ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

অটোমেটিক ভূমিসেবা চালু হলে ভোগান্তি কমে যাবে

ফেনীতে ভূমি উপদেষ্টা
অটোমেটিক ভূমিসেবা চালু হলে ভোগান্তি কমে যাবে

ভূমি মন্ত্রণালয় ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, শতকরা ৯০ ভাগ বিরোধের উৎস হচ্ছে ভূমি। এই বিরোধ মিমাংসা করতে গিয়ে সাধারণ মানুষকে নানা হয়রানি শিকার হতে হয়। তাই অটোমেটিক ভূমিসেবা সিস্টেম চালু করতে যাচ্ছে। এই সেবা পুরোপুরি চালু হলে জনভোগান্তি কমে যাবে।

তিনি বলেন, ডিজিটাল হয়ে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে- এটা বলা যাবে না। মেশিনের পেছনে যে মানুষটা কাজ করে, তিনি যদি ভুল করেন তাহলে জটিলতা কমবে কিভাবে! তাই সব নাগরিককে সচেতন ও নজরদারি রাখতে হবে। যারা ভালো কাজ করবে তাদের সাপোর্ট দেবেন, আর যারা করবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন। গতকাল বুধবার ফেনী জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে অটোমেটেড ভূমিসেবা সিস্টেমে তথ্য সন্নিবেশ ও সংশোধন সংক্রান্ত কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। একইদিন তিনি ফেনী সার্কিট হাউসে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। উপদেস্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, এখন চালের মান অনেক ভালো। ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা খোঁজ নিয়েছি, যে চাল বাজারে ৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয় তা ওএমএসে ৩০ টাকায় দেওয়া হচ্ছে, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচিতে সেই চাল ১৫ টাকায় পাবে। খারাপ মানের জিনিস কিন্তু দেওয়া হয় না। এক সময় রেশনের চাল রান্না করলে অনেক গন্ধ বের হতো। আগে চালের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ওষুধপত্র দেওয়া হতো, এখন সেদিন চলে গেছে।

আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ১৭ আগস্ট খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি শুরু হতে যাচ্ছে। গত বছর পর্যন্ত এ কর্মসূচিতে পাঁচ মাস ৫০ লাখ পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দেওয়া হতো। এবার এটি সম্প্রসারিত করে ৫৫ লাখ পরিবার ও ছয়মাস করা হয়েছে। তারমধ্যে আগস্ট থেকে নভেম্বর ও ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে চাল দেওয়া হবে। ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসে সাধারণত আমন ফসল আসে, সেজন্য মাঝে এ দুমাস বন্ধ থাকবে। এরইমধ্যে আমাদের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। এ কর্মসূচি সফল করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারাও সচেষ্ট রয়েছে।

উপদেষ্টা বলেন, বর্তমানে আমাদের ২২ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য মজুত রয়েছে। এরমধ্যে ২০ লাখ টনের বেশি রয়েছে চাল। আমন ফসল ভালো হলে আমদানিও খুব বেশি করতে হবে না।

ভূমি সংক্রান্ত খাতে প্রযুক্তি উত্তরোত্তর উন্নতি লাভ করেছে উল্লেখ করে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, বর্তমানে নামজারি, খতিয়ান ডিজিটাল মাধ্যমে করা যাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে মেশিন অথবা ওয়েবসাইট সঠিকভাবে কাজ না করার কারণে অসুবিধা হয়। তবে এটি বড় সমস্যা হবে বলে মনে করি না। প্রযুক্তি উত্তরোত্তর উন্নতি লাভ করছে। পাশাপাশি আমরাও ধীরে ধীরে সব কাজকর্ম উন্নততর করতে সক্ষম হব। সমাজে বিরোধ যেন কমে যায় সেজন্যই প্রযুক্তিনির্ভর জরিপ, খতিয়ান ও খাজনা প্রক্রিয়া করা হয়েছে। ধীরে ধীরে এই সংক্রান্ত বিরোধ কমে যাবে। পাশাপাশি জনসাধারণের মধ্যেও ভূমি সংক্রান্ত সচেতনতা বাড়বে বলে আশাবাদী।

বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এখানকার বাঁধগুলো মেরামতের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আশাকরি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসন কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আগামীতেও ক্ষতিগ্রস্তদের সব ধরনের সহায়তা করা হবে। যারা হতদরিদ্র তারা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির আওতায় আসবে। জেলা প্রশাসন, ভূমি ব্যবস্থাপনা অটোমেশন প্রকল্প, ভূমি মন্ত্রণালয় ও ইউএনডিপি বাংলাদেশ এর যৌথ আয়োজনে উক্ত কর্মশালায় আয়োজন করা হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড. মো. জিয়া উদ্দীন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (উন্নয়ন) এমদাদুল হক চৌধুরী, ফেনী জেলা প্রশাসক সাইফুল ইসলামসহ প্রশাসনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তারা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, শতকরা ৯০ ভাগ বিরোধের উৎস ভূমি। অটোমেটেড ভূমি সেবা সিস্টেম চালু হলে জনভোগান্তি কমে যাবে। তিনি বলেন, ডিজিটাল হয়ে গেলেই সব ঠিক হয়ে যাবে- এটা বলা যাবে না। মেশিনের পেছনে যে মানুষটা কাজ করে, তিনি যদি ভুল করেন তাহলে জটিলতা কমবে কিভাবে! তাই সব নাগরিককে সচেতন ও নজরদারি রাখতে হবে। যারা ভালো কাজ করবে তাদের সাপোর্ট দেবেন, আর যারা করবে না তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত