অনলাইন সংস্করণ
১৮:৪৭, ২৯ মে, ২০২৫
যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রেক্ষিতে দেশটির সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে তুলা ও জ্বালানির মতো পণ্য আমদানির প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ। এই প্রস্তাবকে ভিত্তি করেই ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক আলোচনায় যেতে চায় ঢাকা। বৃহস্পতিবার (২৯ মে) জাপানে অনুষ্ঠিত নিক্কেই এশিয়া সম্মেলনের ফাঁকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
ড. ইউনূস জানান, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেহেতু বৈদেশিক বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে চান, তাই বাংলাদেশ প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা ও জ্বালানি আমদানি বাড়ানোর। এভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য স্থাপনের পাশাপাশি অন্য দেশ থেকে এসব পণ্য কেনাও কমিয়ে আনা হবে।
বর্তমানে বাংলাদেশ বছরে ৭.৯ বিলিয়ন ডলারের তুলা আমদানি করে, যার একটি বড় অংশ আসে ভারত ও মধ্য এশিয়ার দেশগুলো থেকে। তবে এ খাতে যুক্তরাষ্ট্রকে অগ্রাধিকার দেওয়ার চিন্তা করছে ঢাকা। চলতি অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ৩৬১ মিলিয়ন ডলারের তুলা আমদানি করেছে বাংলাদেশ, যা দেশের মোট আমদানির ১২.৫ শতাংশ।
জ্বালানির ক্ষেত্রেও আমদানির উৎসে বৈচিত্র্য আনার কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। তিনি জানান, যুক্তরাষ্ট্র থেকেও জ্বালানি তেল আমদানির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে মার্কিন তুলা উৎপাদনকারী লবির সঙ্গে বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে উঠেছে, যারা রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও সহযোগিতা করছেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আদালত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্তের কার্যকারিতা আপাতত স্থগিত করেছে। আদালতের মতে, বাণিজ্য নীতির বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাংবিধানিক ক্ষমতা কংগ্রেসের হাতে।
অর্থ পাচার সংক্রান্ত প্রশ্নে ড. ইউনূস দাবি করেন, শেখ হাসিনার শাসনামলে বাংলাদেশ থেকে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। এর বাইরে দেশে চিহ্নিত ১১ থেকে ১২ বিলিয়ন ডলার লুটপাটের অর্থ বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। তিনি জানান, এসব অর্থ শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং দরিদ্র উদ্যোক্তা উন্নয়নে ব্যয় করতে দুটি আলাদা ফান্ড গঠনের পরিকল্পনা রয়েছে।
পদত্যাগের গুঞ্জন সম্পর্কে জানতে চাইলে ড. ইউনূস জাপানের নিক্কেই এশিয়াকে বলেন, তিনি এখনই এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চান না, কারণ এতে দেশে ফিরে তার জন্য জটিলতা তৈরি হতে পারে।
