। তাই সমসাময়িক পৌত্তলিক সরকার প্রধান সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছিল তাওহীদের এই বিদ্রোহী কণ্ঠকে চিরতরে স্তব্ধ করে দিতে। কিন্তু তাওহীদের সারাবান তহুরায় মাতোয়ারা খলীলুল্লাহ ছিলেন আপসহীন নির্বিকার। ঈমানের অগ্নিপরীক্ষায় নিপতিত হয়েও তিনি আঁতাত করেননি শয়তানী কুচক্রের সঙ্গে। হযরত ইবরাহিম (আ.) যেখানে শয়তানকে লক্ষ্য করে পাথর নিক্ষেপ করেছিলেন, হাজীগণ আজও সেখানে ইব্রাহীম (আ.)-এর আদর্শকে অনুকরণ করে পাথর নিক্ষেপ করে থাকেন।
আল্লাহর এ নির্দেশের অন্তর্নিহিত উদ্দেশ্য হলো- হাজীদের অন্তরে সকল শয়তানী কুচক্রের প্রতি সুতীব্র ঘৃণা উসকে দেয়া। পাথর নিক্ষেপ করে হাজীগণ এ জীবন্ত অনুভূতি লাভ করেন যে, ঈমান ও তাওহীদের মহাযাত্রা পথে তাদের জীবন হচ্ছে দুনিয়ার সকল অপশক্তি, জুলুমণ্ডনির্যাতন ও শয়তানীচক্রের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রাম-সংঘাতের জীবন। নিক্ষিপ্ত পাথর কণার প্রতিটি আঘাত শয়তানের সকল দস্ত ও অহংকার, আশা ও স্বপ্ন যেন ভেঙে চুরমার করে দেয়। নিজেকে সে তখন মনে করে দারুণ অপমানিত ও ব্যর্থ। মোটকথা সমকালীন যুগ ও সমাজের ভোগবাদী মানসিকতা এবং বস্তুবাদী ধ্যান-ধারণার বিরুদ্ধে গোটা জীবন ছিল একটি বলিষ্ঠ চ্যালেঞ্জ এবং আল্লাহর অপরিসীম শক্তি ও কুদরতের অনুপম প্রকাশ।
হজের মাধ্যমে মুসলমানেরা বীরত্ব প্রকাশ ও ঐক্যের মহড়া প্রদর্শন করে থাকে। আল্লাহর নবী (সা.) বীরত্ব প্রকাশের জন্য সাহাবায়ে কেরামকে যেভাবে তাওয়াফের সময় ‘রমল’ বা দৌড়িয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন, আজকের মুসলিম উম্মাহ ‘রমল’ করে সকল মুসলিমবিদ্বেষী নাস্তিক্যবাদী অপশক্তির মোকাবিলায় সীসা ঢালা প্রাচীরের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুত হবে। মুসলিম উম্মাহ যদি শুধুমাত্র আল্লাহর হুকুম তামিলার্থে বায়তুল্লাহ ও রাসুল (সা.)-এর রওজা শরীফ জিয়ারত করে, মাকামে ইব্রাহিমে সালাত আদায় করে ফিরে যান, কাবা শরীফের গেলাফ ধরে হাজরে আসওয়াদে চুমু দিয়ে আত্মতৃপ্তি লাভ করেন, অন্তরে সৃষ্টি হয় না ইব্রাহীমি আপসহীন তৌহিদী চেতনা, তখন আজীবনের স্বপ্ন লালিত এই হজ সফরও হয়ে যাবে বনভোজন কিংবা নিছক আনন্দ ভ্রমণের মতোই কোনো সাধারণ সফরের মতো, যা লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পবিত্রতায় মহীয়ান নয়, নয় কল্যাণ ও প্রাচুর্যে গরীয়ান। ফলে হাজী সাহেবরা যেমন শূন্যহাতে, শূন্যহৃদয়ে এসেছিলেন, তেমনি শূন্যহাতে ও শূন্যহৃদয়েই ফিরে যাবেন স্বদেশভূমিতে। গোটা হজ পরিবেশকে মনে হবে ধূসর নিষ্প্রভ। আজ এ কথা স্পষ্ট যে, আন্তর্জাতিক কুচক্র এবং বৃহৎ ইয়াহুদীবাদী শক্তিবর্গের কূটনৈতিক শঠতার ফলে ইসলামী উম্মাহ আজ বিভিন্ন উগ্রজাতীয়তাবাদের অভিশাপের শিকারে পরিণত হয়েছে। ইসলামের শত্রুরা জানে, মুসলিম উম্মাহ যদি ইবরাহিম (আ.)-এর বৈপ্লবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মক্কা-মদীনার সোনালি ইতিহাসের স্মৃতি বক্ষে ধারণ করে নিজ নিজ দেশে ফিরে যায় এবং সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে ময়দানে অবতীর্ণ হয়, তাহলে দুনিয়ার কোনো বাতিল শক্তি তাদের সামনে টিকে থাকতে পারবে না। তাই তারা মুসলিম উম্মাহর মাঝে ঐক্যের ফাটল ধরাতে নানামুখী ষড়যন্ত্রের ফাদ পেতেছে- কখনও সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ কখনও বা মৌলবাদের তকমা লাগিয়ে। বলতে দ্বিধা নেই, মুসলিম জাতি আজ নিজেদের গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস, ঐতিহ্য, সোনালি অধ্যায় ভুলে গিয়ে নানান (দল মত, ফেরকা ও মতাদর্শিক) দ্বন্ধে পরস্পর দ্বিধাবিভক্ত।
আজ তারা জ্ঞান-বিজ্ঞান হারা মেরুদণ্ডহীন মেধাশূন্য এক দুর্বল জাতি। আন্তর্জাতিক বাজারে তারা এখন ধীরে ধীরে ইতিহাসের ব্যাকফুটে হারিয়ে যেতে বসেছে। আর এই দুর্বলতার সুযোগে তাদের উপর নেমে এসেছে নানাবিধ ফেতনা, আগ্রাসন ও নিধন অভিযান। আজ যদি হজ অনুষ্ঠানে আল্লাহর দরবারে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ (আমি হাজির আমি হাজির) এই স্লোগানের সঙ্গে সঙ্গে সকল ফ্যাসিবাদী, জায়নিস্টদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার কোন কমিটমেন্ট না থাকে তাহলে হেজিমনিক (আদিপত্যবাদী) গোষ্ঠীর আগ্রাসন মুসলিম বিশ্বের প্রতিটি ভূখণ্ডে ছড়িয়ে পড়বে সন্দেহ নেই। আজ পৃথিবীর সমগ্র জনসংখ্যার এক-চতুর্থাংশ মুসলমান এবং দুনিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদের বিপুল অংশ মুসলিম বিশ্বে অবস্থিত হওয়া সত্ত্বেও অধিকাংশ মুসলিম (আরব) দেশগুলো নিজেদের তখত, মসনদ, সিংহাসনের নিরাপত্তার জন্য মিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ বিনোয়োগ করছে পশ্চিমা প্রভুদের দেশে। ভোগের লিষ্পায় মোহাচ্ছন্ন হয়ে তারা গোলামী করছে মুসলিমদের চির শত্রু সাম্রাজ্যবাদী ইহুদীবাদের। অথচ রক্তে রঞ্জিত পূণ্যভূমি ফিলিস্তিনের মজলুম ক্ষুর্ধাত মানুষের চিৎকার ধ্বনি তাদের কর্ণকুহরে প্রবেশ করে না। হাজার পাউন্ডের বোমার বিস্ফোরণে নারী ও শিশুদের ছিন্নভিন্ন লাশ আকাশে উড়তে দেখেও তাদের পাষাণ হৃদয় গলে না। কি নির্মম পৈশ্যচিকতা! মানুষের বিবেক আর মনুষ্যত্ব কতটা মরে গেলে এমনটা হতে পারে! ইসরাঈল টেলিভিশনের প্রতিদিনের আলোচনা শুনে যে কারও মনে হবে জায়নিষ্টরা সবাই গণহত্যা ম্যানিয়ায় (জেনোসাইড ম্যানিয়ায়) আক্রান্ত। প্রকৃতি কি বীভৎস, ভয়ংকর, প্রায়শ্চিত নিয়ে ধেয়ে আসছে মানুষরূপী এই হায়নাদের বিরুদ্ধে আল্লাহই ভালো জানেন! (যেন আজকেরই বিশ্ব প্রেক্ষাপটে) মুসলিম জাতিকে ধাক্কা দিয়ে আল্লাহ ঘোষণা করছেন : ‘আর তোমাদের কি হলো যে তোমরা আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করছ না? অথচ দুর্বল নারী-পুরুষ শিশু যারা বলছে- ‘হে আমাদের রব, আমাদের উদ্ধার কর এ জনপদ থেকে যার অধিবাসীরা জালিম এবং আমাদের জন্য আপনার পক্ষ থেকে একজন অভিভাবক নির্ধারন করুন। আর নির্ধারন করুন আপনার পক্ষ থেকে একজন সাহায্যকারী’ (সূরা আন্-নিসা, আয়াত-৭৫)। জালিমদের কবল থেকে তাদের উদ্ধারের জন্য সকল প্রকার মানবিক ও নৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আমাদের উচিত তাদের দিকে এগিয়ে যাওয়া। উপমহাদেশে যুদ্ধের দামামা বেজে উঠেছে, উত্তপ্ত মধ্যপ্রাচ্য, উত্তপ্ত বিশ্ব রাজনীতি : হুমকির মুখে মানব সভ্যতা। চারিদিকে ‘আদ্দাজ্জালুনাল কাযযাবুন’ (প্রবঞ্চক বর্ণচোরা হায়না) দের ভয়ংকর উত্থান, আস্ফালন, শান্তিকামি (আহালে হক) মু’মিন মুসলমানদের জন্য উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনি এক ভয়ংকর পরিবেশ পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে ঈদুল আযহা ১৪৪৬ হিঃ উদযাপিত হতে যাচ্ছে বিশ্বজুড়ে। ঈদের আনন্দে আত্মবিস্মৃত হয়ে আমরা যেন মজলুম ক্ষুধার্ত নারী, শিশু ও মুজাহিদদের জন্য অনন্ত দোয়া করতে ভুলে না যাই। ঈদকে সামনে রেখে বিশ্ব মালিকের দরবারে আমাদের দোয়া, প্রভু! আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশসহ বিশ্বের ভাগ্যাহত সকল মজলুম মুসলিমদের জানমাল, ইজ্জতের হেফাজত করিও। আমাদের পাপাচারের কারণে নাখোশ হয়ে তুমি আসমানি গজব দ্বারা আমাদের নিশ্চিন্ন করে দিও না। তুমি আমাদের ক্বলবে আলো দাও, আমাদের শ্রবণে আলো দাও, আমাদের দৃষ্টিতে আলো দাও, আমাদের রসনাতে আলো দাও। আমাদের নামাজ, আমাদের কোরবানি, আমাদের জন্মণ্ডমৃত্যু যেন তোমার উদ্দেশ্যেই উৎসর্গীকৃত হয়।
এলাহী! আমরা যেন ঈমানের কঠিন অগ্নিপরীক্ষায় কোনো বাতিল অপশক্তির সামনে দুর্বল হয়ে না পড়ি। তুমি আমাদের ঈমানকে ইয়াক্কীনের দরজায় উন্নীত করিও; ময়দানে মাহশারে অনুগ্রহ করে তোমার খলিলের সঙ্গে ‘মুহসীন’ বান্দাদের কাতারে শামিল করে নিও।
লেখক : উপ-পরিচালক (অব.), ইসলামিক ফাউন্ডেশন।