ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

হোসেনপুরে জলাবদ্ধতা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

হোসেনপুরে জলাবদ্ধতা ফসলের ব্যাপক ক্ষতি

গত কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার উত্তর সুরাটি গ্রামে পানের বরজ, মাছের ফিশারি, পোল্ট্রিসহ বহু ফসলের জমি পানিতে তলিয়ে যায় এবং ২০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েন। বৃষ্টি থেমে যাওয়ার পরেও ঐ জমি থেকে নামছে না পানি। ফলে কোটি টাকার পানের বরজ পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পানি প্রবাহের একমাত্র কালভার্ট মাটি দিয়ে ভরাট করায় পানি প্রবাহ বন্ধ রয়েছে। ফলে এঅঞ্চলের জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। তাই দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট জোরালো দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

স্থানীয়দের তথ্যমতে জানা যায়, জলাবদ্ধতায় হযরত মিয়ার পানের বরজ ২০ শতক, মতি মিয়ার ৩০ শতক, আজম মিয়ার ৫০ শতক, মজলু মিয়ার ৩০ শতক, মাহোন মিয়ার ৫০ শতক ও অন্যান্য চাষিদেরসহ ১০ একর পানের বরজ জলবদ্ধতায় নষ্ট হয়েছে। এতে প্রায় চাষিদের এক কোটি টাকার পান নষ্ট হয়েছে। এছাড়াও পানিতে ডুবে বাছির মিয়ার ৪০ শতক, আলমগীর মিয়ার ২ একর, খোকন মিয়ার ৬০ শতক, মজলু মিয়ার ৭০ শতক, আরমান মিয়ার ৫০ শতকসহ ১০ একর ফিশারির মাছ চলে গেছে। এতেও কৃষকরা ৩ কোটি টাকার ক্ষতি সম্মুখীন হয়েছেন।

পানির জলাবদ্ধতায় ২০টা পরিবারে প্রায় অর্ধশত লোক গৃহবন্দি। কৃষকরা বলছেন, পানি পুরোপুরি টান দিলে পানের গাছগুলো মরে যাবে। আর এতে বহু কৃষকের ক্ষতি হবে প্রায় কয়েক কোটি টাকা। পানি একটি কালভার্টের নিচ দিয়ে সরুভাবে অপসারণ হতো। গত তিন বছর ধরে ওই কালভার্টের পশ্চিম পাশে প্রভাবশালীরা তাদের জায়গা ভরাটের কারণে পানি নামার রাস্তাটি ভরাট হয়ে যায়। তারপর থেকেই এই সমস্যায় পড়েছেন কৃষকরা। জরুরিভিত্তিতে পানি নিষ্কাশনের জন্য রতন মিয়া এলাকাবাসীর পক্ষে উপজেলা প্রশাসন বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন। কিন্তু এখনও প্রতিকার হয়নি। তাই দ্রুত সময়ে পানি নিষ্কাশনে ব্যবস্থা করার জন্য প্রশাসনের হস্তক্ষেপ চেয়েছেন তারা। অন্যথায় কৃষকরা আর্থিকভাবে চরম ক্ষতিতে পড়বেন।

কৃষক রতন মিয়া বলেন, দুই বছর আগেও এই জমিতে আমরা সব মৌসুমেই ফসল ফলাতে সক্ষম হয়েছি। কালভার্টের নিচ দিয়ে চলে যেত জমে থাকা পানি। সেই কালভার্টের পশ্চিম প্রভাবশালীরা গত কয়েক বছর ধরে জমিতে মাটি ভরাট করে দখল করে নিয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুম এলেই আমাদের এই বড় ফসলি জমির জমে যাওয়া পানি নামার কোনো জায়গা পাচ্ছে না। ফলে জমে থাকা পানির কারণে আমাদের উৎপাদিত ফসল সব নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বারবার বলা সত্ত্বেও প্রভাবশালী ও প্রশাসন নেয়নি কোনো ব্যবস্থা। যার কারণে প্রতিবছরই আমরা এভাবে ক্ষতির মুখে পড়ছি। প্রশাসনের হস্তক্ষেপে পুনরুদ্ধার করে ফসলি জমিতে জমে থাকা পানি যাতায়াতের ব্যবস্থা করার জন্য দাবি করছি।

স্থানীয়রা বলছেন, কালভার্টের পশ্চিম পাশে মাটি দিয়ে ভরাট জায়গা দিয়ে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করে দিলে এ অঞ্চলের পানের বরজগুলো বেঁচে যাবে এবং কৃষকের আবাদি জমিতে বিভিন্ন ফসল চাষাবাদ করতে পারবে।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাজাহান কবির বলেন, জলাবদ্ধতা বিষয়ে আমি অবগত নই। তবে উপজেলা প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা গ্রহণ করব বলে জানান তিনি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী নাহিদ ইভা জানান, উত্তর সুরাটি গ্রামের জলাবদ্ধার ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদকে দায়িত্ব দিয়েছি। অচিরেই সমাধান হবে বলে আশস্থ করেছেন তিনি।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত