তিন জেলায় বজ্রপাতে একসঙ্গে তিন স্কুলছাত্রীসহ সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার পৃথক সময়ে বজ্রপাত হয়।
কিশোরগঞ্জ : পাকুন্দিয়া উপজেলার চরটেকী এলাকায় বজ্রপাতে তিন স্কুলছাত্রী নিহত হয়েছে। তারা হলো, উপজেলার চরটেকী গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে ইরিনা (১৫) ও একই গ্রামের বাদল মিয়ার মেয়ে প্রিয়া (১৫) এবং বোরহান উদ্দিনের মেয়ে বর্ষা (১৪)। তারা চরটেকী গার্লস স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিল। স্থানীয়রা জানান, গতকাল বেলা ১২টায় ঝড়সহ বৃষ্টি শুরু হয়। স্কুল থেকে বাড়ি ফেরার পথে ওই এলাকায় পৌঁছালে তারা ঝড়বৃষ্টির কবলে পড়ে। এসময় বজ্রপাতে তারা আহত হয়। দ্রুত উদ্ধার করে পাকুন্দিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক ইরিনা ও প্রিয়াকে মৃত ঘোষণা করেন। গুরুতর আহত অবস্থায় বর্ষাকে কিশোরগঞ্জের শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন। পাকুন্দিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিল্লাল হোসেন ও পাকুন্দিয়া থানার ওসি সাখাওয়াৎ হোসেন বজ্রপাতে তিন স্কুল শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, মিঠামইন হাওরে গরু আনতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। গতকাল বেলা একটার দিকে উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়নের চমকপুর হাওরে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোহাম্মদ কটু মিয়া (৪০) ঘাগড়া ইউনিয়নের চমকপুর গ্রামের আব্দুল মুত্তালিবের ছেলে।
মিঠামইন থানার ওসি শফিউল আলম বলেন, কটু মিয়া বাড়ি থেকে বের হয়ে গরু আনতে হাওরে গিয়েছিলেন। পরে বৃষ্টির সঙ্গে বজ্রপাত শুরু হলে আক্রান্ত হয়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন তিনি। নিহতের লাশ উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
ঝিনাইদহ : সদর উপজেলার মহারাজপুর ও গান্না ইউনিয়নে আলাদা বজ্রপাতের ঘটনায় দুই কৃষক নিহত হয়েছেন। নিহতরা হলেন- মহারাজপুর ইউনিয়নের ভবানীপুর গ্রামের খোরশেদ মোল্লার ছেলে ওলিয়ার রহমান ও গান্না ইউনিয়নের চন্ডিপুর গ্রামের শাহাজ্জেল হোসেনের ছেলে মিরাজুল হোসেন। স্বজনরা জানান, মাঠে ধান গোছানোর কাজ করছিলেন ওলিয়ার রহমান। এসময় হঠাৎ বজ্রপাত হয়। দীর্ঘসময় বাড়ি না ফিরলে খোঁজ শুরু হয়। পরে মাঠে গিয়ে তাকে পড়ে থাকতে দেখা যায়। সেখান থেকে উদ্ধার করে সদর হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। অন্যদিকে মরিচের জমিতে নিড়ানির কাজ করছিলেন মিরাজুলসহ কয়েকজন কৃষক। বজ্রপাতে তিনি জমিতে থাকা ড্রেনের মধ্যে পড়ে যান। পরে ঘটনাস্থলে থাকা কৃষকরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাকেও মৃত ঘোষণা করেন।
সুনামগঞ্জ : হাওরে ধান কাটতে গিয়ে বজ্রপাতে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় জেলার পাগনার হাওরে এই ঘটনা ঘটে। নিহত জাকির হোসেন (৩৫) জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার পূর্ব লক্ষ্মীপুর গ্রামের মালক উস্তারের ছেলে। জামালগঞ্জ থানার ওসি সাইফুল ইসলাম জানান, সকাল থেকে নিজ জমিতে ধান কাটছিলেন কৃষক জাকির হোসেনসহ কয়েকজন যুবক। দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি শুরু হলে বাড়িতে ফিরছিলেন জাকির। এসময় আকস্মিক বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। স্থানীয়রা উদ্ধার করে লাশ বাড়িতে নিয়ে আসেন।