চীনসহ উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস (এইচএমপিভি) এর প্রাদুর্ভাব এবং তীব্রতা উদ্বেগজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ইনফ্লুয়েঞ্জা ধাঁচের এই ভাইরাসে এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন অনেকে। পাঁচ বছর হলো করোনাকাল পার হয়েছে। করোনা মহামারিতে বিশ্বে মোট ১ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ৪০ কোটিরও বেশি। অনেকেরই শঙ্কা, ২০২৫ সালে ফের করোনার মতো নতুন কোনো মহামারির উদ্ভব হতে পারে। ভাইরাসটি করোনার মতোই ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ঝুঁকির বাইরে নয়। এইচএমপিভি থেকে রক্ষায় মাস্ক ব্যবহারের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। দেশে এই ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে দেশের সব স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান এবং বন্দরগুলোর স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের সাতটি সচেতনতামূলক নির্দেশনা দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
চিঠিতে বলা হয়, ১৪ বছরের কম বয়সী শিশু এবং ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ বেশি দেখা যায়। সেই সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন হাঁপানি বা ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ, অন্তঃসত্ত্বা নারী এবং দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য উচ্চ ঝুঁকি সৃষ্টি হতে পারে। পৃথিবীর অন্য অনেক দেশের মতো বাংলাদেশেও এই রোগের সংক্রমণ দেখা যায়। সম্প্রতি চীন ও অন্যান্য দেশে এর প্রার্দুভাব দেখা দেয়ায় বাংলাদেশে এর সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক। যার জন্য সব স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র এবং পয়েন্টস অব এন্ট্রিগুলোতে স্বাস্থ্যবিধি জোরদার করা প্রয়োজন। চিঠিতে জনগণের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য অনুরোধ করা হয়।
নির্দেশনাগুলো হচ্ছে : শীতকালীন শ্বাসতন্ত্রের রোগগুলো হতে নিজেকে রক্ষার জন্য মাস্ক ব্যবহার করতে বলা হয়েছে। হাঁচি/কাশির সময় বাহু/টিস্যু দিয়ে নাক মুখ ঢেকে রাখা। ব্যবহৃত টিস্যুটি অবিলম্বে ঢাকনাযুক্ত ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলুন এবং হ্যান্ড স্যানিটাইজার অথবা সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলতে হবে। আক্রান্ত হয়েছেন এমন ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলুন এবং কমপক্ষে ৩ ফুট দূরত্ব বজায় রাখা। ঘনঘন সাবান ও পানি কিংবা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন (অন্তত ২০ সেকেন্ড)* অপরিষ্কার হাতে চোখ, নাক, মুখ ধরা যাবে না। জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট আক্রান্ত হলে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত বাড়িতে থাকা। প্রয়োজনে কাছের হাসপাতালে যোগাযোগ করতে বলা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, সিডিসি পরিস্থিতির ওপর সর্তক দৃষ্টি রাখছে। হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের রোগের ন্যায় ফ্লুর মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। যা সাধারণত ২-৫ দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায়। তাই আতঙ্কিত হওয়ার দরকার নাই। সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।