
যশোরের কেশবপুরে আগাম জাতের ফুলকপি ও বাধাকপি চাষে কৃষকরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। শেষ মুহূর্তে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় আগাম জাতের কপির যেমন ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তেমন অন্যান্য জাতের সবজিরও ভালো ফলনের সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, খরিপ-২ মওসুমে এ উপজেলায় ৬৩২ হেক্টর জমিতে সবজি আবাদ করা হয়। এছাড়াও, ঘেরের বেঁড়িবাধে প্রায় ১৫০ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির সবজির আবাদ হয়েছে। এরমধ্যে বাধাকপি, ফুলকপি, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, চাল কুমড়া, টমেটো, মরিচ, ঢ্যাঁড়শ, পুইশাক, বেগুন, ধুন্দল, চিচিংগাসহ হরেক রকমের সবজি চাষ হয়েছে।
গত বছর কৃষকরা আগাম জাতের বাধাকপি, ফুলকপি ও মূলার আবাদ করে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়। চলতি বছর ভালো দামের আশায় কৃষকরা আবারও আশায় বুক বেধে আগাম জাতের এসব সবজি চাষে শ্রম দিচ্ছেন। তবে এ বছর বেগুনের দাম বরাবরই ভালো হওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন বলে জানা গেছে। আবহাওয়াও অনুকূলে রয়েছে। ফলে সবজির ফলন ভালো হবে। উপজেলা মির্জাপুর গ্রামের কৃষক আবুল হোসেন বলেন, এ বছর তিনি আগাম জাতের বাধাকপি ও ফুলকপির আবাদ করেছেন। ভালো ফলনের আশায় দিন-রাত শ্রম দিচ্ছেন। আর কিছুদিন গেলেই কপি বাজারে বিক্রি শুরু করবো। একই গ্রামের অন্য কৃষক আবদুল করিম বলেন, তিনি ২০ শতক জমিতে নাবি জাতের বাধাকপি ও ফুলকপির চাষ করেছেন। নিজে টেইলার্সের কাজের ফাঁকে ফাঁকে শ্রম দিচ্ছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ভালো ফলন হবে বলে তিনি আশাবাদী। বাগদা গ্রামের কৃষক তরিকুল ইসলাম বলেন, তিনি এক বিঘা জমিতে বেগুন, পালন শাক, লাল শাক, টমেটো, ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করেছেন। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল আলম বিভিন্ন পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সারুটিয়া গ্রামের মৎস্য চাষি শহিদ জানান, বিলের শতশত মাছের ঘেরের বেঁড়িতে পেঁপে, সিম, উছতে, বরবটি ও মাচায় লাউ-মিষ্টি কুমড়া, তরমুজসহ হরেক রকমের সবজি আবাদ করা হয়েছে। আগাম বৃষ্টিতে ঘেরের বেঁড়ি তলিয়ে গিয়ে সবজি নষ্ট হয়ে যায়। বৃষ্টির পানি কমে যাওয়ার পর আবারও সবজির আবাদ করা হয়েছে। তিনি সবজির ন্যায্য মূল্য নিয়ে শঙ্কায় আছেন।
উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নাজমুল আলম বলেন, তার ইউনিয়নে আগাম জাতের বাধাকপি ৩.৫ বিঘা ও ফুলকপি ৩ বিঘা জমিতে আবাদ হয়েছে। এছাড়া, এ ইউনিয়নে ১০ বিঘা জমিতে বিভিন্ন জাতের শীতকালীন সবজিসহ ৭ বিঘা জমিতে ফুলকপি ও বাধাকপির চাষ হয়েছে। মাঠে মাঠে গিয়ে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। কৃষকরা ভালো ফলন পাবেন বলে তিনি আশাবাদী। এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে উপজেলা মির্জাপুর গ্রামের মাঠ এলাকায়।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, এ উপজেলায় হরেক রকমের সবজির আবাদ হয়ে থাকে। শীতকালীন সবজির ১৩ হাজার ২৭২ মেট্রিকটন ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে। গত বছর আলুর দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা কোমর বেধে আলুর চাষ করে। বাজারে পর্যাপ্ত আলু মজুত থাকায় দাম না পেয়ে কৃষক হতাশ হয়ে পড়েছে।