কোচিং ক্যারিয়ারে যেখানে গেছেন, সেখানেই দুই হাত ভরে সাফল্য পেয়েছেন পেপ গার্দিওলা। বছরের পর বছর ধরে চমৎকার সব প্রাপ্তিতে ভরপুর স্প্যানিশ এই কোচের অর্জনের ভাণ্ডার। ম্যানচেস্টার সিটির হয়ে চলতি মৌসুমটা অবশ্য বেজায় খারাপ কাটছে তার। মৌসুমের শেষ পর্যায়ে এসে নিজেও অকপটে সেটা মেনে নিলেন তিনি। ২০১৬ সালে দায়িত্ব নেওয়া গার্দিওলার হাত ধরে কেবলই উন্নতির ধারায় ছুটেছে ম্যানচেস্টার সিটি। ছয়টি প্রিমিয়ার লিগ ও একটি চ্যাম্পিয়ন্স লিগসহ জিতেছে অনেক শিরোপা। গত চার বছরে দলটি যেন অপ্রতিরোধ্যই হয়ে উঠেছিল। এই সময়ে টানা চারবার প্রিমিয়ার লিগের মুকুট ধরে রাখে তারা, ২০২৩ সালে পায় ক্লাবের ইতিহাসে প্রথমবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ শিরোপার স্বাদ। তবে চলতি মৌসুমে সেই মানের পারফরম্যান্সের ধারেকাছে যেতে পারেনি দলটি।
লিগ কাপের শুরুতেই বিদায় নেওয়ার পর, প্রিমিয়ার লিগ শিরোপা ধরে রাখার অভিযান থেকেও অনেক আগে ছিটকে পড়ে তারা। এরপর চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ভীষণ ভোগান্তির যাত্রায় শেষ ষোলোর প্লে-অফে থামে তাদের পথচলা। টানা বর্ণহীন পারফরম্যান্সের পর সাম্প্রতিক সময়ে কিছুটা ছন্দে ফিরতে দেখা গেছে সিটিকে। এতে অন্তত একটি শিরোপা জিতে মৌসুম শেষ করার সম্ভাবনা জেগেছে তাদের। সেই সঙ্গে লিগ টেবিলে শীর্ষ পাঁচে থেকে আগামী মৌসুমের চ্যাম্পিয়ন্স লিগে জায়গা করে নেওয়ার লক্ষ্যেও আছে তারা। তারপরও, ১৭ বছরের ক্যারিয়ারে পূর্বে বার্সেলোনা ও বায়ার্ন মিউনিখকেও কোচিং করানো গার্দিওলার কাছে এটাই সবচেয়ে কঠিন মৌসুম। ‘নিশ্চিতভাবেই (আমার ক্যারিয়ারে) এটা সবচেয়ে কঠিন মৌসুম। মৌসুমজুড়ে খুব ভুগতে হয়েছে। অনেক বেশি। জয় না পেলে মানসিক দিক থেকে সবকিছু আরও কঠিন হয়ে পড়ে, লড়াইয়ের প্রস্তুতি নেওয়াসহ সবকিছুই। তুলনামূলক অনেক কঠিন সময় কেটেছে এবার। আগের মৌসুমগুলোয় যখন আমরা শিরোপার জন্য লড়েছি, তার চেয়েও এবার সবকিছু অনেক কঠিন কেটেছে।’
প্রিমিয়ার লিগে ৩৫ ম্যাচে ৬৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে থাকা সিটি পরের ম্যাচে আগামী শনিবার সাউথ্যাম্পটনের মাঠে খেলবে। এরপর গুয়ার্দিওলার দল আগামী শনিবার এফএ কাপের ফাইনালে ক্রিস্টাল প্যালেসের মুখোমুখি হবে। সিটির সঙ্গে গার্দিওলার ২০২৭ সাল পর্যন্ত চুক্তির মেয়াদ আছে। তিন দেশে ১২টি লিগ শিরোপা জয়ী এবং তিনবার চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফির স্বাদ পেয়েছেন তিনি। সেই সঙ্গে অন্যান্য অনেক ট্রফি তো আছেই। তবে তার ক্ষুধা যে এখনও এতটুকু কমেনি, তার পরের কথাতেই স্পষ্ট হলো। ‘সবসময়ই আমাদের নিজেদেরকে প্রমাণ করতে হয়। যখন খেলোয়াড়দের বলতে শুনি যে, ক্যারিয়ারে আমরা যা করেছি তাতে আমাদের প্রমাণ করার আর কিছু নেই। কথাটা পুরোপুরি ভুল। তাদের অবসর নিয়ে নেয়া উচিত।’