
কক্সবাজারের টেকনাফ ও উখিয়া অঞ্চলের সাম্প্রতিক নিরাপত্তাহীনতা, সীমান্ত সংকট, পর্যটন স্থবিরতা এবং অর্থনৈতিক বিপর্যয় নিরসনে সাত দফা দাবি জানিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে এবি পার্টি। গতকাল দলের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় শরণার্থী বিষয়ক সম্পাদক ও কক্সবাজার-৪ (উখিয়া-টেকনাফ) আসনের সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাংবাদিক মো. শামসুল হক শারেক জেলা প্রশাসক আব্দুল মান্নানের মাধ্যমে এই স্মারকলিপি প্রদান করেন। স্মারকলিপিতে বলা হয়, সীমান্তবর্তী এলাকায় আরাকান আর্মির ক্রমবর্ধমান গোলাগুলি ও তৎপরতায় টেকনাফের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা আজ আতঙ্কের মধ্যে চলছে। রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশ, গুম-খুন-অপহরণ এবং মাদক চক্রের দৌরাত্ম্যে সামাজিক নিরাপত্তা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর পাশাপাশি নাফনদী ও টেকনাফ স্থলবন্দর বন্ধ থাকায় আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রম থমকে গেছে, ফলে পুরো অঞ্চলের অর্থনীতি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, টেকনাফ উপকূল থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকায় পর্যটন শিল্প মারাত্মক ক্ষতির মুখে পড়েছে। এতে স্থানীয় ব্যবসায়ী, নৌযান মালিক, শ্রমিক এবং কর্মজীবী মানুষের জীবিকা হুমকির মুখে পড়েছে। সংকট উত্তরণে স্মারকলিপিতে যে সাতটি দাবি উত্থাপন করা হয় সেগুলো হলো- টেকনাফের সুবিধাজনক স্থান থেকে সেন্টমার্টিনে পর্যটক যাতায়াত দ্রুত পুনরায় চালু করা। টেকনাফ স্থলবন্দর সম্পূর্ণরূপে খুলে দিয়ে আমদানি-রপ্তানি বাণিজ্য সচল করা।
নাফ নদী ও উখিয়া-নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তে আরাকান আর্মির উৎপাত বন্ধে কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ জোরদার করা। রোহিঙ্গাদের ধাপে ধাপে প্রত্যাবাসন পুনরায় শুরু করতে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহযোগিতা বাড়ানো। গুম, খুন, অপহরণ ও মাদক বাণিজ্য দমনে বিশেষ টাস্কফোর্স গঠন এবং কঠোর আইন প্রয়োগ নিশ্চিত করা। টেকনাফের ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে মৎস্য, কৃষি, লবণ ও পর্যটন খাতে বিশেষ প্রণোদনা ঘোষণা করা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পে অন্তত ৬০ শতাংশ কর্মসংস্থানে স্থানীয় শিক্ষিত যুবকদের অগ্রাধিকার দেওয়া। এবি পার্টি নেতা শামসুল হক শারেক বলেন, দ্রুত কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে টেকনাফ-উখিয়া অঞ্চল আবারও নিরাপদ, স্থিতিশীল ও অর্থনৈতিকভাবে সচল হয়ে উঠবে।