জলবায়ু ও পরিবেশ গবেষক ডা. মো. রোকনুজ্জামান অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তদের কাছ থেকে প্রাণনাশের হুমকি পেয়েছেন। এ ঘটনায় তিনি সাতক্ষীরার দেবহাটা থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন (জিডি নং- ৫৪৭)।
জিডিতে বলা হয়, ১০ জুন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে অজ্ঞাত ব্যক্তি তাঁর বাড়ির সামনে একটি সাদা খামে রাখা হুমকিসূচক চিরকুট রেখে যায়। চিরকুটে লেখা ছিল: “জলবায়ু নিয়ে লেখালেখি বন্ধ করো। না হলে মৃত্যুর চেয়েও ভয়ংকর পরিণতি তোমার জন্য অপেক্ষা করছে।”
ডা. মো. রোকনুজ্জামান পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের DVM প্রোগ্রামের চূড়ান্ত বর্ষের ছাত্র। তিনি Amnesty International, EarthDay.Org ও Red Crescent Society–র সক্রিয় সদস্য এবং দেশ ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনের বিভিন্ন ফোরামে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন।
সম্প্রতি তিনি থাইল্যান্ডের মহাসরাখাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আমন্ত্রণে একাডেমিক সফর শেষে দেশে ফেরেন। চলতি সালের ১১ ফেব্রুয়ারি জাতীয় দৈনিক Daily Sun পত্রিকায় প্রকাশিত “Climate Change and Biodiversity: A Growing Global Concern” শীর্ষক তাঁর প্রবন্ধে শিল্পায়ন, পরিবেশ বিনাশ ও রাজনৈতিক নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে স্পষ্ট সমালোচনা করেছিলেন তিনি।
ধারণা করা হচ্ছে, ফোন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও ডাকযোগে দেওয়া হুমকিগুলো তাঁর পরিবেশ ও জলবায়ু নিয়ে লেখা ও কার্যক্রমকে কেন্দ্র করেই এসেছে।
ডা. রোকনুজ্জামানের বড় ভাই সরদার হাসান ইলিয়াস তানিম একজন মানবাধিকারকর্মী ও সাংবাদিক, যিনি ২০১১ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে সন্ত্রাসী হামলার শিকার হন। ওই ঘটনার মামলা ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত চলমান ছিল এবং মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপ-উপাচার্য ও ছাত্রলীগের ৯ নেতা আসামিতে পরিণত হন। মামলাটি দায়ের করার পর পরিবারের সদস্যরা নতুন করে হুমকিতে পড়েন।
তানিম ২০২৩ সালে শেখ হাসিনার শাসনামলে একটি প্রভাবশালী গ্রুপ ও বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থার চাপের মুখে দেশ ছেড়ে যেতে বাধ্য হন। অপর দিকে ২০১৩ সালে অপর ভাই মাসুম বিল্লাহ ক্রসফায়ারের শিকার হন এবং ২০২৪ সালের ‘জুলাই বিপ্লব’ চলাকালে যৌথ বাহিনী গ্রেপ্তার করে ডা. রোকনুজ্জামানকে।
দেবহাটা থানার ওসি গোলাম কিবরিয়া হাসান বলেন, “বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করা হচ্ছে। সাধারণ ডায়েরির ভিত্তিতে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”