ঢাকা শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা তাড়াইলের মানুষ

নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে দিশাহারা তাড়াইলের মানুষ

হাওরাঞ্চল বেষ্টিত কিশোরগঞ্জের তাড়াইল উপজেলার মানুষকে বন্যা-খড়াসহ নানা দুর্যোগ মোকাবিলা করে বাঁচতে হয়। এ উপজেলার অধিকাংশ মানুষ দরিদ্রসীমার নিচে বসবাস করে। এরইমধ্যে ক্রমান্বয়ে লাগামহীনভাবে বাড়ছে বিভিন্ন পণ্য দ্রব্যের দাম।

সবজি, চাল-ডাল, ডিজেল-বিদ্যুৎ, মাছ-মাংস, বস্ত্র, ওষুধ, প্রসা-ধনীসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির দাম এখন আকাশচুম্বী।

এমতাবস্থায় খেটে খাওয়া ও মধ্যবিত্ত পরিবারে আয়ের চেয়ে ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় তাদের দৈনন্দিন জীবন দুর্বিষহ হয়ে ওঠেছে। তাড়াইল উপজেলা সদর বাজার ঘুরে জানা যায়, এক সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিটি সবজির দামই বেড়েছে। বেগুনের কেজি ৮০-১০০ টাকা, মুলার কেজি ৫০-৬০ টাকা, ঝিঙা, ধুন্দল, শসার কেজি ৮০ টাকা, ঢ্যাঁড়স, পটল, কাকরোলের কেজি ৮০ টাকা, পেঁপের কেজি ৫০ টাকা। প্রতি পিস জালি কুমড়া ৮০-১০০ টাকা, প্রতি পিচ লাউ ৮০-১০০ টাকা। বাজারে বরবটি প্রতিকেজি ৭০-৮০ টাকা, কচুর লতির কেজি ৬০ টাকা, কচুমুখীর কেজি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বেড়েছে কাঁচা মরিচেও-কেজিপ্রতি ১৮০-২০০ টাকা। তাড়াইল সদর বাজারে বাজার করতে আসা আল আমিন, সুজন মিয়া ও আবু সাঈদ মিয়া বলেন, বেগুনের দাম শুনে রীতিমতো আকাশ থেকে পড়লাম। এক সপ্তাহে বেগুনের দাম কেজিতে ৩০ টাকা কী করে বাড়ে। বেগুন না কিনে পেঁপে কিনে বাড়ি যাচ্ছি।

আরেক ক্রেতা রফিকুল ইসলাম বলেন, সাধারণত এক কেজির নিচে কোনো সবজি কেনা যায় না। আজকে তিন রকমের সবজি আধা কেজি করে কিনে নিয়ে যাচ্ছি। অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আফতাব হোসেন বলেন, ইদানিং সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ক্রয় ক্ষমতার বাহিরে। এই অস্থিতিশীল অবস্থা নিরসনে সরকারের কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি। বিক্রেতারা বলছেন, পাইকারি বাজারে সবজির দাম বেড়ে যাওয়ায় বাধ্য হয়ে বেশি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের। এতে করে অনেক ক্রেতাই সবজি না কিনে ফিরে যাচ্ছেন, অনেকে কিনছেন আধা কেজি করে। সব মিলিয়ে তাদেরও মুনাফা কম হচ্ছে।

উপজেলার সচেতন মহলের সঙ্গে কথা হলে তারা বলেন, একটি পরিবারের জীবন-জীবিকার গতি নির্ভর করে তাদের আয়, চাহিদা এবং দ্রব্যমূল্যের ওপর। প্রতিটি পণ্যের দাম যখন সহনীয় পর্যায়ে থাকে তখন মানুষের জীবন কাটে স্বস্তিতে। আর যদি দাম ঊর্ধ্বগতি থাকে তখন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারে বেড়ে যায় অশান্তি। বিশেষ করে খেতমজুর কিংবা দিন আনে দিন খাওয়া মানুষগুলো নাভিশ্বাস হয়ে ওঠেছে। তাদের ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা বিরাজ করছে। বিদ্যমান পরিস্থিতিতে মধ্যবিত্তরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। আর গরীবরা হচ্ছেন আরও গরীব। একই সঙ্গে চুরি-ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কাণ্ডও বেড়েছে।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত