ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় ভয়াবহ মানবিক সংকট নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার। তিনি বলেছেন, সেখানে মানুষের যে দুর্ভোগ চলছে তা ‘অবর্ণনীয় এবং কোনো যৌক্তিকভাবেই সমর্থনযোগ্য নয়’। গতকাল শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি। গত বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে কিয়ার স্টারমার বলেন, গাজার পরিস্থিতি ‘অনেক দিন ধরেই গুরুতর’ থাকলেও এখন তা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা এক ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয়ের সাক্ষী হচ্ছি।’ এই সংকট মোকাবিলায় জার্মানি ও ফ্রান্সের নেতাদের সঙ্গে জরুরি আলোচনা করবেন জানিয়ে স্টারমার জানান, নিহতদের সংখ্যা রোধ করা এবং মানুষের জন্য জরুরি খাদ্য সহায়তা নিশ্চিত করতেই এই আলোচনা করবেন তিনি।
মূলত গাজায় প্রায় প্রতিদিনই খাদ্য সহায়তার লাইনে ত্রাণ নিতে গিয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন ফিলিস্তিনিরা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সমর্থনে গঠিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ) নামের নতুন বিতর্কিত ত্রাণ ব্যবস্থাপনাও কার্যকর না হওয়ায় খাদ্য ও ওষুধ সংকট আরও বেড়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) জানিয়েছে, গাজার এক-চতুর্থাংশ মানুষ বর্তমানে দুর্ভিক্ষের মতো পরিস্থিতিতে রয়েছেন। এরআগে গত সোমবার যুক্তরাজ্যসহ ২৮টি দেশ যৌথ বিবৃতিতে ইসরাইলকে ত্রাণ সরবরাহে সব ধরনের নিষেধাজ্ঞা অবিলম্বে প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়েছে। তারা বলেছে, ইসরায়েলের ত্রাণ সরবরাহ ব্যবস্থাপনা ‘বিপজ্জনক’ এবং তা গাজাবাসীদের ‘মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত করছে’। ব্রিটিশ লেবার পার্টির বেশ কিছু এমপি স্টারমারের ওপর চাপ তৈরি করেছেন যেন তিনি ইসরায়েলের বিষয়ে আরও কড়া অবস্থান নেন। অনেকে সরকারকে আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা ফিলিস্তিনকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। স্টারমার বলেছেন, যুক্তরাজ্য তখনই এই পদক্ষেপ নেবে যখন মধ্যপ্রাচ্য সংকটের টেকসই রাজনৈতিক সমাধান আসবে।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে দেওয়া আরেকটি বিবৃতিতে স্টারমার বলেন, ইসরায়েলের উচিত এখনই পথ পরিবর্তন করা। তিনি আবারও তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি এবং হামাসের হাতে থাকা সব জিম্মিকে শর্তহীনভাবে মুক্তির আহ্বান জানান।
স্টারমার বলেন, ‘ফিলিস্তিনিদের রাষ্ট্রের অধিকার অপরিবর্তনযোগ্য ও মৌলিক’। তিনি মনে করেন, যুদ্ধবিরতি বাস্তবায়িত হলে সেটিই দুই রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধান এবং ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার পথে প্রথম ধাপ হবে।