ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ | বেটা ভার্সন

চান্দিনায় কালো বেগুনের চাষ বাড়ছে

চান্দিনায় কালো বেগুনের চাষ বাড়ছে

সবজি চাষে সমৃদ্ধ কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলা যেন এক সবুজ বিপ্লবের কেন্দ্রভূমি। এই মৌসুমী জলবায়ু প্রভাবিত পুরাতন মেঘনা মোহনা পললভূমিতে উর্বর মাটির কল্যাণে প্রতি বছরই কৃষকরা ফলনের আশাতীত সাফল্য পান। এবার সেই সাফল্যের মুকুটে নতুন পালক যোগ করেছে কালো বেগুন।

চান্দিনা উপজেলার মেহার গ্রামের প্রান্তিক চাষি জামাল উদ্দিনের ৩০ শতাংশ জমির খেতে যেন সোনালি হাসি লেগে আছে। জমিজুড়ে কালো বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধু বেগুনই নয়, এর পাশাপাশি তিনি সাথী ফসল হিসেবে শীতকালীন অন্য ফসল যেমন মুলা, ফুলকপি ও মরিচেরও চাষ করেছেন। কৃষক জামাল উদ্দিন তার ৩০ শতাংশ জমিতে সবজিচাষ করতে গিয়ে প্রাথমিকভাবে প্রায় ২০ হাজার টাকা খরচ করেছেন। তবে এখন বাজারে সবজির যে চড়া দাম রয়েছে, তাতে তার এই খরচ উঠে এসে দ্বিগুণ লাভের হাতছানি দিচ্ছে। বর্তমানে বাজারে প্রতি কেজি কালো বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকা দরে, যা গত মৌসুমের তুলনায় অনেক বেশি। অন্যদিকে, তার উৎপাদিত ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে আরও বেশি দামে, প্রতি কেজি ১০০ টাকা। জামাল উদ্দিন জানান, যথাযথ পরিচর্যা আর কৃষি বিভাগের সঠিক পরামর্শ মেনে চলার ফলেই তিনি এই সাফল্য পেয়েছেন। তার এই অল্প জমিতে বেগুন ও ফুলকপির পাশাপাশি মুলা ও মরিচের চাষ তাকে নিশ্চিত করেছে যে যেকোনো একটি ফসলের ক্ষতি হলেও অন্য ফসল তাকে আর্থিকভাবে সুরক্ষা দেবে। বিশেষ করে কালো বেগুনের গুণগতমান ও আকারের কারণে স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা তুঙ্গে।

চান্দিনার কৃষকদের উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হয়। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাছাকাছি হওয়ায় এখানকার সবজি দ্রুত এবং সতেজ অবস্থায় দেশের অন্যান্য প্রান্তে পৌঁছানো সম্ভব হয়। জামাল উদ্দিনের মতো অনেক চাষিই এখন কৃষিকাজকে লাভজনক পেশা হিসেবে দেখছেন। চান্দিনা উপজেলা কৃষি বিভাগের ওয়েবসাইট অনুযায়ী চান্দিনাতে এ বছর ১৪৯৪ হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। আবহাওয়া ভালো থাকায় সবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হবে বলে আশা করা আশা করছেন কৃষি কর্মকর্তারা। জামাল উদ্দিনের এই সফলতা শুধু তার একার নয়, এটি চান্দিনার সবজি চাষের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের প্রতীক। তার ৩০ শতাংশ জমির ফলন প্রমাণ করে যে ছোট পরিসরেও সঠিক পরিকল্পনা ও যত্নের মাধ্যমে বড় স্বপ্ন পূরণ করা সম্ভব। তার চোখে এখন ভবিষ্যতের স্বপ্ন, আরও বেশি জমিতে সবজি চাষ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়ার।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত