জেলা চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পল্লীতে পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে। যার ফলে এ এলাকার ৩০০ বিঘা ফসলি জমি ডুবে থাকায় ব্যাপক ক্ষতিসাধন হচ্ছে এ এলাকার ফসলি জমির ফসলের। এ পানি নিষ্কাশনের বিষয়ে প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে না। জেলা চাঁদপুরের কচুয়া উপজেলার পল্লীর গোহাট উত্তর ইউনিয়নের নূরপুর গ্রামে প্রায় ৩০০ বিঘা কৃষি জমি পানির নিচে ডুবে আছে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় ঐ গ্রামের জমিগুলো পানিতে তলিয়ে থাকার কারণে কৃষকেরা ফসল উৎপাদন করতে পারছে না। এর মাঝেও অনেক কষ্ট করে ঐসব জমিতে ধানের চারা রোপন করলেও তা পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও থেমে থেমে আসা বৃষ্টির পানি জমে থাকার ফলে আগে থেকে রোপণকৃত ধানের চারাগুলো পানির নিচে ডুবে গিয়ে চপে নষ্ট হয়ে বিপাকে পড়ছেন ওই গ্রামের শতশত কৃষকরা। তাদের চোখের সামনেই নষ্ট হয়ে গেছে শত শত বিঘা জমির ধানের চারা। ফলে কৃষকের বুকে জমে থাকছে চাপা আর্তনাদ। তাদের দিকে তাকালে দেখা যায়, তাদের চোখে-মুখে ফসল হারানোর মলিন ছাপ।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, বর্ষা মৌসুমে উপজেলার নূরপুর গ্রামের বৃষ্টির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে দিয়েছে স্থানীয় প্রভাবশারী মহল। তারাঅপরিকল্পিতভাবে পুকুর খনন, যেখানে সেখানে যে যার মতো বাড়ি-ঘর নির্মাণ আর এলাকার বিভিন্ন ব্রিজ ও কালভার্টের মুখ বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে এলাকার শতশত একর কৃষি জমি জলাবদ্ধতার মধ্যে পড়ে সৃষ্টি হচ্ছে ফসলের ব্যাপক ক্ষতিসাধন।
গত বুধবার সরেজমিন দেখা গেছে, উপজেলার গোহাট ইউনিয়নের নূরপুর ৯নম্বর ওয়ার্ডের ৩০০ বিঘা কৃষি জমি রয়েছে। কৃষি জমির পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় জমিগুলো বর্তমান সময়ে পানির নিচে ডুবে আছে। জমির পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকার ফলে প্রায় তিন বছর ধরে ঐ গ্রামের কৃষকেরা তাদের জমিতে ফসল উৎপাদন করতে পাড়ছেন না। এর মাঝেও অন্যের কাছ থেকে ধার দেনা ও মনের আশা নিয়ে কষ্ট করে ঐসব জমিতে ধানের চারা রোপন করলেও রোপনকৃত চারাগুলো পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে তা পচে নষ্ট হচ্ছে। পানিবন্দি থাকার ফলে ঐ এলাকার আশপাশে বিভিন্ন প্রজাতির গাছও মারা যাচ্ছে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে একটু বৃষ্ট হলেই গ্রামের ভিতরে পানি ঢুকে দীর্ঘ সময় ধরে পানির নিচে তলিয়ে থাকে ঐসব এলাকার রাস্তাগুলো। এর ফলে কৃষকদের উৎপাদিত ধান, আলু ও অন্যান্য কৃষি পণ্য হাট-বাজারে নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয় পাড়ার কৃষকদের। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।
কৃষক জহিরুল ইসলাম, অলিউল্লাহ, সেলিম হোসেন, মহিন উদ্দিন, হানিফ ও সুমনসহ অনেকেই জানান, নূরপুর গ্রামে ফসলি মাঠের পানি নিষ্কাশনের জন্য সরকার কালভার্ট নির্মাণ করেছেন। স্থানীয় প্রভাবশালী আবুল বাশার সেই ব্রিজ ও কালভার্টের মুখে মাটি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার পর থেকে এলাকার কৃষি জমিগুলো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়ে পড়েছে।
কচুয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মেজবাহ উদ্দিন বলেন, পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকা ও জলাবদ্ধতায় কৃষকের সমস্যাটি আপনাদের মাধ্যমে জানতে পারলাম। আমি ঘটনাস্থলে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা ও সরকারি কালভার্ট বন্ধ করার বিষয়টি পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।