বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) একাদশ আসরে অপ্রতিরোধ্য গতিতে ছুটে চলছিল রংপুর রাইডার্স। রীতিমতো উড়তে থাকা নুরুল ইসলাম সোহানদের লাগাম টানতে পারছিল না কোনো দলই। টানা আট জয়ে সবার প্লে অফ নিশ্চিত করেছিল তিস্তা পাড়ের দলটি। তার পরই যেন খেই হারিয়ে ফেলে মিকি আর্থারের শিষ্যরা। যে কারণে তিন নম্বরে নেমে এলিমিনেটর রাউন্ড খেলতে হয়েছে হয় তাদের। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে খেলার আগে তিন বিদেশি তারকা ক্রিকেটারকে উড়িয়ে এনেছিল গতবারের রার্নাসআপরা। কিন্তু আন্দ্রে রাসেল, টিম ডেভিড, জেমস ভিনসরা বিদায় ঠেকাতে ব্যর্থ হলেন। ফলে টানা পাঁচ হারে এবার টুর্নামেন্ট থেকেই বিদায় হলো রংপুর রাইডার্সকে। দারুণ এক জয়ে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের টিকিট নিশ্চিত করেছে খুলনা টাইগার্স। গতকাল সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) এলিমিনেটর রাউন্ডের ম্যাচে রংপুরকে ৯ উইকেটে হারিয়েছে খুলনা। প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ১৬.৫ ওভারে মাত্র ৮৫ রানে গুটিয়ে যায় রংপুর। জবাবে ৫৮ বল হাতে রেখেই জয় নিশ্চিত করে মেহেদী হাসান মিরাজের দল। বিপিএলে এরআগে এলিমিনেটর রাউন্ডে এতো অল্প রানে অলআউট হয়নি আর কোনো দল। টস জিতে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরু থেকেই নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারাতে থাকে রংপুর। কোনো বল না খেলে সৌম্য সরকার রানআউট হন ভিন্সের ভুল কলে সাড়া দিয়ে। নিজেও কিছু করতে পারেননি ভিন্স। সাত বলে ১ রান করে আউট হয়েছেন বোলার নাসুম আহমেদের হাতে ক্যাচ দিয়ে। ব্যাটিং লাইনআপ কিছুটা উলটপালট করে শেখ মেহেদী হাসান ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে উপরে নামিয়ে। যথাক্রমে চার ও পাঁচ নম্বরে নামেন এ দুই ব্যাটার। কিন্তু দুইজনই ব্যর্থ। পাঁচ বলে ১ রান করা মেহেদী বোল্ড হয়েছেন নাসুমের বলে। আর বাউন্ডারি মেরে শুরু করা সাইফউদ্দিন আট বলে ৮ করে হাসান মাহমুদের বলে পড়েছেন এলবিডাব্লিউর ফাঁদে। মাঝে মিরাজের শিকার হন সাইফ হাসান (৪)। এর পর অবশ্য অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা চালান। কিন্তু সঙ্গী হিসেবে পাননি কাউকে। আজই উড়িয়ে আনা দুই বিদেশি টিম ডেভিড ও আন্দ্রে রাসেল আউট হন যথাক্রমে ৭ ও ৪ রান করে। তাতে বেরিয়ে যায় দলটির লেজ। রাকিবুল মিরাজের বলে এলবিডাব্লিউর ফাঁদে পড়লে শেষ দেখতে শুরু করে দলটি। তবে ১০ নম্বর ব্যাটার আকিফ জাভেদ দলীয় পুঁজি কিছুটা লম্বা করেন। শেষ ব্যাটার নাহিদ রানার সঙ্গে গড়েন ৩৩ রানের জুটি। যেখানে ১৮ বলে ৪টি চার ও ২টি ছক্কায় নিজে খেলেন ৩২ রানের ইনিংস। যা দলটির ইনিংসের সর্বোচ্চও বটে। তবে পুঁজি বড় করার তাড়না উড়িয়ে মেরে শেষ ব্যাটার হিসেবে যখন আউট হন একশ রানও তখন বহু দূরে। খুলনার হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন দুই স্পিনার নাসুম ও মিরাজ। দুইজনই নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট। যা পেতে নাসুম খরচ করেছেন ১৬ রান ও মিরাজ ১০ রান। জেসন হোল্ডার ছাড়া বাকি বোলাররাও ভালো করেছেন। সাদামাটা লক্ষ্য তাড়ায় নেমে শুরুতে অধিনায়ক মিরাজকে হারায় খুলনা। আকিফের বলে বোল্ড হয়ে যান খালি হাতেই। তবে রংপুরের সাফল্য এইটুকুই। এর পর আলেক্স রসকে নিয়ে বাকি কাজ শেষ করেন আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ। ৬০ বলে অবিচ্ছিন্ন ৮৭ রানের জুটি গড়ে দলকে জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন এ দুই ব্যাটার। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৪৮ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন নাঈম। ৩৩ বলের ইনিংসটি সাজান ৩টি চার ও ৪টি ছক্কার সাহায্যে। ২৭ বলে ২৯ রান করে অপরাজিত থাকেন রস। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চারের মার।