
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস গতকাল রোববার অধিকাংশ শেয়ার ও ইউনিটের দর বেড়েছে। এতে এক্সচেঞ্জটির সবগুলো সূচক বেড়েছে। সূচক বাড়লেও লেনদেনে কিছুটা ভাটা পড়েছে। এক্সচেঞ্জটির লেনদেন ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। দেশের অপর পুঁজিবাজারে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দরপতনের তালিকায় ছিল বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ফলে বাজারটিতে মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেনের পরিমাণও।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ডিএসইতে লেনদেন শুরু হওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে দাম কমার তালিকায় চলে আসে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ার কারণে লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ৭৮ পয়েন্ট কমে যায়। ফলে আবারও ঢালাও দরপতনের শঙ্কা পেয়ে বসে বিনিয়োগকারীদের।
কিন্তু লেনদেনের শেষ ঘণ্টায় এসে বাজারের চিত্র বদলে যায়। এক শ্রেণির বিনিয়োগকারী হঠাৎ শেয়ার কেনার আদেশ বাড়াতে থাকেন। ফলে দাম কমার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান বেরিয়ে আসে। এতে বড়ো পতন থেকে বেরিয়ে মূল্যসূচক বেড়েই দিনের লেনদেন শেষ হয়।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে সব খাত মিলে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ২৩৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টির। আর ৩৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
ভালো কোম্পানি বা ১০ শতাংশ অথবা তার বেশি লভ্যাংশ দেওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১৩৮টি শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৫৭টির দাম কমেছে এবং ১৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। মাঝারি মানের বা ১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া ৫১টি কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে ১৭টির দাম কমেছে এবং ৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ না দেওয়ার কারণে ‘জেড’ গ্রুপে স্থান হওয়া কোম্পানিগুলোর মধ্যে ৪৭টির শেয়ারের দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৮টির এবং ১২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ৩৫টি মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে ১৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে ৮টির দাম কমেছে এবং ১০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪ হাজার ৭৩২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে ৯৮৫ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০ কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৮৬০ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
সবক’টি মূল্যসূচক বাড়লেও ডিএসইতে লেনদেন কমে ২০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে গেছে। বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ২৯৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৩৮৩ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। এ হিসেবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন কমেছে ৮৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
এদিনের লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে লাভেলো আইসক্রিমের শেয়ার। কোম্পানিটির ১৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা সিমটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ৯ কোটি ৩৪ লাখ টাকার। ৯ কোটি ২৮ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, ওরিয়ন ইনফিউশন, শাহজিবাজার পাওয়ার, সিটি ব্যাংক, বারাকা পতেঙ্গা পাওয়ার এবং এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ।
অপর বাজার সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৪৬ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৭টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮২টির এবং ১৭টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৭ কোটি ২২ লাখ টাকা।