
ভোলায় ছোট ছোট শিল্প প্রতিষ্ঠান নিয়ে গড়ে উঠেছে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প (বিসিক)। এই নগরীতে বড় ধরনের কোনো শিল্প প্রতিষ্ঠান না থাকলেও স্বস্তিতে নেই ছোট ছোট উদ্যোক্তারা। খানা খন্দকে ভরা সড়ক আর নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভুগছেন ছোট ছোট ব্যবসায়ীরা। ভোলা শহরের পৌর চরনোয়াবাদ এলাকায় শিল্পনগরীর অভ্যন্তরীণ সড়কগুলো দীর্ঘদিন ধরে ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। বিসিকের মধ্যে খাদ্য গুদামের ২৫-৩০ টন ওজনের ভারী ট্রাক ও ট্রলি চলাচলে সড়কের এমন বেহাল দশা হয়েছে বলে দাবি করছেন ব্যবসায়ীরা।
বিসিক সূত্রে জানা যায়, গত দুই বছর আগে সড়কগুলো সংস্কার করে নতুন ভাবে তৈরি করা হয়েছে। খাদ্য অধিদপ্তর ভারী ট্রাক চলাচল করায় এতো অল্প সময়ে সড়কগুলো আবার ভেঙে খানা খন্দকে পরিণত হয়েছে। এই নিয়ে তাদের মধ্যে রয়েছে তীব্র ক্ষোভ। খাদ্য গুদাম অফিসের দাবি, দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে চাল ও গম নিয়ে আসা জাহাজগুলো আনলোড করার জন্য তাদের নির্দিষ্ট কোনো জেটি না থাকায় বিসিকের ভেতরের জেটি ব্যবহার করছেন। তবে, শিগগিরই অন্যাত্র জেটি নির্মাণের মাধ্যমে এই সমস্যার অবসান হবে।
তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, শিল্পনগরীতে ৬ থেকে ৭ টন ওজনের গাড়ি চলাচলের অনুমতি থাকলেও তা তোয়াক্কা না করে খাদ্য গুদামের ২০ থেকে ২৫ টন ওজনের ট্রাক চলাচল করছে। যার ফলে, বিসিকের মধ্যে চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে তারা ব্যবসায়ে ক্ষতির মূখে পড়ছেন।
বিসিকের ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা মো. সিহাব বলেন, ‘খাদ্য গুদামের ভারী গাড়ি চলাচল করা সড়কে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এখন আমাদের ছোট গাড়িগুলো ও প্রবেশ করতে পারছে না। যার কারণে, পণ্য ওঠা নামায় এখন তাদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। তিনি দ্রুত এই সমস্যার প্রতিকার চান।
মোহাম্মদ আলী নামের অন্য এক উদ্যোক্তা বলেন, ‘এমনিতেই ব্যবসার অবস্থা ভালো না। তারমধ্যে রাস্তার এমন বেহাল দশায় পণ্য আনা-নেওয়া করা যাচ্ছে না। আমরা লোকসানের মুখে পড়েছি। এছাড়াও বহিরাগত ভারী যানবাহনের কারণে দুর্ঘটনার আশঙ্কা বাড়ছে। অন্যদিকে, নিরাপত্তা দেয়াল না থাকায় বাইরের লোকজনও নির্বিঘ্নে প্রবেশ করছে। আরও কয়েকজন উদ্যোক্তারা জানান, খাদ্য গুদামের চাল ও গমবাহী বড় বড় জাহাজ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে এসে বিসিকের ভেতরেই আনলোড করা হয়। এতে রাস্তা নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি তাদের ব্যবসায় সরাসরি ক্ষতি হচ্ছে। এ বিষয়ে এর আগে বিসিক কতৃপক্ষকে বিষয়টি জানালেও তারা ফলশ্রুত কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেননি। যার কারণে হতাশায় ব্যবসায়ীরা।
দ্রুত বিসিক থেকে ভারী যানবাহন সড়িয়ে নিয়ে ছোট ছোট ব্যবাসায়ীদের নির্বিঘ্নে ব্যবসার করার সুযোগ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ভোলার সচেতন মহল। তারা মনে করেন, বিসিকে ব্যবসায়ীদের না অবস্থান ধরে না রাখতে পারলে ভোলার অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়বে। বিসিক শিল্পনগরীর উপ-ব্যবস্থাপক এসএম সোহাগ হোসেন বলেন, ‘এই রাস্তা ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের ৬-৭ টন মালামাল পরিবহনের জন্য তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু খাদ্য গুদামের ২৫ থেকে ৩০ টনের ভারী যানবাহন চলাচলের কারণে সড়কগুলো ভেঙে গেছে। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসকসহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রককে জানানো হয়েছে। তবে, এখন ভারী যানবাহনের বিপরীতে ছোট ছোট যানবাহনে করে খাদ্য গুদামের চাল, গম নেওয়া হয় হচ্ছে।’ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. এহসানুল হক জানান, ‘অন্যাত্রে স্থায়ী জেটি নির্মাণের জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে। এরইমধ্যে, জেটি নির্মাণের জন্য ২ থেকে ৩ স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। স্থানগুলোর বিষয়ে অনাপত্তিপত্র পেলেই দ্রুত জেটি নির্মাণের কাজ করা হবে।