ঢাকা শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ২০ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চলতি বছরেই দেশের ওষুধ বাজার ছয় বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে

* দেশে উৎপাদিত ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে ১৫০টিরও বেশি * দেশীয়ভাবে এখন ৯৮ শতাংশ ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে * ফার্মাসিউটিক্যাল খাত জিডিপির ১.৮৩ শতাংশ অবদান রাখছে * পুঁজিবাজারের মাধ্যমে গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে অর্থায়ন সম্ভব
চলতি বছরেই দেশের ওষুধ বাজার ছয় বিলিয়ন ডলার ছাড়াবে

বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রেখে ২০২৫ সালের মধ্যে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করবে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির (বিএপিআই) নির্বাহী কমিটির মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এমন তথ্য জানানো হয়েছে। বিএপিআইয়ের কার্যালয়ে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে ডিএসই’র পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান মমিনুল ইসলামের নেতৃত্বে পাঁচ সদস্যের প্রতিনিধি দল অংশগ্রহণ করেন। অপরদিকে, বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির নির্বাহী কমিটির পক্ষ থেকে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন সমিতির সভাপতি আব্দুল মুক্তাদির। গতকাল বুধবার ডিএসই থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। ডিএসই থেকে জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের ওষুধ শিল্প ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির ধারা বজায় রেখে ২০২৫ সালের মধ্যে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অতিক্রম করবে। বর্তমানে দেশে ২৫৭টি লাইসেন্সপ্রাপ্ত ও কার্যকরী ওষুধ কোম্পানি রয়েছে, যাদের উৎপাদিত ওষুধ রপ্তানি হচ্ছে বিশ্বের ১৫০টিরও বেশি দেশে। জাতীয় অর্থনীতিতে এই শিল্পের অবদানও উল্লেখযোগ্য। বাংলাদেশের মোট জিডিপির ১.৮৩ শতাংশ আসে ফার্মাসিউটিক্যাল খাত থেকে। তীব্র প্রতিযোগিতামূলক এই খাতটি এখনো কিছু অন্তর্নিহিত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দেশের পুঁজিবাজার হতে পারে অন্যতম প্রধান সহায়ক শক্তি। ডিএসই জানিয়েছে, পুঁজিবাজারের মাধ্যমে শিল্পখাতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি, মূলধন সংগ্রহ, গবেষণা ও প্রযুক্তি উন্নয়নে অর্থায়ন এবং নতুন উৎপাদন সুবিধা স্থাপন করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি ও ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল মুক্তাদির বলেন, বর্তমান অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে শেয়ারবাজারকে আরও গতিশীল ও আস্থাশীল করতে বিনিয়োগযোগ্য অর্থের সরবরাহ, নীতিগত স্থিতিশীলতা এবং কর কাঠামোর সামঞ্জস্য নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। তিনি বলেন, বর্তমানে বেসরকারি খাতের ঋণগ্রহণের হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে এবং টানা তৃতীয় মাসে রপ্তানি প্রবৃদ্ধিও নিম্নমুখী। অথচ, দেশের অর্থনীতির গতি মূলত বেসরকারি খাতের বিনিয়োগের ওপর নির্ভরশীল, যা জাতীয় রাজস্ব ও প্রবৃদ্ধির প্রধান চালিকা শক্তি। আব্দুল মুক্তাদির বলেন, শেয়ারবাজারে দীর্ঘমেয়াদী আস্থা ফিরিয়ে আনতে নীতি, আইন ও বিধিমালায় ঘন ঘন পরিবর্তন বা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা উচিত নয়। সরকারের উচিত বিনিয়োগ সম্পর্কিত নীতিমালাগুলো স্থিতিশীল রাখা এবং কোন বিষয়ে পরিবর্তন আনা হবে না তা স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা। নীতিগত ধারাবাহিকতা বজায় থাকলেই বিনিয়োগকারী ও উদ্যোক্তাদের আস্থা পুনরুদ্ধার সম্ভব। তিনি উল্লেখ করেন, বর্তমানে পাবলিক ও প্রাইভেট কোম্পানির প্রায় সমান করহার থাকায় তালিকাভুক্তির প্রণোদনা কমে গেছে। তিনি উল্লেখ করেন, ডিএসইতে বর্তমানে ৩৪টি ফার্মাসিউটিক্যালস ও কেমিক্যাল কোম্পানি তালিকাভুক্ত, যার মধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস বাজারমূল্যের দিক থেকে শীর্ষ কোম্পানি। দেশের ওষুধ শিল্প প্রায় ৫ বিলিয়ন ডলারের বাজারে পরিণত হয়েছে এবং স্থানীয়ভাবে ৯৮ শতাংশ ওষুধ উৎপাদিত হচ্ছে। ডিএসই চায়, এই শিল্প আরও শক্তিশালী হোক এবং নতুন প্রতিষ্ঠান লিস্টিংয়ের মাধ্যমে মূলধন সংগ্রহ করুক, যাতে ব্যাংক নির্ভরতা কমে এবং টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত