ঢাকা মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫, ১০ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি

প্রস্তুতির ঘাটতিতেও সম্ভাবনা দেখছেন সিমন্স

প্রস্তুতির ঘাটতিতেও সম্ভাবনা দেখছেন সিমন্স

দুয়ারে কড়া নাড়ছে আরো একটি বৈশ্বিক টুর্নামেন্ট। চলছে ক্ষণগণনা। আর মাত্র কয়েক দিন বাদেই মাঠে গড়াবে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আসর। ১৯ ফেব্রুয়ারি পর্দা উঠলেও পরের দিন মিশন শুরু করবে লাল সবুজের প্রতিনিধিরা। নাজমুল হোসেন শান্তদের প্রথম প্রতিপক্ষ শক্তিশালী ভারত। গ্রুপের বাকি দুই প্রতিপক্ষ পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ড। আসন্ন এ টুর্নামেন্টের জন্য দীর্ঘ প্রস্তুতি নিতে পারেনি নাজমুল হোসেন শান্তরা। বিপিএলের ব্যস্ততায় খুব বেশি অনুশীলন করতে পারেনি জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা। তিন দিন ধরে অনুশীলন চলছে, দেশ ছাড়ার আগে আরো একদিন অনুশীলন করার সুযোগ পাচ্ছেন নাজমুল হোসেন শান্তর দল।

আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতের ফ্লাইটে দেশ ছাড়ার কথা বাংলাদেশ দলের। সব মিলিয়ে খুব ভালো প্রস্তুতি নেয়ার সুযোগ হচ্ছে না টাইগারদের। জাতীয় দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বলছেন বললেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য সেরা প্রস্তুতি হচ্ছে না বাংলাদেশের। তবে এই ক্যারিবিয়ান কোচ মনে করছেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে বাংলাদেশ দলের ভালো সম্ভাবনা আছে। গতকাল সোমবার মিরপুর শেরে বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গণমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে কথা বলেছেন তিনি। সিমন্স বলেন, ‘এই বিশ্বাস না থাকলে আমি এখানে থাকতাম না। আপনি যেকোনো টুর্নামেন্টেই যান না কেন, নিজের সেরা প্রস্তুতি নিয়ে নিজের সেরাটা খেলতে চাইবেন। আমি এটাই করতে চাই, প্রতিবার। ক্যারিবিয়ানে ওয়ানডে সিরিজ ভালো না হলেও আমরা শেষটা ভালো করেছি। আমি মনে করি আমাদের খুব ভালো সম্ভাবনা আছে, যদি সামর্থ্যরে সবটা দিতে পারি।’ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দুটি দলই শুধু ব্যতিক্রমণ্ড বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। বাংলাদেশ তো ওয়ানডের এই বৈশ্বিক আসরে খেলতে যাচ্ছে ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-টোয়েন্টির লম্বা আসর শেষে। ফিল সিমন্স মানছেন, প্রস্তুতি খুব আদর্শ হচ্ছে না দলের। তবে বাংলাদেশের প্রধান কোচের আশা, খেলার মধ্যেই থাকায় চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ছন্দ পেতে সমস্যা হবে না ক্রিকেটারদের।

বিপিএলের শেষ আর চ্যাম্পিয়নস ট্রফির শুরুর মাঝে বিরতি নেই দুই সপ্তাহও। টুর্নামেন্ট খেলতে যাওয়ার আগে শনিবার থেকে শুরু হয়েছে ৫ দিনের অনুশীলন ক্যাম্প। বিপিএল শেষ করে ছুটিতে থাকায় প্রথম তিন দিনেও যোগ দেননি স্কোয়াডের সব ক্রিকেটার। দেশ ছাড়ার আগে প্রস্তুতির ঘাটতি নিশ্চিতভাবেই রয়ে যাচ্ছে। ঘাটতি থাকছে ম্যাচ অনুশীলনেও। বাংলাদেশ সবশেষ ওয়ানডে খেলেছে প্রায় দুই মাস আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে। তাই ম্যাচ অনুশীলনে গ্রুপের প্রতিপক্ষ তিন দলের চেয়ে পিছিয়েই থাকছে তারা। প্রস্তুতির ঘাটতি মেনে নিয়ে সিমন্স শোনালেন আশার কথা। ‘আমি মানছি যে এটি সেরা প্রস্তুতি নয়। তবে একটা জিনিস আমি বলব যে, তারা খেলার মধ্যে ছিল এবং সাদা বলের ক্রিকেটই খেলছিল। যার মানে স্কিলের দিক থেকে তারা তীক্ষèই আছে। আমার মনে হয়, আগামী ৬-৭ দিনে ওদের মানসিকতা ৫০ ওভারের ক্রিকেটের দিকে আনতে হবে। স্কিল ওদের আছে, ওদেরকে পারফর্ম করতে দেখেছি আমরা। তাই এখন ৫০ ওভারের মানসিকতা আনাটাই মূল ব্যাপার।’

বিপিএলে ম্যাচ অনুশীলনের মধ্যে থাকলেও সেখানে খেলার মেজাজ ও ধরন পুরোপুরি ভিন্ন। এবার ওয়ানডে টুর্নামেন্টে খেলতে নামার আগে প্রস্তুতি পর্বে তাই ক্রিকেটারদের দুই বেলা ব্যাটিং ও বোলিং অনুশীলনের পরিকল্পনা নিয়েছে কোচিং প্যানেল। ‘হ্যাঁ, এটি (লম্বা ব্যাটিং-বোলিং সেশন) গুরুত্বপূর্ণ। যে কারণে সামনের কয়েক দিন আমাদের অনুশীলনের সেশন দ্বিগুণ করে দেয়া হয়েছে। যেখানে আমরা সকালে ব্যাটিং-বোলিং করব। পরে সন্ধ্যায় আলোর নিচেও একই। যাতে আমরা ৫০ ওভার ব্যাটিংয়ের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে পারি।’

এদিকে বিপিএলে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির দলে থাকা প্রায় ক্রিকেটার নিয়মিত ম্যাচ পেলেও শান্ত ছিলেন ডাগআউটে বসে। তার না খেলা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সিমন্সের সংবাদ সম্মেলনে, ‘সে খেলুক বা না খেলুক প্রতিদিনই কঠোর পরিশ্রম করেছে। সবার কাছ থেকে স্ট্রং মেন্টাল এটিটিউড প্রয়োজন। ৫০ ওভারের ম্যাচ তো হয়নি। সে অনেক ম্যাচ খেলতে পারেনি এটা ঠিক। তবে সে প্রস্তুতি নিয়েছে, সামনেও নিবে।’ শান্ত যখন ম্যাচ পায়নি, তখন পেসার নাহিদ রানা খেলেছেন টানা। এতে কোনো প্রভাব পড়বে কি না? সিমন্সের উত্তর, ‘গত কয়েক ম্যাচে ওকে একটু স্লো মনে হয়েছে। রানআপও একটু বেশি সাধারণ, স্বাভাবিকের চেয়ে কম। তারা তো আগেভাগে বিদায় নিয়েছে ফলে নাহিদ রানা একটু বিশ্রামও পেয়েছে। ক্যারিবিয়ানে যেমন গতি ছিল, রানআপ ছিল, গতকাল তাকে এমন ধারাল বলেই মনে হয়েছে।’

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি খেলতে আগামী বৃহস্পতিবার রাতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের উদ্দেশে রওনা হবে বাংলাদেশ। সেখানেও কয়েক দিন অনুশীলনের সুযোগ পাবেন ক্রিকেটাররা। দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামী ২০ ফেব্রুয়ারি ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টুর্নামেন্টে যাত্রা শুরু করবে বাংলাদেশ। এরপর পাকিস্তানের রাওয়ালপিন্ডি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২৪ তারিখ নিউজিল্যান্ড ও ২৭ তারিখ স্বাগতিকদের মুখোমুখি হবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। সিমন্স বললেন, আপাতত দুবাইয়ের ম্যাচের জন্যই প্রস্তুত হচ্ছেন ক্রিকেটাররা। ‘প্রাথমিক প্রস্তুতিটা দুবাইয়ের জন্য। আমার মতে, আমরা যদি মানসিক দিক থেকে উপযুক্ত স্থানে পৌঁছাতে পারি এবং দুবাইয়ের জন্য সঠিক কাজগুলো করতে পারি, তাহলে টুর্নামেন্টের শুরুটা ভালো করতে পারব। আর শুরুটা ভালো হলে... এরপর আমরা পাকিস্তানে যাব, সেখানে কন্ডিশন বাংলাদেশের মতোই।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত