জাতীয় দলের নির্বাচক হিসেবে হান্নান সরকারের পথচলার শুরুটা হয়েছিল গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে। নির্বাচক হিসেবে তার চাকরির মেয়াদ ছিল ২০২৬ সাল পর্যন্ত। কিন্তু কদিন আগেই জানা গিয়েছিল নির্বাচকের দায়িত্বে আর থাকতে চান না, জাতীয় দলের সাবেক এ ওপেনার। অবশেষে সহকারী নির্বাচকের দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়ালেন তিনি। গতকাল রোববার সকালে হান্নান সরকার নিজেই এই তথ্য জানিয়েছেন। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের প্রধান নাজমুল আবেদিন ফাহিমের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন তিনি, যা কার্যকর হবে এক মাস পর। হঠাৎ কেন জাতীয় দলের নির্বাচক পদ থেকে সরে দাঁড়ালেন হান্নান? তিনি বললেন একই কথা, ‘নির্বাচকের কাজটা উপভোগ করছিলাম আমি। তবে আবার ফিরে যেতে চাই কোচিংয়ে। কোচ হিসেবে হয়তো আরো বেশি কিছু দিতে পারব আমি। ডিপিএলের কয়েকটা ক্লাবের সঙ্গে কথা চলছে। দেখা যাক কী হয়।’
এর আগেও কোচিং পেশায় যুক্ত ছিলেন হান্নান। লেভেল-টু কোচিং কোর্সসম্পন্ন করা জাতীয় দলের সাবেক ওপেনার ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ, জাতীয় ক্রিকেট লিগ, বাংলাদেশ ক্রিকেট লিগ এবং বিপিএলেও কোচিং করিয়েছেন। কোচিং ছেড়ে বয়সভিত্তিক ক্রিকেটের নির্বাচক হয়েছিলেন। বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল যেবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল, সেই দলের নির্বাচক ছিলেন তিনি। সেখান থেকে প্রমোশন পেয়ে জাতীয় ক্রিকেট লিগের নির্বাচক হিসেবে যোগ দেন গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে।
দায়িত্ব নেয়ার এক বছরের মধ্যে চাকরি ছাড়লেন হান্নান। তিনি বলেন, ‘কাজটা (নির্বাচক) উপভোগ্য, সম্মানজনক হলেও আমি আসলে ঠিকঠাক কুলিয়ে উঠতে পারছিলাম না। যখন নিয়োগ পেয়েছিলাম তখন যেভাবে কথা হয়েছিল সেভাবে আর পরবর্তীতে আগায়নি। এখন যেই বেতনটা পাচ্ছি সেটা আসলে কম এবং চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ। তাই আমার মনে হয়েছে এখান থেকে সরে যাওয়াটা ভালো।’ সাবেক এই ক্রিকেটার বলেন, ‘ক্রিকেটের মানুষ। আমাকে ক্রিকেট নিয়েই থাকতে হবে। আমি কোচিং পেশায় আবার ফিরতে চাই। আমি যেভাবে খেলা ছাড়ার পর নিজের ক্যারিয়ার তৈরি করেছিলাম সেটাই আবার করতে চাই। আমার সেই সুযোগও রয়েছে এবং কাজটা আমার জন্য আরো সহজ হবে।’
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে কথা বলতে বলতেই হান্নান স্বপ্নের কথাও বললেন, ‘সালাউদ্দিন ভাই তো এখন জাতীয় দলের কোচ হয়েছেন। এটা খুবই ভালো দিক এবং আমাদের জন্য পথ প্রদর্শক। বলতে পারেন আমার কোচিংয়ে ফেরার বাড়তি প্রেরণাও পেয়েছি। আমারও ইচ্ছা জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে একদিন যুক্ত হবো।’ চুক্তিভিত্তিক নিয়োগে হান্নান এখন ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা করে বেতন পাচ্ছিলেন। প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু ২ লাখ টাকার কাছাকাছি বেতন পান। আরেক সহকারী আব্দুর রাজ্জাক বেতন পাচ্ছেন হান্নান সরকারের মতোই।
জানা গেছে, কিছুদিনের ভেতরেই হান্নান নামকরা গ্রুপের ক্রিকেট একাডেমিতে কোচ হিসেবে কাজ শুরু করতে যাচ্ছেন। সেখানেই আপাতত নিজের পূর্ণ মনোযোগ রাখবেন।