ঢাকা শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫, ৫ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

ব্যর্থতা মানেই জীবন শেষ নয়

তৈয়বা খানম
ব্যর্থতা মানেই জীবন শেষ নয়

জয়-পরাজয় জীবনের অংশ। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কেউ জয়ী হয় কেউবা পরাজয় বরণ করেন। বুক ভরা আশা আর দুচোখ ভরা রঙিন স্বপ্ন নিয়েই শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষার ন্যায় প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কেবলমাত্র বাবা-মায়ের স্বপ্নকে জাগিয়ে রাখবে বলে তাদের মুখে হাঁসি ফুটাবে বলে কতশত নির্ঘুম রাতের সাক্ষী তারা হয় তা বলা দুষ্কর। ভর্তি প্রস্তুতির শুরু থেকে শেষ সময়টাই যেন এক ত্যাগের ইতিহাস। তবুও কারো কারো কাছে সফলতা ধরা দেয় না। ঠিক সেই মুহূর্তটা বয়ে বেড়ানো একজন শিক্ষার্থীর কাছে ভীষণ কষ্টকর। সে সময় একজন শিক্ষার্থী মানসিকভাবে অনেক বির্পযস্ত থাকেন। খাওয়া-দাওয়া, ঘুম এমনকি নিত্যদিনের কাজ সকল কিছুতে ব্যঘাত হয়। দয়া করে সেই মুহূর্তে শিক্ষার্থীদের কেন সে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পেলো না এই নিয়ে উচ্চ বাচ্য করবেন না। কেবলমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াটায় জীবনের সবকিছু নয়। প্রয়োজনীয় দক্ষতা ও অভিজ্ঞতার সংকট থাকলে কোথাও সফল হওয়া দুষ্কর। তাই, ইতিবাচক মানসিকতা গ্রহণ করতে হবে।

কেননা, কোন শিক্ষার্থী ইচ্ছে করে পরীক্ষায় খারাপ করেন না। পাড়া-প্রতিবেশীর তৃর্যক মন্তব্য দ্বারা অনেক শিক্ষার্থী ভুল পথে হাঁটেন। তাদের দিয়ে কিছুই হবে না এই মনোভাব থেকে অনেকে আত্মহত্যা অবদি করার নজির দেখা যায়। আমাদের জীবনটা রবের দেওয়া সুন্দর উপহার। জীবনের প্রতি ভালোবাসা থেকে তাকে ভরসা ও সাহস দেওয়ার মাধ্যমে তার মনোবল বৃদ্ধি করুন। তাকে নতুন করে শুরু করার অনুপ্রেরণা দিন। তাকে বুঝাতে হবে, ব্যর্থতা থেকেই সফলতার শুরু। জীবনে যারাই সফলতা অর্জন করেছেন তারা কখনও একবারে সফল হতে পারেননি। ব্যর্থতা মানে সব শেষ নয়। বরং বিফল হওয়া থেকেই রচিত হয় সাফল্যের গল্প।

সৃষ্টিকর্তা আমাদের সৎ প্রচেষ্ঠা বিফল হতে দেন না। প্রতেক্যের দক্ষতা ও যোগ্যতার সতন্ত্র ক্ষেত্র রয়েছে। তাই, তাদের দক্ষতা ও যোগ্যতা অনুযায়ী তারা ভিন্ন ক্ষেত্রে পারদর্শিতার সাথে ভূমিকা রাখেন। কেবল ভালো ফলাফল দিয়ে সেরা হওয়ার মানদ- দাড় করানো যায় না। বাবা-মায়ের স্বপ্ন পূরণের অত্যাধিক চাহিদা সন্তানের উপর চাপিয়ে দেওয়া উচিত নয়। বিশেষ করে, এমন স্বপ্ন যে স্বপ্নের প্রতি সন্তানের কোন ভালো লাগা কাজ করে না। অভিভাবকদের মনে রাখতে হবে, প্রতিটা সন্তান কেবল ডাক্তার, পাইলট কিংবা ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ছুটে না। যান্ত্রিকতার যুগে তাদের রোবট ভাববেন না। সন্তানের নিজস্ব ভালো লাগার বিষয়গুলো নিয়ে সন্তানদের পড়তে দেওয়া উচিত। প্রয়োজনে সন্তানের সাথে আলোচনা করা যেতে পারে যে সে কীভাবে তার পড়াশোনাটা করতে চাচ্ছে। জোর জবরদস্তি করে সন্তানের শেখার আগ্রহটা নষ্ট করা উচিত নয়। নতুন স্বপ্নপূরণের আনন্দের মাঝে ব্যথরা হারিয়ে না যাক। তাদের কথাও আমাদের ভাবতে হবে। সফল ব্যক্তিদের নিয়ে যতটা আলোচনা করা হয় তাদের নিয়ে কেউ ভাবে না বললেও চলে। এরূপ অবহেলায় তারা হারিয়ে যায় ভুবন থেকে। তাদেরও প্রয়োজনীয় উৎসাহ উদ্দীপনার মাধ্যমে সম্মুখ সারিতে রাখতে হবে। তাদেরও উপলব্ধি করাতে হবে তারা ফেলনা নয়; তারা আমাদের সমাজের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারেন।

তৈয়বা খানম

শিক্ষার্থী, হাটহাজারী, চট্টগ্রাম

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত