ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়

মো. তাহমিদ রহমান
প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময়

আজ বিশ্ব পরিবেশ দিবস। ১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে জাতিসংঘের মানব-পরিবেশবিষয়ক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে ৫ জুনকে ‘বিশ্ব পরিবেশ দিবস’ হিসাবে ঘোষণা দেওয়া হয়। পরিবেশগত বিষয়ে বিশ্ববাসীকে সচেতন করার লক্ষ্যে ১৯৭৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে আড়ম্বরপূর্ণ আয়োজনে নিয়মিতভাবে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে। শূন্য প্লাস্টিক দৃষ্টি ভঙ্গিকে কেন্দ্র করে দক্ষিণ কোরিয়ার জেজু দ্বীপে আন্তর্জাতিক প্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, পরিবেশবিদ, পরিবেশবাদী সংগঠনের প্রতিনিধি ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনকে চিন্তা করে ‘প্লাস্টিক দূষণ আর নয়, বন্ধ করার এখনই সময় প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে ৫ জুন ২০২৫ বাংলাদেশেও উদযাপন করা হচ্ছে বিশ্ব পরিবেশ দিবস। এবারের দিবসটি বিশ্বের জন্য তো বটেই বাংলাদেশের জন্যও অনেক ইতিবাচক এবং গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পৃথিবীতে বাংলাদেশ একমাত্র দেশ যারা আইন করে সবার আগে পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ করেছিল।

বিজ্ঞানের সকল আবিষ্কার চমকপ্রদ হলেও সবসময় তা কল্যাণকর নয়। আদিম সভ্যতা থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নতুন নতুন উদ্ভাবন সভ্যতাকে উন্নতির চরম শিখরে নিয়ে গেছে। মানুষ নিজেদের প্রয়োজনে সভ্যতার উন্নতি ঘটিয়ে নিত্যদিনের জীবনযাত্রা সহজ, সুন্দর ও আরামদায়ক করে তুলেছে। এখনও নতুন নতুন সব আবিষ্কারের পেছনে ছুটছে মানুষ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সিংহভাগ সুফলই সমাজের সর্বস্তরের মানুষ ভোগ করলেও, কিছু কিছু আবিষ্কার সমাজ জীবনের জন্য বিধ্বংসী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। তেমনি একটি আবিষ্কার পলিথিন বা প্লাস্টিক পণ্য। শতাধিক বছর আগে ১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে আলেকজান্ডার পার্কস-এর পথ অনুসরণ করে বেলজিয়ান বংশোদ্ভূত আমেরিকান বিজ্ঞানী লিও এইচ বিকল্যান্ড কখনও চিন্তাও করেননি তার আবিষ্কৃত পলিথিন বা প্লাস্টিক পরবর্তী সময়ে একদিন মানুষের উপকার করার পাশাপাশি ক্ষতিরও কারণ হয়ে দাঁড়াবে। পরিবেশ দূষণের অন্যতম উপাদান হয়ে দাঁড়াবে। পলিথিন বা প্লাস্টিক ব্যবহারের বহুমুখিতা, সহজে উৎপাদন, সুলভপ্রাপ্তিসহ নানাবিধ ব্যবহার জীবনযাত্রাকে সহজ করলেও পলিমার যৌগটি পৃথিবীর অস্তিত্বের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্লাস্টিক অপচনশীল পদার্থ হওয়ায় পুনঃচক্রায়ন না হওয়া পর্যন্ত এটি পরিবেশে বিদ্যমান থাকে। যা ভবিষ্যতে পৃথিবীর জন্য বুমেরাং হতে পারে। তাই গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ১ অক্টোবর ২০২৪ খ্রিষ্টাব্দ থেকে পলিথিন, পলিপ্রপিলিন ব্যাগের ব্যবহার নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। যদিও মাঠপর্যায়ে বাস্তবতা ভিন্ন। প্রতিবার বিশ্ব পরিবেশ দিবস এলেই পলিথিন বা প্লাস্টিক পণ্য নিয়ে শুরু হয় শোরগোল। তবে ফলশূন্য। বরং ফি-বছর জ্যামিতিক হারে বাড়ছে নিষিদ্ধ পলিথিনের কারখানা, বাড়ছে প্লাস্টিক দূষণ।

একাধিক জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী প্রায় তিন হাজার কারখানায় দৈনিক ১ কোটি ৪০ লাখ নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিব্যাগ উৎপাদিত হচ্ছে। দেশে বছরে প্রায় সাড়ে আট লাখ টন প্লাস্টিক বর্জ্য উৎপন্ন হয়। যার ৪০ শতাংশ পুনঃব্যবহার হলেও বাকিটা মিশছে পরিবেশে। প্রতি বছর বিশ্বে ৪৩০ মিলিয়ন টনেরও বেশি প্লাস্টিক উৎপাদিত হয়, যার দুই-তৃতীয়াংশ স্বল্পস্থায়ী পণ্য যা শিগগিরই বর্জ্য হয়ে সমুদ্র ভরাট করে এবং প্রায়শই মানবখাদ্য শৃঙ্খলে প্রবেশ করে। আর বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী দেশের নগরাঞ্চলে বার্ষিক মাথাপিছু প্লাস্টিক ব্যবহারের পরিমাণ বিগত দুই দশকের ব্যবধানে বেড়েছে তিনগুণ। এসব পলিথিন অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে খাবার, পানি, বাতাস নানা মাধ্যমে প্লাস্টিকের কণা ঢুকে পড়ছে মানুষের শরীরে। মানব মস্তিষ্কে এবং মায়ের দুধেও প্লাস্টিকের উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে। যুক্তরাস্ট্রের নিউ মেক্সিকো বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাসিউটিক্যাল সায়েন্সেসের অধ্যাপক ম্যাথিউ ক্যাম্পেন বলেন, ‘৪৫ থেকে ৫০ বছর বয়সি স্বাভাবিক মানুষের মস্তিষ্কের প্রতি গ্রাম টিস্যুতে আমরা ৪ হাজার ৮০০ মাইক্রোগ্রাম (১ গ্রাম সমান ১০ লাখ মাইক্রোগ্রাম) প্লাস্টিক কণা পেয়েছি। এটি মস্তিষ্কের মোট ওজনের শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। ২০১৬ খ্রিষ্টাব্দে মস্তিষ্কে যে পরিমাণ প্লাস্টিক পাওয়া গিয়েছিল, ২০২৫ খ্রিষ্টাব্দে তা প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। এর অর্থ আজকের দিনে আমাদের মস্তিষ্ক ৯৯ দশমিক ৫ শতাংশ, বাকিটা প্লাস্টিক। সচেতনতার ঢেঁকুর তুলে অনেক দোকানেই চা-কফি বিক্রিতে ব্যবহার হচ্ছে ওয়ান টাইম ভার্জিন প্লাস্টিকের কাপ, যা মানবদেহ ও জীববৈচিত্র্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ। এই কাপ তৈরি করতে মাইক্রোপ্লাস্টিক ব্যবহার করা হয়। ইদানিং কাগজের তৈরি কাপেও মাইক্রোপ্লাস্টিক পাওয়া যাচ্ছে। এই মাইক্রোপ্লাস্টিক শরীরের জন্য যথেষ্ট ক্ষতিকর। আবার অনেক ডিসপোজেবল কাপে পলিইথিলিনের আবরণ থাকে। এই পাতলা, নমনীয় ও স্বচ্ছ প্লাস্টিকের আবরণ আদতে পানিরোধী হিসেবে কাজ করে। এসব কাপে যখন গরম চা অথবা পানি ঢালা হয়, তখন কাপ থেকে শত শত অতিক্ষুদ্র প্লাস্টিক কণা পানির সঙ্গে মিশে যায়।

গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, মাত্রাতিরিক্ত পলিথিনের ব্যবহারের ফলে এটি খাদ্যশৃঙ্খলে প্রবেশ করছে, যার ফলে প্রজনন প্রক্রিয়া ব্যাহত হচ্ছে। বন্ধ্যত্ব, ক্যান্সারসহ ত্বকের নানা ধরনের রোগ সৃষ্টি হচ্ছে। মানুষের রক্তেও এখন প্লাস্টিক কণা পাওয়া যাচ্ছে। বেশির ভাগ শিশুখাদ্য পলিইথাইলিন, পলিস্টেরাইন দিয়ে তৈরি প্লাস্টিক প্যাকেটে মোড়ানো থাকে। অবুঝ শিশুরা এসব প্যাকেট জাত খাবার খাওয়ার সময় খাবারের কোনো অংশ প্যাকেটে লেগে থাকলে চেটে খায় ফলে এসব যৌগের প্রভাব সরাসরি তাদের শরীরে প্রবেশ করে। ইদানিং আবার প্লাস্টিকের চাল তৈরির খবরও সমাজমাধ্যমে ভেসে আসছে, এ খবর সত্যি হলে মানবস্বাস্থ্য বিরাট হুমকির সম্মুখীন হবে। বাসার ছাদের ওপরের পানির রিজার্ভ ট্যাঙ্কও প্লাস্টিকের তৈরি। গরমের দিনে প্লাস্টিকের ট্যাঙ্কে রাখা পানির তাপমাত্রা বেড়ে তাতে মাইক্রোপ্লাস্টিক যুক্ত হচ্ছে। বিশ্বব্যাংকের তথ্য বলছে, প্লাস্টিক ও পলিথিনের ব্যবহারে পরিবেশ দূষণের মারাত্মক ক্ষতির মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশ। আর এসবের ব্যবহার প্রতিরোধে কয়েক দশক ধরেই কার্যকর উদ্যোগের অভাব রয়েছে, যার ফলে পরিবেশ দূষণ রোধে পিছিয়ে থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্স (ইপিআই) সূচকে ১৮০টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১৭৭তম। বৈশ্বিক প্লাস্টিক-পলিথিন দূষণের প্রায় আড়াই শতাংশ সৃষ্টি হচ্ছে বাংলাদেশে।

পরিবেশের ওপর প্লাস্টিকের প্রভাব সুদূরপ্রসারী ও বিধ্বংসী। প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর এই বদ্বীপ ভূমিকে আমরা বর্জ্যরে ভাগাড়ে পরিণত করে ফেলেছি। আমাদের অসচেতনতায় বাড়ির আশপাশে জমে ওঠে পলিথিন-প্লাস্টিকের ব্যাগে ভরা যাবতীয় বর্জ্য-আবর্জনা। মহাসড়কগুলোর দু’পাশে তাকালেই দেখা যায়, পলিথিন ব্যাগে পূর্ণ করা ময়লার বিশাল স্তূপ। মাঝেমধ্যে এসব উন্মুক্ত ভাগাড়ে আবার আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় যা পরিবেশে উৎকট গন্ধের উদবেগ ঘটায়। এতে বাড়ছে বায়ুদূষণ। প্লাস্টিকের পুড়ে যাওয়া অংশ মাটি-পানিতেও মিশছে। শুধু স্থলভূমি নয়, সমুদ্রও যেন প্লাস্টিক বর্জ্যরে এক বিশালভাণ্ডার হয়ে দাঁড়িয়েছে। লাখেরও বেশি মেট্রিক টন প্লাস্টিক বর্জ্য প্রতিবছর সমুদ্রে প্রবেশ করে। এতে বিপর্যস্ত হচ্ছে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র। আমাদের মাত্রাতিরিক্ত প্লাস্টিকনির্ভরতার ফলে দেখা যাচ্ছে, মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সিতে যে পরিমাণ তারা রয়েছে, সমুদ্রে প্লাস্টিকের পরিমাণ তার থেকেও অনেক বেশি। প্লাস্টিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের জন্য নদী-নালা, খাল-বিল তার নিজস্বতা হারিয়ে ফেলছে। আমাদের রক্ষাকবচ সুন্দরবনও আজ প্লাস্টিকের কারণে হুমকির সম্মুখীন। প্লাস্টিকের জন্য পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন বাঁধাগ্রস্ত হচ্ছে, চারিদিকে শুধু প্লাস্টিক আর প্লাস্টিক। মনে হচ্ছে পৃথিবীকে গ্রাস করতে চতুর্দিকে যেন প্লাস্টিকের রাজত্ব চলছে। সম্প্রতি এক গবেষণায় জানা যায়, পৃথিবীর প্রায় ৯০ শতাংশ পাখি ও মাছের পাকস্থলি থেকে প্লাস্টিকের কণা পাওয়া গেছে।

এছাড়াও পৃথিবীতে প্রায় আটশত সামুদ্রিক প্রজাতির মধ্যে নেতিবাচক প্রভাব লক্ষ্য করা গেছে। পৃথিবীতে মোট উৎপাদিত প্লাস্টিকের প্রায় ৩৬ শতাংশ প্যাকেজিংয়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। এর মধ্যে খাদ্য এবং পানীয় পাত্রে একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক অন্তর্ভুক্ত, যার ৮৫ শতাংশ ভাগাড় বা বিপজ্জনক বর্জ্য হিসাবে শেষ হয়। দেশে তরুণ ও যুবকরা প্লাস্টিক দূষণের জন্য বেশি দায়ী। ১৫ থেকে ৩৫ বছর বয়সীরা একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ৬৮ শতাংশ ব্যবহার করছে। যেসব খাবারের সঙ্গে প্লাস্টিক রয়েছে, সেগুলোর সবচেয়ে বেশি ব্যবহারকারী হচ্ছে তরুণ ও যুবকরা। গাড়ি, ইলেকট্রনিক্স থেকে শুরু করে চিকিৎসা ডিভাইস এবং শিশুদের খেলনা সব কিছুতেই প্লাস্টিক। বাস্তবিকভাবে প্লাস্টিক আমাদের শত্রু কিন্তু প্লাস্টিককে আমরা শত্রু বলে ভাবতে শিখিনি। প্লাস্টিক এই মুহূর্তে বিশ্বের সব থেকে ভয়াবহ দূষণকারী পদার্থ। তার থেকেও ভয়াবহ বিষয় পলিইথিলিন, পলিপ্রপিলিন, পলিভিনাইল ইত্যাদির ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। যে প্লাস্টিকের বর্জ্য আমরা ছুঁড়ে ফেলছি তা আগামী কয়েক হাজার বছর রয়ে যাবে প্রকৃতির বুকে ফলশ্রুতিতে ধীরে ধীরে ক্ষতি হচ্ছে জীববৈচিত্র্যের। প্লাস্টিকের ক্ষতিকর প্রভাব জেনে চুপ করে থাকলে হবে না, তার জন্য প্লাস্টিকের বিকল্প ব্যবহার সন্ধান করতে হবে। পাটজাত দ্রব্যের ব্যবহার বাড়াতে হবে। প্লাস্টিকের অসচেতন ব্যবহার রোধে সামাজিকভাবে সচেতনতা তৈরির পাশাপাশি সরকারকে অলিগলিতে প্লাস্টিক প্যাকেট ও সংশ্লিষ্ট নানা দ্রব্য তৈরির কারখানা বন্ধ করতে পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের বদলে কাগজের ঠোঙা, কাগজের প্যাকেট, কাপড়ের বা চটের থলে, প্লাস্টিকের বোতলের বদলে কাচের বোতলের ব্যবহার বাড়াতে হবে। পৃথিবীকে প্লাস্টিক দূষণ থেকে সারিয়ে তুলতে প্লাস্টিক বর্জ্য কমিয়ে প্রতিটি দিনকে একটি ছোট পরিবেশ দিবসে পরিণত করতে হবে। একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক এড়াতে পুনঃব্যবহারযোগ্য শপিং ব্যাগ, পানির বোতল বা কফির কাপ ব্যবহার করার চেষ্টা করতে হবে। আমরা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যেকে সুস্থ রাখতে চাইছি। অথচ এজন্য করণীয় কাজটিই করতে চাইছি না। প্লাস্টিক দূষণ প্রতিরোধে ভোক্তা পর্যায়ে পলিথিনবিরোধী সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি পলিথিনের উৎপাদন, বিপণন নিষিদ্ধকরণ সংক্রান্ত আইনের যথাযথভাবে বাস্তবায়ন ঘটাতে হবে। এর জন্য একবার ব্যবহারযোগ্য পলিথিন তো বটেই, পুনর্ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকের ব্যবহারও বন্ধ করতে হবে। কোরিয়া ২০৪০ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে জেজু থেকে প্লাস্টিক বর্জ্য নির্মূল করার জন্য ‘২০৪০ প্লাস্টিক জিরো আইল্যান্ড’ ভিশন উন্মোচন করে, একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক পর্যায়ক্রমে বন্ধ করতে পারলে আমরা পারব না কেন? পলিইথিলিন (পলিমার) বা ‘প্লাস্টিকদানা’ ব্যবহারের মাধ্যমে বিশ্বে প্রতিদিন কয়েক মিলিয়ন টন বিভিন্ন প্রকারের প্লাস্টিক পণ্য তৈরি হয়। যা ভবিষ্যতে পৃথিবীর জন্য বুমেরাং হতে পারে। তাই প্লাস্টিকের উপযুক্ত বিকল্প খোঁজার সঙ্গে সঙ্গে প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার পথও সন্ধান করতে হবে। মাতৃতুল্য পৃথিবীকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষার জন্য সর্বসম্মতিক্রমে এখনই প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। মূল কথা হলো আমাদের গ্রহকে রক্ষা করার জন্য ব্যক্তি থেকে শুরু করে রাষ্ট্রব্যবস্থা সকলকে ভবিষ্যৎ নাগরিকদের কথা ভেবে পলিথিন ব্যবহারের আত্মঘাতী প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

লেখক : শিক্ষক ও কলামিস্ট

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত