ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেছেন, বাংলাদেশ পৃথিবীর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল।
পৃথিবীতে আর কোথাও হিন্দু, মুসলিম, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান, চাকমা, মারমা ও সাওতাল একসঙ্গে এমন সুন্দরভাবে মিলেমিশে বসবাস করে না। পৃথিবীতে এটা একটা অনন্য রোল মডেল। যে কোনো মূল্যে এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি টিকিয়ে রাখতে হবে। সব ধর্মের মানুষই এই দেশের নাগরিক। তাদের অধিকারও সমান। তাই বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার বাংলাদেশকে পৃথিবীর সামনে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রোল মডেল হিসেবে উপস্থাপন করছে।
গতকাল শনিবার বিকালে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিককেন্দ্র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ধর্ম উপদেষ্টা এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, দেশের সব মুসলিমদের মসজিদমুখী ও নামাজি হিসেবে গড়ে তুলতে পারলে দেশের অপরাধ প্রবণতা কমে যাবে। নামাজ মানুষকে অপরাধ থেকে দূরে রাখে। হিংসুক বা ছোট মনের মানুষ কখনো বড় কিছু করতে পারে না। নামাজ মানুষকে হিংসা থেকেও দূরে রাখে। ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, দেশের পিছিয়েপড়া চাকমা, মারমা ও সাওতালসহ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষকে এগিয়ে নিতে আর্থিকভাবে সরকার সহযোগিতা করছে।
সব ধর্মের মানুষের অবদান নিয়ে ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন আরো বলেছেন, হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ-খ্রিস্টান প্রতিটি মানুষ এ দেশের নাগরিক। বিভিন্ন উপজাতিরাও এ দেশের নাগরিক। ৫৪ বছরে বাংলাদেশের যত অর্জন এতে সব ধর্মের মানুষের অবদান রয়েছে।
পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত-মিয়ানমার ওখানে সংখ্যালঘুদের অবস্থা দেখুন। তাদের সাথে আমাদের তুলনা করুন। আমাদের দেশেও যে মাঝেমধ্যে কোনো দুর্ঘটনা ঘটে না এমনটা নয়। আমরা কঠোর নির্দেশনা দিয়েছি যারা কোনো উপাসনালয়ে যে কোনো ধর্মাবলম্বী মানুষের ওপর হামলা করে তারা সন্ত্রাসী-কালপ্রিট।
তাদের আইনের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এসময় উপস্থিত ছিলেন নাটোরের জেলা প্রশাসক আসমা শাহীন, নবাগত পুলিশ সুপার আমজাদ হোসেন, বাগাতিপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হা-মীম তাবাসসুম প্রভা, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তা, ছাত্র প্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের প্রতিনিধিসহ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, ইসলামী গবেষণা ও ধর্মীয় কার্যক্রমের প্রসার ঘটাতে ২০২৩-২৫ সালে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয় ও ইসলামিক ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে এই তিনতলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিককেন্দ্র নির্মাণ করা হয়। দেশের ‘প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিককেন্দ্র স্থাপন (দ্বিতীয় পর্যায়)’ প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়েছে। এসব মডেল মসজিদে একসঙ্গে ৯৫০ মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন,। যার মধ্যে ১২০ জন নারীর জন্য পৃথক নামাজের ব্যবস্থা রয়েছে।