ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চুয়াডাঙ্গায় সব ধরনের চালের দাম বাড়তি

চুয়াডাঙ্গায় সব ধরনের চালের দাম বাড়তি

নিত্যপণ্যের দামের সঙ্গে পাল্লা দিচ্ছে চালের বাজার। সারাদেশের মতো চুয়াডাঙ্গায় চালের দাম হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়েছে। সব ধরনের চাল কেজিতে ২ থেকে ৩ টাকা বাড়তি। ফলে চালের দামে নাজেহাল অবস্থা সাধারণ মানুষের।

ভারত থেকে আমদানি নেই কোনো প্রকার চাল। ঘাটতি নেই চালের বাজারে। তবুও যেন চালের দামে আগুন ছড়াচ্ছে। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে চুয়াডাঙ্গার পাইকারি ও খুচরা চালের বাজারে গিয়ে এ তথ্য জানা যায়।

জানা গেছে, গেল বোরো মৌসুমে চুয়াডাঙ্গায় জেলায় ধান উৎপাদন হয়েছে ১ লাখ ৬ হাজার ১২৭ টন। বাজারে চালের সংকট নেই। তবে মিল মালিকদের দাবি ধানের দাম বেশি। তাই চাল উৎপাদনে খরচ বেড়েছে। এ জন্য বাজারে পর্যাপ্ত চালের সরবরাহ থাকলেও দাম বেশি। গত কয়েকমাস ধরে নতুন সব প্রকার চাল আমদানি বন্ধ করেছে ভারত। ফলে দেশের উৎপাদিত ধানের চালের চাহিদা মিটাতে হচ্ছে। যে কারণে চালের দামে বাজারে আগুন ছড়াচ্ছে।

চুয়াডাঙ্গার চাল পট্টি ও খুচরা বাজার ঘুরে জানা গেছে, মধ্যবিত্তদের চাহিদার মোটা চাল কেজিতে পাইকারি পর্যায়ে ২ টাকা বেড়ে ৫৫ টাকা কেজি। এই চাল খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকায়। আর মিনিকেট চাল পাইকারি বাজারে ২ টাকা বাড়তি হয়ে কেজিতে ৭৩ টাকা আর খুচরায় ৭৫ টাকা। উচ্চবিত্তদের স্বাদের পছন্দের বাসমতি চাল কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে পাইকারিতে ৮৬ টাকা খুচরায় ৮৮ টাকা বিক্রি করছে ব্যবসায়ীরা। নিম্ন আয়ের মানুষের স্বর্ণা চাল পাইকারিতে ৫০ টাকা খুচরায় ৫২ টাকা। এখানে কেজিতে বাড়তি ২ টাকা গুনতে হচ্ছে নিম্নবিত্তদের। চালের বাজার অস্বাভাবিক হওয়ায় সব শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে অস্বস্তি প্রকাশ করা দেখা গেছে। তবে চালের দাম কমার সম্ভাবনা থাকছে চলতি মৌসুমের আউশ ধান উঠলে।

গণমাধ্যমের প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায়, দেশে বার্ষিক চালের চাহিদা ৩ কোটি ৮০ থেকে ৩ কোটি ৯০ লাখ টন। মোট চাহিদার প্রায় ৬০ শতাংশই পূরণ হয় বোরো মৌসুমের আবাদে। বাকিটা আসে আমন আর আউশ থেকে। স্বাভাবিকভাবেই প্রতি বছর মৌসুমের এই সময়টাতে চালের দাম সহনীয় থাকে। কিন্তু এ বছর বাজারের চিত্র ভিন্ন। চলতি মৌসুমে বোরোর বাম্পার ফলন হয়েছে। সরকারের কাছেও চালের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে রেকর্ড ২ কোটি ১৪ লাখ টন ধান উৎপাদন হয়েছে। সরকারি গুদামে খাদ্যশস্যের মজুত ২১ লাখ ৪৩ হাজার ১৮৭ টন। এরমধ্যে ১৮ লাখ ৯৯ হাজার ৬২৪ টন চাল ও ১ লাখ ১ হাজার ৫৩০ টন ধান মজুত রয়েছে। উৎপাদন ও মজুতের দিক থেকে চালের তেমন ঘাটতি নেই। তারপরও তিন মাস ধরে অর্থাৎ বোরোর ভরা মৌসুমেই চালের দাম ঊর্ধ্বমুখী।

কথা হলে চুয়াডাঙ্গা চালপট্রির পাইকারি চাল ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম জানান, চালের দাম হঠাৎ করে বাড়ছে। বাজারে চাল সরবরাহ রয়েছে। নতুন কোনো চাল বাজারে নেই। সামনে আউশ ধানের চাল আসলে বাজারে চালের দাম স্বাভাবিকে আসবে। আর তাছাড়া ভারত থেকে আমদানি বন্ধ চালের। আমদামি শুরু হলে চালের দাম আবার স্বাভাবিক পর্যায়ে আসবে।

চাল কিনতে আসা ক্রেতা হাসিবুর রহমান বলেন, ‘বাজারে চালের দাম এতো বেশি যে কোনো চাল কেনার কায়দা নেই। সবজির দামও আগুন। সেই সঙ্গে চালের বাজার চড়া। আয়ের ছাড়া ব্যয় বেশি হয়ে যাচ্ছে। গত মাসে যে চাল কিনলাম ৫০ টাকা কেজি। সেই চাল ৫২ টাকা কেজি। এই ভাবে যদি চালের দাম বাড়তে থাকে তাহলে আমরা কিভাবে বাঁচবো। চালের ঘাটতি নেই তবুও চালের দাম বেশি। এই রকম চলতে থাকলে তো মরে যাব।

এ বিষয়ে কথা হলে চুয়াডাঙ্গা কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের বাজার পরিদর্শক শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘চালের দাম আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হবে। এরইমধ্যে নতুন ধান কাটা শুরু হয়েছে। বাজারে নতুন ধানের চাল আসলে আরও কমে যাবে দাম। ভারত থেকে আমদানি বন্ধ চালের। যে কারণে চালের বাজার চড়া। তবে চিন্তার কিছু নেই চালের বাজার স্বাভাবিক হয়ে ফিরবে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত