
জুলাই বিপ্লবে দেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর আর দেশে ফেরেননি সাকিব আল হাসান। এই অলরাউন্ডারের আশঙ্কা দেশে ফিরলে হয়রানীর শিকার হতে পারেন।
কারণ তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। সেই শঙ্কার মধ্যেই এবার ‘চেক ডিজঅনার’ এর মামলায় সাবেক এই সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। গতকাল রোববার ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জিয়াদুর রহমানের আদালত এই আদেশ দিয়েছে। শেয়ারবাজার কেলেঙ্কারি, খুনের মামলাসহ বেশ কয়েকটি মামলা আছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক সাকিব আল হাসানের বিরুদ্ধে, যিনি গত বছরের ৭ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত বিতর্কিত দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে মাগুরা থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। গণআন্দোলনে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার সময় তিনি ছিলেন দেশের বাইরে। এখনও আছেন দেশের বাইরে। এরইমধ্যে দেশে জব্দ করা হয়েছে তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট। এই প্রথম কোনও মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলো।
গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর সাকিব দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ খেলতে দেশে আসার শর্ত হিসাবে তার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলেছিলেন। কিন্তু তখন বিসিবি বলেছিল, নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়ার এখতিয়ার তাদের নেই। এরপর সাকিব আর দেশে আসেননি। এখন চেক প্রতারণার মামলায় পরোয়ানা জারি হওয়ায় দেশে ফিরলেই গ্রেফতার হতে পারেন এক সময়ের বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার। গত ১৫ ডিসেম্বর আইএফআইসি ব্যাংকের রিলেশনশিপ অফিসার সাহিবুর রহমান বাদী হয়ে সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান ক্রিকেটার সাকিবসহ চার জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলাটি করেন। অপর আসামিরা হলেন ফার্মের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গাজী শাহাগীর হোসাইন, ডিরেক্টর ইমদাদুল হক ও মালাইকার বেগম।
গত ১৮ ডিসেম্বর আদালত আসামিদের আদালতে হাজির হতে সমন জারি করে। সেদিন ফার্মের ডিরেক্টর ইমদাদুল হক ও মালাইকার বেগম আত্মসমর্পণ করে জামিন পান। সাকিব আল হাসান ও ফার্মের ম্যানেজিং ডিরেক্টর গাজী শাহাগীর হোসাইন আদালতে হাজির হননি। এজন্য আদালত তাদের দুইজনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। সংশ্লিষ্ট আদালত সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। মামলায় বলা হয়, সাকিব আল হাসান অ্যাগ্রো ফার্ম লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবে সাকিব আল হাসান দায়িত্ব পালন করছেন। কোম্পানিটির কার্যক্রম সাতক্ষীরায়।
কোম্পানিটি ২০১৭ সালে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে এক কোটি এবং টার্ম লোন হিসেবে দেড় কোটি টাকা বনানী শাখার আইএফআইসি ব্যাংক থেকে নেন। পরবর্তীতে ওয়ার্কিং ক্যাপিটাল হিসেবে নেয়া টাকা সময়মতো পরিশোধ না করায় ব্যাংকটি এই টাকা মেয়াদি লোনে পরিবর্তন করে। টাকা ফেরত চেয়ে কয়েক দফা নোটিশ দেয়ার পর কোম্পানিটি ব্যাংককে গত বছরের ৪ সেপ্টেম্বর ৪ কোটি ১৪ লাখ টাকার দুটি চেক দেয়। তবে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্টে যথেষ্ট টাকা না থাকায় চেক বাউন্স করে। পরে ঋণের টাকা ফেরত চেয়ে আইএফআইসি ব্যাংকের বনানী শাখা নেগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্ট অ্যাক্ট অনুযায়ী দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে লিগ্যাল নোটিশ পাঠায়। ওই নোটিশ পাঠানোর ৩০ দিন পার হলেও ঋণের টাকা ফেরত না পেয়ে আদালতে মামলাটি করেন আইএফআইসি ব্যাংকের রিলেশনশিপ অফিসার সাহিবুর রহমান।