সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উচ্চ আদালতের মর্যাদাহানিকর মন্তব্যের অভিযোগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলমকে আদালত অবমাননার জন্য লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হয়েছে। আদালতের মর্যাদা অক্ষুন্ন রাখতে সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী হিসেবে গতকাল শনিবার অ্যাডভোকেট মো. জসিম উদ্দিন এই লিগ্যাল নোটিশ পাঠান। ডাকযোগের পাশাপাশি সারজিস আলমের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারেও পাঠানো হয় এ নোটিশ।
নোটিশে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের মাধ্যমে প্রধান বিচারপতির কাছে লিখিত নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রেস কনফারেন্স করে দুই ঘণ্টার মধ্যে দেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বলা হয়েছে। অন্যথায় এ আইনজীবী তার বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা করবেন।
গত বৃহস্পতিবার সারজিস আলম এক ফেসবুক পোস্টে লেখেন, টাকা আর রাজনৈতিক দলের সুপারিশে অনেক হত্যাকারী আওয়ামী লীগারের জামিন হয়ে যায়। টাকা আর রাজনৈতিক সুপারিশ নাই বলে আওয়ামী আমলে জুলুমের শিকার অনেক মজলুমের জামিন হয় না। শাপলা হত্যাকাণ্ডে হেফাজতের উপরে চাপানো মিথ্যা মামলায় অনেক মজলুম আলেম এখনও আদালতে চক্কর কাটে, কারাগারে বন্দি থাকে।
অথচ এমন অনেক দাগী আসামি বিগত কয়েক মাসে জামিন পেয়েছে যারা বিএনপির সঙ্গে সংযুক্ত হলেও বিএনপির সময়ে তাদের কৃতকর্ম ও অপরাধের জন্য জেলে গিয়েছে। এগুলো কীভাবে হয়? কার সুপারিশে হয়? কোন আইনজীবী এবং বিচারকের প্রত্যক্ষ মদদে হয়?
প্রকাশ্য দিবালোকে হাসিনার নির্দেশে এতগুলো মানুষ খুন হলো, এতগুলো মানুষের রক্ত ঝরল, তারপরও নয় মাসে একটা বিচারকার্য সম্পন্ন হয় না ! একটা খুনের বিচার হয় না! এই দায় আইন উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ নজরুল স্যার কি কোনোভাবে এড়াতে পারে? তাহলে কি আমাদের এখন তার পদত্যাগ চাওয়া উচিত নয়?
নোটিশে আরও বলা হয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের মেয়র হিসেবে মো. ইশরাক হোসেনকে মেয়র ঘোষণা করে নির্বাচনি ট্রাইব্যুনালের রায় ও নির্বাচন কমিশনের গেজেট চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন আইনজীবী মামুনুর রশিদ। শুনানি শেষে হাইকোর্ট গত বৃহস্পতিবার সেই রিট সরাসরি খারিজ করে দেন। রায় ঘোষণার পর আপনি (সারজিস) ভেরিফায়েড মেটা (ফেসবুক) আইডিতে ১১টা ৪৯ মিনিটের দিকে একটি প্রতিক্রিয়া দেন। যেটি গণমাধ্যমে প্রকাশ করা হয়েছে। এই মন্তব্যের মাধ্যমে রাষ্ট্রের এক স্তম্ভ বিচার বিভাগের বিষয়ে অসম্মান দেখিয়েছেন। যেটা মর্যাদাহানিকর ও আদালত অবমাননা।