ঢাকা শনিবার, ২২ মার্চ ২০২৫, ৮ চৈত্র ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

মিশ্র খামারে স্বাবলম্বী

মিশ্র খামারে স্বাবলম্বী

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার পলি পলাশ গ্রামে গড়ে উঠেছে বিশাল কৃষি খামার। শিক্ষিত খামারি আমিনুর রহমান স্বাবলম্বী হয়েছেন এই খামার গড়ে। কর্মসংস্থান হয়েছে এলাকার ২৫ যুবকের।

বগুড়া শাজাহানপুর উপজেলার পলি পলাশ গ্রামের আমিনুর রহমান ২০০৬ সালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিষয়ে অনার্স-মাস্টার্স পাস করে চাকরি না করে নিজ গ্রাম (শাজাহানপুর-শেরপুর-ধুনট) উপজেলার সীমান্ত এলাকার এক নিভৃত পল্লীতে গড়ে তুলেছেন ‘ভিলেজ অর্গানিক এগ্রো খামার’ নামক এক বিশাল কৃষি খামার। প্রথমে সবজি, পুকুর ও গরু দিয়ে ছোট আকারে শুরু করেন। গরুর খাবারের জন্য পৈত্রিক কৃষি জমিসহ লীজকৃত জমিতে করেন উন্নত মানের ঘাসের চাষ। ২০১৬ সাল থেকে গরুর পাশাপাশি ছাগল, হাঁস মুরগি পালনও শুরু করেন। গড়ে তোলেন দেশি-বিদেশি জাতের কবুতরের খামার। বর্তমানে প্রায় এক হাজারের বেশি কবুতর রয়েছে। আর এসএফের তত্ত্বাবধায়নে ৭৫ ঘনফুট উৎপাদন ক্ষমতার বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করেন। এতে প্রায় ৪০টি চুলায় গ্যাস সরবরাহ করা হয়, এ উদ্যোক্তার সাফল্য দেখে এগিয়ে আসে রাজশাহী কৃষি উন্নয়ন ব্যাংক, তাকে সমর্থন করে প্রতিষ্ঠানটি। ঋণের অর্থ দিয়ে গরুর খামারের পাশাপাশি শুরু করেন ড্রাগন চাষ। পরিবারের অন্য সদস্যদের জমি লীজ নিয়ে প্রায় ১৫ বিঘা জমিতে ড্রাগন, উন্নত জাতের পেঁপে, ক্যাপসিকাম, শীতকালীনসবজি, কলার চাষ শুরু করেন, গড়ে তুলেছেন দেশি-বদেশি বিভিন্ন ফলজ বাগান। বন্যাপ্রবণ নিচু এলাকার জমি কিনে এবং লীজ নিয়ে পুকুর কেটে শুরু করেন মৎস্য চাষ। প্রায় পঁচিশ বিঘা জমির বিশাল পুকুরে পাবদা, টেংরার সাথে দেশি মাছ চাষ করেন। প্রথম দফায় মাছ বিক্রি করেছেন প্রায় ছয়শ’ মণ। বিক্রি মূল্য প্রায় ৬৫ লক্ষ। পরবর্তীতে বড় পুকুরের সাথে আরো দুটি ছোট পুকুরে ছোট/পোনা মাছ সংরক্ষণ করেন। পুকুরপাড়ে করেছিলেন কলার চাষ। গো-খাদ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় গরুর খামারের গরু বিক্রি করে এখন উন্নত জাতের হাঁসের চাষ করছেন। বর্তমানে প্রায় ২০০০ দুই হাজারের বেশী হাঁস আছে খামারে । আছে দেশি মুরগি প্রায় এক হাজার। ফলজ বাগান, মাছ, হাঁস-মুরগি চাষের জন্য প্রায় পঁচিশজন বেকার যুবকের সরাসরি কর্ম সংস্থান হয়েছে। প্রতিদিন অনেক শ্রমিক কাজ করে খামারে। ভবিষ্যতে এলাকার সাধারণ মানুষের কর্ম সংস্থান ও এলাকার উন্নয়নের জন্য বড় কিছু করার পরিকল্পনা রয়েছে আমিনুরের। সফল উদ্যোক্তা, খামারি আমিনুরের স্ত্রী বগুড়া বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাষক। আমিনুর রহমান বলেন, বর্তমানে এই খামারে ২৫ জন লোক স্থায়ীভাবে কাজ করে। এছাড়া প্রচুর দিনমজুর এখানে কাজ করার সুযোগ পায়। তিনি জানান, বছরে প্রায় পঞ্চাশ লক্ষ টাকা এই খামার থেকে আয় হয়। আগামীতে এখানে আরো প্রচুর লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে তিনি আশাবাদী।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত