
কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় স্থানীয় এনজিওগুলোকে যুক্ত করার দাবি জানিয়েছেন দেশের বিভিন্ন এনজিও প্রতিনিধিরা। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তারা। ‘সাশ্রয়ী রোহিঙ্গা ব্যবস্থাপনার জন্য চাই স্থানীয় এনজিওদের নেতৃত্ব’ শীর্ষক ওই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে কোস্ট ফাউন্ডেশন। আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক রেজাউল করিম চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও পরিচালক মোস্তফা কামাল আকন্দের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে ফাউন্ডেশনের যুগ্ম পরিচালক মো. ইকবাল উদ্দিনসহ অন্যরা বক্তব্য দেন। সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, রোহিঙ্গাদের মানবিক কারণে আশ্রয় দিয়েছিল বাংলাদেশ সরকার। কিন্তু তারা এখন দেশের জন্য বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
তাদের কারণে কক্সবাজারের মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। অন্যদিকে দেশের উপকূলে যারা থাকেন, তাদের চেয়ে অনেক ভালো জীবন যাপন করছেন রোহিঙ্গারা। অথচ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গাকে বসে খাওয়াচ্ছে সরকার। বক্তারা আরও বলেন, দীর্ঘ আট বছর ধরে রোহিঙ্গারা কক্সবাজারে অবস্থান করছেন।
দিন যত যাচ্ছে তাদের পেছনে বিদেশি সংস্থাগুলোর বরাদ্দের পরিমাণ ততই কমছে। আবার যে সব বিদেশি সংস্থা কক্সবাজারের রোহিঙ্গাদের ব্যবস্থাপনায় নিয়োজিত রয়েছে; তাদের পেছনেই রোহিঙ্গাদের জন্য বরাদ্দের মোট ৭০ শতাংশ টাকা খরচ হয়ে যাচ্ছে। তাই স্থানীয় এনজিও প্রতিনিধিদের যুক্ত করলে এই খরচ অনেক অংশ কমে যাবে। বিদেশি এনজিও প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তারা কক্সবাজার শহরের বিশাল অফিস এবং হোটেলে থেকে রোহিঙ্গা শিবিরে কার্যক্রম পরিচালনা করেন জানিয়ে বক্তারা বলেন, কক্সবাজার শহর থেকে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে যেতে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে।
প্রতিটি কর্মকর্তাদের জন্য আলাদা আলাদা গাড়ি বরাদ্দ রয়েছে। ফলে এভাবেই তাদের পেছনে টাকা খরচ হয়ে যায়। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের জন্য মাসে মাত্র ১২ ডলার করে খাবার খরচ দেওয়া হয়। আবার তাদের শিক্ষায় বরাদ্দ ক্রমেই কমে আসছে। রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীদের বসিয়ে না রেখে দেশের তৈরি পোশাক খাতসহ উৎপাদনশীল কাজে যুক্ত করার আহ্বান জানান বক্তারা।
তারা বলেন, জাতিসংঘসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা রোহিঙ্গাদের তদারকি করছে। তাদের উৎপাদনশীল কাজে লাগান যেতে পারে। তাদের উৎপাদিত পণ্য ইউরোপ-আমেরিকায় বিনা শুল্কে পাঠানোর ব্যবস্থা করা যেতে পারে। এতে করে রোহিঙ্গাদের জীবনযাত্রার মান আরও ভালো হবে।