
লেনদেন খরা কাটিয়ে উঠেছে দেশের শেয়ারবাজার। কয়েক কার্যদিবস ধরে ধারাবাহিকভাবে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে লেনদেনের গতি তত বাড়ছে। এতে বছরের সর্বোচ্চ লেনদেনের একের পর এক রেকর্ড হচ্ছে। গতকাল রোববার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরে এই প্রথম এক হাজার ৪০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হলো। একই সঙ্গে গত বছরের ১১ আগস্টের পর সব থেকে বেশি লেনদেনের দেখা পেলেন বিনিয়োগকারীরা। লেনদেনের গতি বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। একই সঙ্গে বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জেও (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। পাশাপাশি বেড়েছে প্রধান মূল্যসূচক। এছাড়া লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। এদিন ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকের ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম বাড়লেও লেনদেনের শুরু থেকেই বিপরীত পথে হাঁটতে থাকে ব্যাংক প্রতিষ্ঠানগুলো। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সিংহভাগ ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমার প্রবনণতা অব্যাহত থাকে। ফলে ব্যাংক কোম্পানিগুলোর শেয়ারের ঢালাও দরপতন হয়। ব্যাংকের শেয়ারের দামে ঢালাও দরপতন হওয়ার কারণে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার পরও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়নি। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলিয়ে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৪৮ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১২৭টির। এছাড়া ২৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অপরদিকে ৩৬ ব্যাংকের মধ্যে মাত্র এক ব্যাংকের শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৩০ ব্যাংকের শেয়ারের দাম কমেছে। এছাড়া ৫টির শেয়ারের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১৪৬টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৭২টির দাম কমেছে এবং ৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৫৬ কোম্পানির শেয়ারের দাম বাড়ার বিপরীতে ২০টির দাম কমেছে। এছাড়া ৬টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে পচা ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৬টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৫টির এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। পাশাপাশি তালিকাভুক্ত ৩৬ মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ৩৫টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে একটির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এদিন কোনো মিউচুয়াল ফান্ডের দাম কমেনি। এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২১ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৬৩৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৫ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৮৮ পয়েন্টে উঠে এসেছে। তবে ডিএসই শরিয়াহ সূচক শূন্য দশমিক ৬১ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ২২৯ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ৪৪১ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় এক হাজার ৩৩৮ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। এ হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ১০৩ কোটি ৩৭ লাখ টাকা।