ঢাকা রোববার, ২২ জুন ২০২৫, ৮ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

‘সাবিনারা চলে গেলে দেশের ফুটবলের অপূরণীয় ক্ষতি হবে’

‘সাবিনারা চলে গেলে দেশের ফুটবলের অপূরণীয় ক্ষতি হবে’

জাতীয় নারী ফুটবল দলের হেড কোচ পিটার বাটলারের বিপক্ষে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছে দলের সিনিয়র ১৮ নারী ফুটবলার। যারা সবাই সাফ চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা রেখেছেন। এই ব্রিট্রিশ কোচের পদত্যাগের দাবিতে অনড় তারা। বাফুফে সভাপতি যুক্তরাজ্য থেকে ফিরে ওইদিন রাতে ১৮ জন খেলোয়াড়ের প্রত্যেকের সঙ্গে দেখা করেন। তাদের প্রশিক্ষণে যোগ দেয়ার জন্য তাদের রাজি করানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু গত রোববার পর্যন্ত অনুশীলনে যোগ দিতে অস্বীকার করেছেন তারা। ফলে মীমাংসার আশা ক্ষীণ হয়ে যাওয়ায়, বাফুফে বর্তমানে বাটলারের অধীনে প্রশিক্ষণে থাকা ৩৭ জন খেলোয়াড়ের ওপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করছে। বয়কটকারী ১৮ জনকে বাদ দিয়ে তরুণ ৩৭ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজনের সঙ্গে নতুন চুক্তি প্রস্তুত করছে। আসন্ন আরব আমীতার সফরে বাটলারকে দিয়ে বিকল্প দল গড়ার কাজও শুরু করছে বাফুফে। সরাসরি বাদ না দিয়ে এমন পরিস্থিতি তৈরি করা হচ্ছে যাতে সাবিনারা স্বেচ্ছায় ক্যাম্প ছেড়ে চলে যান। তখন বাফুফে থেকে এভাবে বুলি আওড়াতে পারবেন, ‘তারা নিজেরাই চলে গেছে, আমরা তো তাদের যেতে বলিনি।’ যদি তাই হয়ে তাহলে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য অনেক বড় ক্ষতি হবে বলে মনে করেন জাতীয় পুরুষ দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল হক। সাফজয়ী এ গোলরক্ষক বলেন, ‘তারা (সিনিয়র ফুটবলাররা) যদি চলেই যায় এই ক্ষতি বাংলাদেশের ফুটবলে অপূরণীয়। এটা জাতির দুর্ভাগ্য হয়ে থাকবে এবং দায়ও বাফুফেকে নিতে হবে। বাফুফের অবশ্যই তাদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তারা যেন ফুটবলের সঙ্গেই থাকেন সেটা নিশ্চিত করাও বাফুফের দায়িত্ব।’

পুরুষ ফুটবলে বাংলাদেশ একবারই চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। ২০০৩ সালে ঢাকা সাফ ফুটবলে বাংলাদেশের চ্যাম্পিয়ন হওয়ার অন্যতম কারিগর গোলরক্ষক আমিনুল। সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের এই সদস্য সরাসরি সাবিনাদের পাশে দাঁড়ালেন, ‘একটি শিরোপা কত কষ্ট-পরিশ্রমে আসে এটা খেলোয়াড়রা জানে। আর সেখানে এই নারী দলের অনেকেই টানা দুই বার সাফ চ্যাম্পিয়ন দলের সদস্য। খেলোয়াড়-কোচ সমস্যা নাকি অনেকদিন থেকেই। খেলোয়াড়দের বিষয়টি প্রাধান্য দিয়ে অবশ্যই ফেডারেশনের উচিত ছিল বিষয়টি মীমাংসা করে এরপর কোচ ঠিক করা।’ জাতীয় দলের অন্যতম সিনিয়র ফুটবলার মাসুরা পারভীন কান্নাবিজড়িত কণ্ঠে সেটাই বলেছিলেন সাংবাদিকদের, ‘আমরা এতদিন ধরে কোচের কথা বলছি। ফেডারেশন কি একবারও ভাবল না মেয়েরা এত করে বলছে কোচ নেওয়ার আগে অন্তত একবার কথা বলি?’ উদ্ভুত পরিস্থিতির পেছনে জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক আমিনুল বাফুফের নারী উইংয়ের দায়ই বেশি দেখেন। তার দাবি, ‘ফেডারেশনের উচিত যাদের দায়িত্বের অবহেলায় এই সংকট তৈরি হয়েছে অতি সত্ত্বর তাদের অপসারণ করা।’ বাংলাদেশ নারী দল দক্ষিণ এশিয়ায় টানা দুইবার অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। দক্ষিণ এশিয়ার গণ্ডি পেরিয়ে এখন দৃষ্টি এশিয়ান পর্যায়ে। ঋতুপর্ণা, রুপ্না চাকমারা ফুটবল ছেড়ে দিলে সেটা সহসাই সম্ভব নয় বলে মনে করেন আমিনুল, ‘নারী ফুটবলে এশিয়ান পর্যায়ে অবস্থান করতে হলে দক্ষিণ এশিয়ার সেরাদের দ্বারাই সম্ভব। সেরা গোলরক্ষক ও টুর্নামেন্টসেরা বাংলাদেশের রুপ্না-ঋতুপর্ণা। এদের পক্ষেই সম্ভব এশিয়ান পর্যায়ে কিছু করা। নতুনদের সাফ পর্যায়ে প্রতিষ্ঠা পেতে সময় লাগবে, এরপর না এশিয়ান।’ ১৮ নারী ফুটবলারের সঙ্গে বাফুফের স্পষ্ট বিরোধ নেই। তাদের একটাই দাবি, ‘বাটলারের অধীনে অনুশীলন করব না।’ নারী ফুটবলাররা সভাপতির কাছে সমাধান চেয়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত