আসন্ন ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জের ৩৭টি তৈরি পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের বেতন ও ঈদ বোনাস সময়মতো পরিশোধ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে ২৯টি কারখানা প্রিমিয়ার ব্যাংকের লেনদেন বন্ধ থাকায় বিশেষভাবে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। বাকি ৮টি কারখানা অন্যান্য প্রশাসনিক ও আর্থিক জটিলতার কারণে সংকটে পড়েছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি নির্দেশনার ফলে প্রিমিয়ার ব্যাংকের সব ধরনের গ্রাহক লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ রয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে ওই ব্যাংকের অধীনস্থ ২৯টি গার্মেন্টস কারখানায়, যারা মূলত এই ব্যাংকের মাধ্যমে শ্রমিকদের বেতন ও বোনাস পরিশোধ করে থাকে।
এ অবস্থায় তৈরি পোশাক মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরগুলো শ্রমিকদের প্রাপ্য নিশ্চিতে একযোগে কাজ করছে বলে জানা গেছে।
বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম জানান, ঝুঁকিপূর্ণ কারখানাগুলোর মালিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা হচ্ছে, যাতে তারা সময়মতো শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধে প্রস্তুতি নিতে পারেন। তিনি আরও বলেন, এ বিষয়ে অর্থ ও শ্রম উপদেষ্টা, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোকে চিঠি দেওয়া হলেও এখনও বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো নির্দিষ্ট পদক্ষেপের ঘোষণা আসেনি।
এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় গত রোববার নারায়ণগঞ্জের চাষাড়ায় বিকেএমইএর প্রধান কার্যালয়ে একটি যৌথ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় জেলা প্রশাসন, শ্রম অধিদপ্তর, সেনাবাহিনী, ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশসহ বিভিন্ন অংশীজনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। সভায় গার্মেন্টস মালিকরা অভিযোগ করেন, কিছু শ্রমিক নেতা নানা ইস্যুতে শ্রমিকদের উস্কে দিয়ে অস্থিতিশীলতা তৈরি করতে চায়, যা পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে।
নারায়ণগঞ্জ ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশের পুলিশ সুপার ও অতিরিক্ত ডিআইজি আসাদুজ্জামান জানান, ঈদ সামনে রেখে ৩৭টি কারখানাকে নজরদারির আওতায় আনা হয়েছে। তিনি বলেন, সম্ভাব্য শ্রমিক অসন্তোষ প্রতিরোধ এবং নির্ধারিত সময়ে বেতন-বোনাস পরিশোধ নিশ্চিত করতে গোয়েন্দা তৎপরতা বাড়ানো হয়েছে। সেইসঙ্গে সব পক্ষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানান তিনি।
আবা/সজল
