ঢাকা সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

জুলাই শহিদদের স্মরণে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

জুলাই শহিদদের স্মরণে সারা দেশে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি

জুলাই অভ্যুত্থানের শহিদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে ‘এক শহিদ, এক বৃক্ষ’ কর্মসূচি পালিত হয়েছে সারা দেশে। প্রতিজন শহিদের সম্মানে একটি করে বৃক্ষরোপণ করা হবে। গতকাল শনিবার জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করে ৬৪ জেলায় এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে বন অধিদপ্তর।

কুড়িগ্রাম : জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জুলাই শহিদের স্মরণে বৃক্ষ রোপণ করে এ কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়। সেই সঙ্গে জেলা শহরস্থ কলেজ মোড়ের পার্শ্ববর্তী স্থানে ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি স্তম্ভ’ স্থাপন করা হয়। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ও জুলাই স্তম্ভের সূচনা করেন জেলা প্রশাসক নুসরাত সুলতানা। অনুষ্টানে অন্যান্যের মধ্যে অংশ নেন- জেলা পুলিশ সুপার মাহফুজুর রহমান, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক মোস্তাফিজুর রহমান, সদস্য সচিব সোহেল হোসনাইন কায়কোবাদ, ১নং যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক শফিকুল ইসলাম বেবু, যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যাপক হাসিবুর রহমান হাসিব, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা সমন্বয় নাহিদ ইসলাম প্রমুখ।

শরীয়তপুর : জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে শরীয়তপুরের ১৪ শহিদদের স্মৃতি সংরক্ষণে এক শহিদ এক বৃক্ষ কর্মসূচির আওতায় ১৪টি নিমগাছ রোপণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসন, বন অধিদপ্তর ও শরীয়তপুর জুলাই শহিদ স্মৃতি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে শরীয়তপুর কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বরে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। শহিদদের স্মৃতি সংরক্ষণ বৃক্ষরোপণ ও দোয়া অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- পুলিশ সুপার নজরুল ইসলাম, জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম, উপ-পরিচালক স্থানীয় সরকার ওয়াহিদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আসলাম হোসাইন, সহকারী বন সংরক্ষক ফরিদপুর মোস্তফা আল হোসাইন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন শরীয়তপুরের আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির, যুগ্ম আহ্বায়ক জাকির হোসেন মিন্টু (আদর) ও শহিদ মামুনের মা।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক তাহসিনা বেগম বলেন, জুলাই-আগস্ট শহিদদের আত্মত্যাগ স্মরণে রাখতেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনায় সম্মিলিত এই উদ্যোগ। শরীয়তপুর শহিদ মিনার প্রাঙ্গণে যে ১৪টি নিমগাছ রোপণ করা হলো এর মাধ্যমে অভ্যুত্থানে শহিদদের চেতনা আমাদের মাঝে সদা জাগ্রত থাকবে।

কুষ্টিয়া : শহিদ আবরার ফাহাদ স্টেডিয়ামে অবস্থিত ‘জুলাই শহিদ স্মৃতি স্তম্ভ’ প্রাঙ্গণে এই ব্যতিক্রমধর্মী বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির আয়োজন করে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন ও সামাজিক বন বিভাগ।

কর্মসূচির শুরুতে জুলাই আন্দোলনে শহিদ ১৫ জন সাহসী সন্তানের স্মরণে ১৫টি গাছের চারা রোপণ করেন কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন- কুষ্টিয়া পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোকনুজ জামান, এনডিসি জাহিদ হাসান, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আরিফুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট আফিয়া মাসুমা, কুষ্টিয়া বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল আলম, কুষ্টিয়া জেলা ক্রীড়া অফিসার তানভীর হোসেন, জেলা তথ্য অফিসার আমিনুল ইসলাম, কুষ্টিয়া জেলা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি মোহাম্মদ আব্দুল্লাহসহ কুষ্টিয়া জেলা বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, ২৪’র জুলাই আন্দোলনে অংশগ্রহনকারী যোদ্ধা, আহত যোদ্ধা ও শহিদ পরিবারের সদস্যরা। গাছের চারা রোপণ শেষে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক বক্তব্যে বলেন, জুলাই আন্দোলনের শহিদদের ত্যাগ জাতির ইতিহাসে অনন্তকাল উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। তাদের স্মৃতিকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে ছড়িয়ে দিতে এই বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, এটি একটি প্রতীকী পদক্ষেপ।

দিনাজপুর : ঐতিহাসিক গোড়-এ-শহিদ বড় ময়দানে জেলা প্রশাসন ও সামাজিক বন বিভাগ দিনাজপুরের আয়োজনে বৃক্ষরোপণ অভিযান এবং বৃক্ষমেলার এর উদ্বোধন করা হয়। জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর থেকে বর্ণাঢ্য র‌্যালী শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বড়মাঠে মেলা মঞ্চে ফিতা কেটে ও বেলুন-ফেস্টুন উড়িয়ে সপ্তাহব্যাপী বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন করেন ও প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম। দিনাজপুর জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোখলেছুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা পুলিশ সুপার মারফাত হোসাইন।

জয়পুরহাট : জেলা প্রশাসন ও বন বিভাগের আয়োজনে শহরের জয়পুরহাট সরকারি কলেজ প্রাঙ্গণে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) আফরোজা আকতার চৌধুরী। ৪ জন শহিদের নামে ৪টি গাছ রোপণ করা হয়। নজিবুল সরকার বিশাল এর নামে নিম গাছ, রিতা আক্তারের নামে বকুল গাছ, মেহেদী হাসান এর নামে জলপাই গাছ এবং মিনহাজ হোসেনের নামে বকুল গাছ রোপণ করা হয়েছে। জেলা প্রশাসক আফরোজা আকতার চৌধুরী বলেন, জুলাই অভ্যুত্থানে জয়পুরহাটে ৪ জন শহিদ হয়েছেন। তাদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে সারা দেশের ন্যায় জেলায় দেশীয়, ফলদ, বনজ ও ঔষধী গাছ রোপণ করা হয়েছে। তিনি বলেন, প্রতিটি গাছের সঙ্গে আছে জুলাই শহিদদের স্মৃতিফলক। সেখানে শহিদদের পরিচয় দেওয়া রয়েছে। পাশাপাশি ফলকের সঙ্গে একটি কিউআর কোড রয়েছে। এটি স্ক্যান করলে নির্দিষ্ট শহিদের জুলাই অভ্যুত্থানে ভূমিকা উঠে আসবে।

এসব বৃক্ষ কালের সাক্ষী হিসেবে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে অভ্যুত্থানের বার্তা পৌঁছে দিবে। এসময় উপস্থিত ছিলেন- জেলা পরিষদের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার মোহাম্মদ রায়হান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বিপুল কুমার, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক রাহেলা পারভীন, সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাশেদুল ইসলাম, কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামিমা আক্তার জাহান, পাঁচবিবি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রোমানা রিয়াজ, ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসিফ আল জিনাত, এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী ওমর আলী বাবু, জেলা প্রশাসনের সহকারী কমিশনার আব্দুল্লাহ আল মাহবুব, জয়পুরহাট প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা, জয়পুরহাট ও সামাজিক বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুল হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যুগ্ম সদস্য সচিব নিয়ামুর রহমান নিবিড়, শহিদ বিশালের মা বুলবুলি খাতুনসহ শহিদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত