ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্বাচন পর্যবেক্ষক নীতিমালা ২০২৫ অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আজ মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করতে পারে সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানটি। ফলে আগামী সংসদ ভোটের প্রস্তুতিতে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ইসি। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, নতুন পর্যবেক্ষক নীতিমালা অনুযায়ী আগের ৯৬টি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন বাতিল করা হবে। এর পর নতুন করে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা সংসদ নির্বাচনের জন্য পর্যবেক্ষক নিবন্ধন দেওয়া হবে। এবার নতুন পর্যক্ষেণ নীতিমালায় তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। আল্প কয়েক জায়গায় পরিবর্তন আনা হয়েছে। ২০২৩ সালের নীতিমালা বাদ দিয়ে ‘একই আদলে’ নতুন পর্যবেক্ষক নীতিমালা করা হয়েছে। নতুন নীতিমালায় পর্যবেক্ষক হতে যেসব যোগ্যতা লাগবে সেগুলো হচ্ছে, ১. বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ২. পর্যবেক্ষক হতে বয়স ২৫ বা তদূর্ধ্ব হতে হবে। ৩. সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে দেশীয় পর্যবেক্ষকদের জন্য এইচএসসি বা সমমানের শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকতে হবে। ৪. কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে পারবে না। ৫. কোনো নিবন্ধিত বা অনুমোদিত পর্যবেক্ষক সংস্থা কর্তৃক মনোনীত হতে হবে। ৬. নির্বাচন পর্যবেক্ষক অঙ্গীকারনামা ফরম স্বাক্ষর করতে হবে ও আইন মেনে চলতে হবে। ৭. কোনো রাজনৈতিক দলের সঙ্গে স্বার্থসংশ্লিষ্ঠতা থাকতে পারবে না। ৮. কোনো রাজনৈতিক দল বা এর কোনো অঙ্গসংগঠনের সঙ্গে যুক্ত কেহ পর্যবেক্ষক হতে পারবে না। ফেয়ার ইলেকশন মনিটরিং অ্যালায়েন্স (ফেমা) প্রেসিডেন্ট ও সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (সিজিএস) চেয়ারম্যান মুনিরা খান বলেন, পর্যবেক্ষকদের শিক্ষাগত যোগ্যতা স্নাতক করা গেলে আরও ভালো হতো। প্রশিক্ষণটা বেশি জরুরি পর্যবেক্ষকদের। তারা কোথাও কথা বলতে পারবে না, বক্তব্য-মন্তব্য দেওয়ার সুযোগ নেই। আন্তর্জাতিক মান মেনে স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা শুধু পর্যবেক্ষণ করবে আর রিপোর্ট করবে- এ বিষয়টাই মাথায় রাখতে হবে। এদিকে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটকেন্দ্র সংস্কার করতে চার সচিবকে নির্দেশনা দিয়েছে ইসি। গতকাল সোমবার ইসির উপসচিব দেওয়ান মো. সারওয়ার জাহান স্বাক্ষরিত একটি চিঠিতে এ নির্দেশনা পাঠানো হয়।
মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিবদের এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ও শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীকে নির্দেশনাটি পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়েছে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে বিগত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্যবহৃত ভোটকেন্দ্র এবং সম্ভাব্য ভোটকেন্দ্রের মধ্যে কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাউন্ডারি (সীমানা) প্রাচীর নেই, এবং কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে দরজা-জানালা জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে।
যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বাউন্ডারি বা সীমানা প্রাচীর নেই, কিংবা ছোটখাটো মেরামত/সংস্কারের প্রয়োজন আছে, সেসব প্রতিষ্ঠান সংস্কারের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগকে নিজস্ব অর্থায়নে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করে আগেও চিঠি পাঠানো হয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃতব্য স্থাপনাগুলোর সংস্কার কার্যক্রমের অগ্রগতি সংক্রান্ত তথ্যাদি বিশেষভাবে প্রয়োজন। এ তথ্য ১৭ জুলাইয়ের মধ্যে পাঠাতে বলা হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারির মধ্যে সরকারের তরফ থেকে নির্বাচনি প্রস্তুতির আলোচনা শুরু হওয়ায়, নির্বাচন কমিশন (ইসি) তার কার্যক্রম এগিয়ে নিতে এ ধরনের তাগাদা দিয়েছে। গত সংসদ নির্বাচনে ৪৪ হাজারের বেশি ভোটকেন্দ্র ছিল। এবার সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। আর ভোটকেন্দ্র হিসেবে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোই সাধারণত ব্যবহার করে ইসি।