বাংলাদেশের নন্দিত নায়িকা দিলারা হানিফ পূর্ণিমা। চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির মেয়ে তিনি। বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের শুরুর ইতিহাস থেকে আজ অবধি যাদের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ হয়ে আসে তাদের মধ্যে পূর্ণিমার নামটিও ধারাবাহিকভাবে আসে। বিশেষত নব্বই দশকে যে কজন নায়িকার আবির্ভাব হয় বাংলাদেশের সিনেমায় সে দশকের সফল চারজন নায়িকার একজন তিনি। ১৯৯৮ সালের ১৫ মে জাকির হোসেন রাজু পরিচালিত ‘এ জীবন তোমার আমার’ সিনেমায় অভিনয়ে মধ্যদিয়ে রিয়াজের বিপরীতে নায়িকা হিসেবে পূর্ণিমার অভিষেক হয়। সেই থেকে আজ অবধি তিনি সফল, ব্যবসা সফল মুক্তিপ্রাপ্ত ৮০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। একটা সময় উপস্থাপনা দিয়ে আলোচনার শীর্ষেও চলে আসেন। পূর্ণিমার ভাষ্যমতে, তার প্রথম ব্যবসা সফল সিনেমা ‘যোদ্ধা’। এছাড়াও তার নিজের ভালোলাগার সিনেমার মধ্যে রয়েছে নায়ক রাজ রাজ্জাক পরিচালিত ‘সন্তান যখন শত্রু’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘সুলতান’, ‘পিতা মাতার আমানত’, ‘মনের মাঝে তুমি’, ‘শাস্তি’, ‘সুভা’, ‘বিয়ের প্রস্তাব’, ‘লোভে পাপ পাপে মৃত্যু’, ‘হৃদয়ের কথা’, ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না’ ইত্যাদি। সিনেমাতে অভিনয়ের শুরুর সময়েই পূর্ণিমা রেজানুর রহমানের নির্দেশনায় শহীদুজ্জামান সেলিমের বিপরীতে একটি নাটকেও অভিনয় করেন। সিনেমাতে তিনি রিয়াজ, মান্না, রুবেল, ফেরদৌস, আমিন খান, অমিত হাসান, শাকিব খানসহ আরও অনেকের বিপরীতে এবং নাটকে রাইসুল ইসলাম আসাদ, আফজাল হোসেন, শহীদুজ্জামান সেলিম, জাহিদ হাসান, মাহফুজ আহমেদ, মোশাররফ করিম, চঞ্চল চৌধুরী, অপূর্বসহ আরো বেশ কজনের বিপরীতে অভিনয় করে দর্শককে তার অভিনয় দিয়ে মুগ্ধ করেছেন। বাংলাদেশে পূর্ণিমা প্রেমী কোটি কোটি ভক্ত রয়েছে যারা তার নতুন কাজের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। পূর্ণিমা অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘আহারে জীবন’। অভিনয় জীবনের সাফল্যের রজত জয়ন্তীরও বেশি সময় পেরিয়ে আজকের অবস্থান এবং কৃতজ্ঞতার কথা বলতে গিয়ে পূর্ণিমা বলেন, ‘শুরুতেই আল্লাহর কাছে অসীম শুকরিয়া আদায় করছি। সেইসঙ্গে আমার প্রতিটি সিনেমার প্রযোজক, পরিচালক, সহশিল্পী, টেকনিসিয়ানসহ বাংলাদেশের সব দর্শকের প্রতি এবং সর্বোপরি সাংবাদিক ভাই বোনদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
অবশ্যই আজীবন আমি আমার মায়ের কাছে কৃতজ্ঞ থাকবো। কারণ তিনি তাগিদ দিয়েছিলেন বলেই আমি কাজ করেছি এবং আজকের পূর্ণিমা হয়েছি। দীর্ঘ ২৫ বছরের অভিনয় জীবনে উত্থান-পতনতো ছিলই। একটা সময় এসে আমি হতাশও হয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু পরবর্তীতে উপস্থাপনা দিয়ে আলোচনায় এসে আবারও আমি আমার পূর্বের অবস্থানে ফিরে আসি। আমি আমার দর্শক ভক্তের প্রতি সত্যিই বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। নায়ক রাজ রাজ্জাক আঙ্কেল আমাকে নিয়ে দু’টি সিনেমা নির্মাণ করেছিলেন। সেই সময়টায় তিনি আমাকে নিয়ে যে ড্রাইভ দিয়েছিলেন, এ জন্য তার কাছে ঋণী।’ বিশেষত উল্লেখ্য, পূর্ণিমার জন্ম ১৯৮৪ সালের ১১ জুলাই। পূর্ণিমার জন্মদিনে অনেক অনেক শুভ কামনা। কাজী হায়াত পরিচালিত ‘ওরা আমাকে ভালো হতে দিলো না’ সিনেমাতে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। পূর্ণিমা জানান, আজকের দিনটি তিনি তার পরিবারের সঙ্গেই একান্তে উদযাপন করবেন।