ঢাকা মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

রোজার আগেই চিনির বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট বাড়ছে দাম

রোজার আগেই চিনির বাজারে সক্রিয় সিন্ডিকেট বাড়ছে দাম

চব্বিশের ৫ আগস্ট পরবর্তী নানামুখী চাপে লাগাতার দাম কমলেও চলতি সপ্তাহে হঠাৎ করেই চট্টগ্রামের খাতুনগঞ্জের পাইকারি বাজারে বাড়ছে চিনির দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে পাইকারি বাজারটিতে প্রতিমণ চিনির দাম বেড়েছে ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, সাদা চিনি আমদানি বন্ধ করে দেওয়ায় দেশে পরিশোধিত চিনির দাম বাড়ছে। আর কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছে, ডিসেম্বর মাসে মেশিন ওভারহোলিং করতে হয়। এজন্য পরিশোধন বন্ধ থাকায় সরবরাহে কিছুটা ঘাটতি সৃষ্টি হয়েছে।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের কার্যক্রমে প্রশাসন ব্যস্ত থাকার সুযোগে সক্রিয় হচ্ছে চিনির মিলার সিন্ডিকেট। পাশাপাশি রমজান সামনে রেখে পণ্যের দাম বাড়ানোর অপকৌশল হিসেবে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন ভোক্তাদের সংগঠন- কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)। খাতুনগঞ্জের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ২০২৪ সালের জুলাই মাসে পাইকারি বাজারে চিনির দাম ছিল মণপ্রতি চার হাজার ৪৪০ টাকা। একই বাজারে গত নভেম্বর মাসের শেষের দিকে সেই চিনির দাম মণপ্রতি তিন হাজার ২১০ টাকায় নেমে আসে। কিন্তু গত এক সপ্তাহ ধরে পাইকারি বাজারে হঠাৎ বাড়তে শুরু করেছে চিনির দাম। তবে খুচরা বাজারে এখনো এর প্রভাব পড়েনি।

দেশের চাহিদা মেটাতে প্রতি বছর প্রায় ৯৮ শতাংশের বেশি চিনি আমদানি করতে হয়। দেশে ব্যক্তিখাতের পাঁচ শিল্পগ্রুপ সিটি, মেঘনা, এস আলম, আবদুল মোনেম লিমিটেড ও দেশবন্ধু সুগার মিল অপরিশোধিত চিনি আমদানি করে। এর মধ্যে আবদুল মোনেম লিমিটেডের ইগলু ব্রান্ডের চিনির কলটি কিনে নেয় দেশের আরেক জায়ান্ট শিল্প গ্রুপ আবুল খায়ের গ্রুপ। এদিকে আমদানির পর নিজেদের মিলে পরিশোধন করে চিনি বাজারজাত করে মিলার কোম্পানিগুলো। এর মধ্যে দেশবন্ধু সুগার মিলে নানান জটিলতায় উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। পাশাপাশি হাসিনা সরকারের পতনের পর বেকায়দায় পড়লেও এখনো চিনির সরবরাহ দিয়ে আসছে এস আলম গ্রুপ। অতিসম্প্রতি এস আলম সুগারও চিনির সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে বলে জানিয়েছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা যায়, ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের ১ জুলাই থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৯ লাখ ৮৫ হাজার ৭৬০ টন চিনি আমদানি হয়। এর মধ্যে অপরিশোধিত চিনি রয়েছে ৯ লাখ ৩ হাজার ৭২ টন এবং পরিশোধিত সাদা চিনি ৮২ হাজার ৬৮৮ টন। অপরিশোধিত চিনির মধ্যে আবদুল মোনেম সুগার রিফাইনারি লিমিটেড ৯ হাজার ৬৬৯ টন, সিটি সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ ৩ লাখ ১৬ হাজার ২৩৫ ট, দেশবন্ধু সুগার মিলস লিমিটেড ৫ হাজার ৫০০ টন, মেঘনা সুগার রিফাইনারি লিমিটেড ৫ লাখ ৩ হাজার ৬২৩ টন এস আলম রিফাইন্ড সুগার ইন্ডাস্ট্রিজ ৬৭ হাজার ৬৩৮ টন এবং প্রাণ ডেইরি লিমিটেড ৪০৬ টন।

অপরিশোধিত চিনির পুরোটাই আমদানি হয় ব্রাজিল থেকে। সরকারি অনুমোদন নিয়ে গত অর্থবছরে রিফাইন্ড সাদা চিনি আমদানি করে কয়েকটি ব্যবসায়ী গ্রুপ। তাছাড়া কারখানার কাঁচামাল হিসেবেও রিফাইন্ড চিনি আমদানি হয়।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত