ঢাকা ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১ | বেটা ভার্সন

তারেক রহমানকে হেয় করতেই রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা

কায়সার কামাল
তারেক রহমানকে হেয় করতেই রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা

বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে রাজনৈতিকভাবে হয়রানি ও হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে মামলা দায়ের করা হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন দলের আইনবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল। গতকাল মঙ্গলবার সুপ্রিমকোর্ট প্রাঙ্গণে মামলার লিখিত রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর এমন মন্তব্য করেন তিনি। ওই মামলায় তারেক রহমানসহ চারজনকে এরইমধ্যে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ন্যায়বিচার আমরা পেয়েছি। এ মামলাটি দায়ের করার সময় উপকরণ ছিল না। আইনগত কোনো ভিত্তি ছিল না। মামলাটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় দায়ের করা হয়নি। রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা দায়ের করার আগে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল আরো বলেন, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনে যে প্রক্রিয়ায় মামলা দায়ের করার কথা ছিল সে প্রক্রিয়ায় মামলা দায়ের হয়নি। তড়িঘড়ি করে এবং তারেক রহমান সাহেবকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য হয়রানি করার জন্য এবং একুশে টেলিভিশনটা দখলে নেয়ার জন্য এ মামলাটি দায়ের করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা তখনই বলেছিলাম দেশে যখন আইনের শাসন কায়েম হবে তখন এ মামলা টিকবে না। আরো বলেছিলাম, আইন অনুযায়ী যদি এ মামলার বিচার হয় তাহলে তারেক রহমানসহ অপরাপর আসামিরা খালাস পাবেন। মামলাটি যখন নিম্ন আদালতে দায়ের করা হয় তখন যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন করা হয়নি। এই মামলাটি বাতিল চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হয়েছিল সেই আবেদনের শুনানি করে রুল জারি করেছিলেন আদালত। এরপর রুলের শুনানি শেষে মামলাটি বাতিল করে দিয়েছেন। আজকে এই বাতিলের রায়ের কবি আমরা হাতে পেলাম। একই দিন বিচারপতি এ কেএম আসাদুজ্জামান ও বিচারপতি সৈয়দ এনায়েত হোসেনের হাইকোর্ট বেঞ্চ ১১ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করেছেন।

এর আগে গত ৩১ অক্টোবর তারেক রহমান, আব্দুস সালামসহ চারজনের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাষ্ট্রদ্রোহ মামলার কার্যক্রম বাতিল করে তাদের খালাস দেন হাইকোর্ট। অন্য দুজন হলেন- একুশে টেলিভিশনের সাবেক প্রধান প্রতিবেদক মাহাথীর ফারুকী খান ও সিনিয়র প্রতিবেদক কনক সারওয়ার। আদালতে তারেক রহমানের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ব্যারিস্টার কায়সার কামাল, ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল, অ্যাডভোকেট গাজী কামরুল ইসলাম সজল, অ্যাডভোকেট জাকির হোসেন, অ্যাডভেকেট মাকসুদ উল্লাহ, অ্যাডভোকেট সামসুল ইসলাম মুকুল, অ্যাডভোকেট আজমল হোসেন খোকন প্রমুখ।

২০১৭ সালে এই মামলায় অভিযোগ গঠন করেন আদালত। ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি লন্ডন থেকে তারেক রহমানের দেয়া বক্তব্য একুশে টিভি সরাসরি সম্প্রচার করলে পরদিন তারেক রহমান ও আবদুস সালামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি চায় তেজগাঁও থানা পুলিশ। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি পাওয়ার পর তেজগাঁও থানার এসআই বোরহান উদ্দিন ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় এ মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে গত বছর ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশের গোয়েন্দা পরিদর্শক এমদাদুল হক। সেখানে তারেক রহমান ও আব্দুস সালামের সঙ্গে মাহাথীর ফারুকী খান ও কনক সারওয়ারকেও আসামি করা হয়। অভিযোগে বলা হয়, লন্ডন থেকে তারেক রহমানের দেয়া বক্তব্য সরাসরি সম্প্রচার করে আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য প্রচার করে দেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি দেখানো, প্রতিষ্ঠিত সরকারের প্রতি ঘৃণা তৈরি করতে চেয়েছিলেন।

আরও পড়ুন -
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত