
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার ভবনগর গ্রামে বিরল প্রজাতির একটি হলুদ সাঁপ উদ্ধারের ঘটনায় এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত রোববার রাতে গ্রামের এক বাড়ির কাছাকাছি সাঁপটি হঠাৎ চোঁখে পড়ে স্থানীয়দের। ভয়ে তারা সাঁপটিকে পিটিয়ে মেরে ফেলে। পরে মৃত সাঁপটি ফ্রিজে সংরক্ষণ করে জাদুঘরে প্রদর্শনের প্রস্তুতি নেওয়া হয় বলে জানান স্থানীয় প্রকৃতিপ্রেমী নাজমুল হক। নাজমুল হক জানান, উদ্ধারকৃত সাঁপটি দেখতে পুরোপুরি উজ্জ্বল হলুদ রঙের। পরীক্ষা-নিরীক্ষায় ধারণা করা হচ্ছে, এটি একটি অ্যালবিনো মনোকলড কোবরা বা অ্যালবিনো গোখরা। সাধারণ গোখরার গায়ের রঙ কালো বা বাদামি হলেও জেনেটিক মিউটেশনজনিত অ্যালবিনিজমের কারণে এই সাঁপের শরীরে মেলানিন তৈরি হয়নি। তাই সাঁপটির রঙ স্বাভাবিকের তুলনায় একেবারে সাদা বা হলুদ দেখায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যালবিনো গোখরা অত্যন্ত বিরল এবং একই সঙ্গে অত্যন্ত বিষাক্ত। এই গোখরার কামড়ে কয়েক মিনিটের মধ্যেই মানুষ মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়তে পারে। সাপটি মৃত মনে হলেও কাছাকাছি যাওয়া ঝুঁকিপূর্ণ বলে সতর্ক করেছেন তারা। কারণ, সাপের স্নায়ুতন্ত্র মৃত্যুর পরও কিছু সময় সক্রিয় থাকতে পারে। বন্যপ্রাণী সংরক্ষণকর্মীরা বলছেন, এ ধরনের সাঁপ দেখলে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে দ্রুত বন বিভাগ বা অভিজ্ঞ সাঁপ উদ্ধারকারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা উচিত। অ্যালবিনো সাঁপ প্রকৃতিতে টিকে থাকতে খুবই অসহায়, তাই জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করা গেলে সংরক্ষণে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশে মাঝে মধ্যে অ্যালবিনো সাঁপের দেখা মিললেও তা খুবই বিরল। মহেশপুেের ভবনগরে উদ্ধার হওয়া সাঁপটি তাই স্থানীয়দের মধ্যে কৌতূহলের জন্ম দিয়েছে। নাজমুল হক জানান, সাঁপটি জাদুঘরে সংরক্ষণ করা গেলে ভবিষ্যতে গবেষণা ও প্রদর্শনীর কাজে তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাঁপটি দেখতে আশপাশ এলাকার কৌতূহলী মানুষ ভিড় জমিয়েছে।