কক্সবাজারের চকরিয়ায় নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামীলীগের ঝটিকা মিছিলের পর ঘুম ভাঙলো জেলা পুলিশের। তার আলোকে জেলাজুড়ে জোরদার হয়েছে অপারেশন ডেভিল হান্ট। গতকাল বুধবার বিকাল থেকে বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত এই অভিযান চালায় পুলিশ। অভিযানে বিভিন্ন উপজেলা থেকে ৫৭ জন আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ ও শ্রমিক লীগ নেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কক্সবাজার জেলা পুলিশের মুখপাত্র, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ট্রাফিক) মো. জসীম উদ্দিন চৌধুরী অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, পুলিশ নিয়মিত কার্যক্রমের পাশাপাশি ‘অপারেশন ডেভিল হান্ট’ অভিযান জোরদার করেছে। তার আলোকে জেলাজুড়ে অভিযান চালিয়ে ৫৭ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এই অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানান। জেলা পুলিশের তথ্য সূত্র মতে, কক্সবাজার মডেল থানার পুলিশ ৫ জন, চকরিয়া ১০ জন, মহেশখালী ৫ জন, কুতুবদিয়া ৩ জন, রামু ৯ জন, উখিয়া ১০ জন, টেকনাফে ১ জন ও পেকুয়ায় ৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। জানা যায়, গতকাল বুধবার সকাল আটটার দিকে চকরিয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তোলা হয় কক্সবাজার-১ (চকরিয়া-পেকুয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলমকে। আদালত আনোয়ারুল কবির তদন্তকারী কর্মকর্তাদের পৃথক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ৭টি মামলায় ১৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। আদালত সূত্র জানায়, জাফর আলম চকরিয়া থানার পাঁচটি ও পেকুয়া থানার দুটি মামলার আসামি। এর মধ্যে চকরিয়া থানার ৫টি মামলায় ১৪ দিন ও পেকুয়া থানার ২টি মামলায় ৪ দিন রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়েছে। জাফর আলমকে বুধবার সকালে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়। ৭টি মামলায় শুনানি শেষে তাঁকে কাঠগড়া থেকে নামিয়ে চকরিয়া থানার উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়। জাফর আলমকে মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার করে হয়রানি করা হচ্ছে দাবি করে এর প্রতিবাদে ঝঁটিকা মিছিল করে স্থানীয় আওয়ামীলীগের কিছু নেতাকর্মী। সকাল সাড়ে নয়টার দিকে চকরিয়া পৌরসভার মগবাজার এলাকায় তারা ঝটিকা মিছিল করেন। এতে নেতৃত্ব দেন চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন জয়নাল, খুটাখালী ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি তৌহিদুল ইসলাম ও চকরিয়া পৌরসভা যুবলীগের কর্মী এনামুল হক। এই মিছিলের পর জেলাজুড়ে আইনশৃঙ্খলার ভূমিকা নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠে। যার প্রেক্ষিতে জোরদার হয় অপারেশন ডেলিভ হান্ট। এদিকে ৬ মে কক্সবাজার শহরের কলাতলী সৈকত এলাকায় যুবলীগ নেতা মোনাফ সিকদারের নেতৃত্বে ঝটিকা মিছিল নিয়ে রীতিমতো পুলিশ বেকায়দায় পড়েন। ওই ঝটিকা মিছিলের পর পুলিশ একদিনে ৩২ জনকে গ্রেফতার করেছিল।