ঢাকা শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জেলায় জেলায় মাঠ খুঁজছে হকি ফেডারেশন

জেলায় জেলায় মাঠ খুঁজছে হকি ফেডারেশন

দেশে সম্ভাবনাময় যেসব খেলা রয়েছে, তারমধ্যে অন্যতম হলো হকি। বিশ্বকাপ পর্যায়ে খেলার সামর্থ্য রয়েছে বাংলাদেশ হকির। সামর্থ্য থাকলেও নানা কোন্দল ও সংকটে বরাবরই পেছনের দিকে হেঁটেছে খেলাটি। তৃণমূল থেকে খেলোয়াড় তুলে আনার জন্য নেই কোনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা। একমাত্র ভরসা বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। পাইপলাইনে পর্যাপ্ত খেলোয়াড় না থাকার অন্যতম কারণ ভেন্যু সংকট। এ সংকট কাটাতে মাঠের খোঁজে নামছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশন। সম্প্রতি একটি গণমাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন ফেডারেশনের নতুন অ্যাডহক কমিটি সাধারণ সম্পাদক লে. কর্নেল (অব.) রিয়াজুল হাসান। তিনি জানান, মাঠ সংকট নিয়ে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। কোন কোন জেলায় হকি খেলার মতো মাঠ আছে খোঁজ নিয়ে জানালে ক্রীড়া পরিষদ উদ্যোগ নেবে বলে ফেডারেশনকে জানিয়েছে।

রিয়াজুল হাসান (অব.) বলেন, ‘কয়েকটি জেলায় ভেন্যু পাওয়ার জন্য আমি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সাথে কথা বলেছি। তারা বলেছে, ফেডারেশনের অর্থায়নের ব্যবস্থা থাকলে কোন জেলায় কোন মাঠ চাই, সেটা জানাতে এবং সেটা যদি সরকারি জায়গা হয় তাহলে তারা দেয়ার উদ্যোগ নেবে। তখন ওই মাঠটা হকি ফেডারেশনের অধীনে দেয়া হবে। এক কথায় পছন্দ করে মাঠ আমরা ফেডারেশনের অধীনে নেওয়ার চেষ্টা করছি।’ যেসব জেলায় হকি খেলা হয় সেই জেলাগুলো ধরেই ফেডারেশন মাঠ খুঁজবে।

বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘আমরা বেশ কয়েকটি জেলার সাথে আলাপ করেছি। কোথায় মাঠ আছে, কেমন অবস্থা। আমরা ঈদের পর কয়েকটি জেলা পরিদর্শন করবো। প্রথম ধাপে আমরা রাজশাহী, দিনাজপুর ও চট্টগ্রামে যাবে মাঠ দেখতে। তারপর অন্যান্য জেলায়। আমরা মাঠ খুঁজে পেলে সেই নামগুলো জমা দেবো জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে।’ মাঠ খুঁজে পাওয়া গেলে সেগুলো কোন প্রক্রিয়ায় নিতে চান? এমন প্রশে।ন রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য লিজ হিসেবে ওই মাঠগুলো পেতে চাইবো। যেমন ১০ বছর, ১৫ বছর তা তার চেয়ে বেশি। এভাবে ৫ জেলায়ও যদি পাঁচটি মাঠ পাওয়া যায় তাহলে হকির উন্নয়নে কাজে লাগানো যাবে।’ দেশে ৬৪টি জেলা থাকলেও মাত্র কয়েকটি জেলায় খেলা হয়। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা জেলা খেলে। দিনাজপুর ও রংপুরেও মেয়েদের খেলা আছে কিছু। আমরা জেলা পর্যায়ে হকি খেলা বাড়াতে চাই। এ জন্যই জেলায় মাঠ দরকার। আবার হকির জন্য যে কোনো মাঠ হলেই হবে না, খেলা হয় এমন মাঠ প্রয়োজন।

এক সময় ফরিদপুরে হকি জমজমাট ছিল। এখন ওই জেলায় খেলাই হয় না। হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাক বলেন, ‘ফরিদপুরে বলতে গেলে টিম নেই। যশোরেও একই অবস্থা। এক সময় এই জেলাগুলো থেকে খেলোয়াড় আসতো। জেনেছি যে, ফরিদপুর চেষ্টা করছে। তারা তাদের অবস্থান থেকে চেষ্টা করুক। তারপর তো আসবে আমাদের সহায়তার কথা।’ হকির উন্নয়নের জন্য মাঠ একটা অন্যতম ফ্যাক্টর। আরো কি কিছু আছে যে ঘাটতিগুলো পূরণের জন্য সরকারের কাছে সহযোগিতা চাইবেন? জবাবে রিয়াজুল হাসান বলেন, ‘ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন কি কি লাগবে। আমরা এই জেলাগুলোকে মাথায় রেখে জাতীয় ক্রীড়া পরিষদকে একটা চাহিদাপত্র দিয়েছি। সেগুলো পেলে আমরা সব জেলায় ব্যয় করব, ফেডারেশনে কিছুই রাখবো না। সরকার থেকে আমরা যাই পাবো তা সমানভাবে জেলাগুলোকে দেবো।’ নারী হকি উন্নয়নের জন্য কোনো পরিকল্পনা আছে? ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদকের জবাব, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল এ মাসেই উইমেন্স ডেভেলপমেন্ট কাপ করার। এ মাসে করতে পারছি না তার কারণ হলো সকল শিক্ষা বোর্ড একটা টুর্নামেন্ট করছে। সেখানে হকিও আছে। যে মেয়েরা হকি খেলে তাদের অনেকেই স্কুলের। তাই এই ডেভেলপমেন্ট কাপ মার্চে করবো। ওই সময় রোজা থাকবে। অনেকে রমজানের বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। তবে মেয়েদের খেলা বলে আমরা সকাল থেকে শুরু করে ২টার মধ্যে শেষ করে দিতে পারবো। ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের খেলায় তুলনামূলক চাপ কম থাকে।’ দেশের হকি তো আগের মতো নেই। আপনি কি সেটা অনুভব করেন?

এ প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘অবশ্যই করি। দেখেন হকি দেশে এমন একটা খেলা ছিল, যেটা বাংলাদেশে নাম্বার টু ছিল। আমরা যখন খেলতাম, তখন গ্যালারি ভরা থাকতো। পুরোনো ছবি দেখলে অনেকে অবাক হয়ে যান- এত মানুষ হতো? যদি বলি হকিকে দ্রুত সে পর্যায়ে নিয়ে যাবো, সেটা ভুল। আমাদের প্রসেসটা শুরু করতে হবে। একটা পুরোনো ঘরের খুঁটি আগে মজবুত করতে হয়। আমরা সেটাই করার চেষ্টা করছি। খুঁটি মজবুত হলো অন্যসব রিপয়ারিং করা সহজ হবে। হকি খেলার খুঁটি হলো জেলা ও ক্লাবগুলো।’

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত